Inqilab Logo

রোববার, ০৯ জুন ২০২৪, ২৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ০২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

লন্ডনের কারাগারে মুসলিমদের রোজা পালনে দুঃসহ-যাতনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ মে, ২০২০, ১২:০৩ এএম

১৮ বছর বয়সী সোলাইমানকে লন্ডনের মিডল্যান্ডে গ্লেনপার্ভা কারাগারে পাঠানো হয় ২০০৯ সালে। তার ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে রোজা পালনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতাটি ছিল সময় জানা। কখন রোজা শুরু হতো আর কখন রোজা শেষ হতো, তা বোঝাই যেত না। আল-জাজিরাকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সোলাইমান বলেন, ‘সময় জানার জন্য কারাকক্ষে কোনো ঘড়ি ছিল না। সাহরিতে মুসলিম কারাবন্দিদের ঠন্ডো দধি, ফল ও খেজুর দেয়া হতো। বিকাল ৫টায় নির্ধারিত সময়ে কারাবন্দিরা গরম খাবার পেত। তিনি বলেন, যদিও কারা কর্তৃপক্ষ সবসময় বন্দিদের ফ্ল্যাস্কে ভরে খাবার দেয়ার কথা, যাতে দীর্ঘ সময় থাকার পরও খাবার গরম থাকে; কিন্তু সাহরিতে মুসলিম বন্দিদের তারা সবসময় প্লেটে করে ঠান্ডা স্যাঁতসেঁতে তরকারি ও ভাত দিত। যদি কেউ বাইরে থেকে কোনো বন্দির জন্য টাকা পাঠাত, তখনই কেবল সে ভালো খাবার কিনে খেতে পারত। সোলাইমান আরও বলেন, ইফতারের সময় টিভির অনুষ্ঠানস‚চি দেখে অনুমান করে আমরা ইফতার শুরু করতাম। আদম নামের আরেক ব্রিটিশ মুসলিমও ২০০৯ সালে কারাগারে ছিলেন। তিনি বলেন, সত্যি বলতে- আমার জন্য প্রথম রোজাটি ছিল সত্যিই কষ্টকর। আমি যে কারাগারে ছিলাম, সেটির ৯০ শতাংশই সাদা আলোবিশিষ্ট। তাই ঘড়ি না থাকার কারণে ও আলোর কোনো পরিবর্তন না থাকার কারণে সময় বোঝা যেত না। ‘মুসলিম বন্দিরা তাদের নিজ নিজ কারাকক্ষে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন। আর জুমার নামাজের জন্য কারাগারের ইবাদতের জায়গা খুলে দেয়া হতো। তবে সৌভাগ্যবশত আমি ছিলাম লেইসিস্টারে যেটি বহু সংস্কৃতিবিশিষ্ট একটি শহর। ফলে সেখানকার কারা কর্তৃপক্ষ ইসলাম সম্পর্কে মোটামুটি ভালোই বুঝতেন। আদম আরও বলেন, কিন্তু যেসব কারাগারে মুসলমান বন্দির সংখ্যা কম, সেখানে ধর্মপালনে বেশ বেগ পেতে হয়। মুসলমানদের সংখ্যা বেশি হলেই সহজে জামাতে নামাজ আদায় করার সুযোগ পাওয়া যায়। যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন কারাগারে মুসলিম বন্দিদের ধর্মপালনে, বিশেষত রমজানে, প্রতিবন্ধকতার বিষয়টি সম্প্রতি মাসলাহা নামক একটি মুসলিমবাদী সংগঠনের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারা কর্তৃপক্ষ মুসলিম পরিচয়কে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে না; বরং কারাবন্দিদের মুসলিম পরিচয়টাই অনেক ক্ষেত্রে তাদের জন্য বিভিন্ন নেতিবাচক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। মাসলাহার পরিচালক রাহিল মুহাম্মদ আল-জাজিরাকে বলেন, কারাগারে মুসলমানদের দাড়ি রাখা, নামাজ আদায় করা এবং আরবি পড়ার মতো সাধারণ বিষয়গুলোকেও মৌলবাদ মনে করা হয়। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গোটা ইংল্যান্ডে মাত্র ৫ শতাংশ মুসলিম বাস করে। মুসলমানদের সংখ্যা নিতান্ত কম হলেও সেখানকার কারাগারগুলোতে মোট বন্দির ১৫ শতাংশই মুসলমান। এটি নিশ্চিতভাবে জাতিবৈষম্যের প্রমাণ বহন করে। আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: লন্ডন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ