Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারত তাকিয়ে আছে মিলিটারি টু মিলিটারি সহযোগিতার দিকে

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ১০ মার্চ, ২০২০, ১২:০২ এএম

হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা ভারতের একজন ক্যারিয়ার ডিপ্লোম্যাট। বর্তমানে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। এর আগে ২০১৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের রাষ্ট্রদূত ছিলেন। তার আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৯ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৩ বছর বাংলাদেশে ভারতের হাই কমিশনার ছিলেন। তারও আগে তিনি থাইল্যান্ডে ভারতের হাই কমিশনার ছিলেন। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব ছিলেন জয়শঙ্কর। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জয়শঙ্করকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দেন। জয়শঙ্কর ঠান্ডা মাথার মানুষ এবং বিজেপির হিন্দুত্বের আদর্শের অনুসারী। হর্ষ বর্ধনও ঠান্ডা মাথার মানুষ। তিনিও বিজেপির আদর্শের অনুসারী। তবে জয়শঙ্করের আদর্শের দিকটা যতখানি প্রকাশিত, হর্ষ বর্ধনের আদর্শিক দিকটা ঠিক ততখানিই অপ্রকাশিত। নরেন্দ্র মোদি জয়শঙ্করকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বানান, আর জয়শঙ্কর হর্ষ বর্ধনকে পররাষ্ট্র সচিব বানিয়েছেন। এখন নরেন্দ্র মোদি, জয়শঙ্কর এবং হর্ষ বর্ধন তাদের পররাষ্ট্রনীতি ফরমুলেট করছেন।

বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের নীতি নির্ধারণে ৪ জন আমলার নাম স্মরণ করা যেতে পারে। এরা হলেন দুর্গা প্রসাদ ধর বা ডিপি ধর, পি এন হাকসার, সুজাতা সিং এবং হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা। ডিপি ধর এবং পিএন হাকসার পরলোকগত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর আস্থাভাজন ছিলেন এবং সে সময় থেকেই বাংলাদেশের ব্যাপারে প্রো-আওয়ামী লীগ পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করেন। সুজাতা সিংয়ের কথা এতই মশহুর যে, সেই কথা আর নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না। ইনিই সেই সুজাতা সিং, যিনি ২০১৪ সালের নির্বাচনকে জায়েজ করার জন্য ঢাকায় এসে এরশাদকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার জন্য বাধ্য করেছিলেন। তখন ক্ষমতায় ছিল কংগ্রেস এবং প্রধানমন্ত্রী ছিলেন ড. মনমোহন সিং। আর কংগ্রেস প্রেসিডেন্ট ছিলেন সোনিয়া গান্ধী। সেদিন যদি সুজাতা সিং তথা ভারত সর্বশক্তি প্রয়োগ করে এরশাদ তথা জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে না আনতেন তাহলে আজ হয়তো বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ইতিহাস সম্পূর্ণ ভিন্নভাবে লেখা হতো। সবশেষে হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা। তিনি পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে নতুন হলেও তার ডিপ্লোম্যাটিক ক্যারিয়ার অনেক দীর্ঘ। বাংলাদেশে দীর্ঘ ৩ বছর ধরে ভারতীয় হাই কমিশনার হিসাবে কাজ করার ফলে তিনি বাংলাদেশের নাড়ি নক্ষত্র জানেন। পররাষ্ট্র সচিব হিসাবে বাংলাদেশে প্রথম সফরে এসে তিনি তার ৩ বছরের নলেজ এবং অভিজ্ঞতাকে মোক্ষমভাবে কাজে লাগিয়েছেন।

দুই দিনের জন্য বাংলাদেশ সফরে এসে ভারতের নব নিযুক্ত পররাষ্ট্র সচিব সরকারের কর্ণধারদের কাছে বৈঠকে কী বলেছেন, সেটি জানা যায়নি এবং জানা সম্ভবও নয়। তবে তার মনে কী আছে, সেটি কিন্তু তিনি প্রকাশ করেছেন। মনে যখন কিছু আছে এবং সেটি যখন একটি সেমিনারে তিনি প্রকাশ করেছেন তখন সেসব কথা নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে তিনি কথা বলেছেন এবং প্রস্তাব দিয়েছেন, সেটি ধরে নেওয়া যায়। বাংলাদেশ সরকার কী জবাব দিয়েছে, সেটি জানা যায়নি। তবে সেটিও ধরে নেওয়া যায়। এব্যাপারে আরও বেশি কথা বলার আগে, আসুন জেনে নেওয়া যাক, হর্ষ বর্ধন শ্রীংল কী বলেছেন। তিনি যা বলেছেন তার বিস্তারিত একটি বা দুটি পত্রিকা ছাড়া আর কেউ প্রকাশ করেনি। তবে ইংরেজি দৈনিক ‘নিউ এজ’ সেই খবরটি প্রথম পৃষ্ঠায় প্রকাশ করেছে।

ইংরেজি নিউ এজ পত্রিকা সেই খবরটি গত ৩ মার্চ প্রকাশ করেছে। খবরে বলা হয়েছে, বাংলা-ভারত সম্পর্ক নিয়ে অনুষ্ঠিত একটি সেমিনারে গত ২ মার্চ ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব বক্তব্য পেশ করেন। তিনি বলেন, ভারত তাকিয়ে আছে দুই বন্ধু প্রতীম দেশের মধ্যে মিলিটারি টু মিলিটারি কো-অপারেশন, অর্থাৎ দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার দিকে। এই সামরিক সহযোগিতার মধ্যে থাকবে ভারতে প্রস্তুত সামরিক সরঞ্জমাদি বাংলাদেশে বিক্রয়। তিনি বলেন, আমাদের দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিশাল গভীর এবং ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব গড়ার জন্য আমরা দুই দেশ যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছি, সেটি প্রমাণ করে যে, আমাদের দুই দেশের মধ্যে পারস্পারিক আস্থা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে। মি. শ্রীংলার এই বক্তব্য থেকে বোঝা যায় যে, দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতার আলাপ-আলোচনা এখনো চলছে। তিনি আরও বলেন যে, আমাদের দেশে যত রকম যুদ্ধাস্ত্র তৈরি হয় তার সবগুলোই আমরা আপনাদের সাথে শেয়ার করতে চাই।

দুই
শুধুমাত্র সমরাস্ত্র বিক্রিই নয়, বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর জন্য ভারতে ট্রেনিংয়ের সুযোগ-সুবিধা উন্মুক্ত বলেও তিনি মন্তব্য করেন। উভয় দেশের শীর্ষস্থানীয় সামরিক প্রতিষ্ঠানসমূহে সর্বস্তরের সামরিক অফিসারদের প্রশিক্ষণের দুয়ার খোলা থাকবে। তিনি দাবি করেন যে, আসামে নাগরিক পঞ্জি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া এবং নাগরিকত্ব আইন সংশোধন (সিএএ) হচ্ছে ভারতের সম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। কাজেই সেগুলির কোনো প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশের সরকার এবং জনগণের ওপর পড়বে না। তিনি আরও বলেন, তিস্তুাসহ ৬টি অভিন্ন নদীর পানি বণ্টন সম্পর্কে আলোচনা চলছে, পানি প্রবাহের সর্বশেষ অবস্থা রেকর্ড করা হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে যে, এসম্পর্কিত একটি চুক্তি এবছরের শেষের দিকে স্বাক্ষরিত হতে পারে। তিনি বলেন, তিস্তার পানি বণ্টন সম্পর্কিত চুক্তিটি এখনো আলোচনার টেবিলে আছে। দুই দেশের পানিসম্পদ সচিবরা এসম্পর্কে আরও আলোচনার জন্য খুব শীঘ্রই একটি বৈঠকে বসবেন।

এখানে ভারতের নতুন পররাষ্ট্র সচিব মনে হয় পানি বণ্টন ইস্যুটিকে ভিন্নমাত্রা দিতে যাচ্ছেন। তিস্তা নদীর সাথে তিনি বাকি নদীগুলো অর্থাৎ দুধকুমার, ধরলা ইত্যাদিকে গুলিয়ে ফেলছেন। ঐ ৬টি নদী সম্পর্কে কী কী বিষয় আলোচনা হয়েছে এবং কী কী বিষয় আলোচনা হয়নি সেগুলি ভিন্ন বিষয়। তিস্তা চুক্তিকে তিনি খুব কৌশলে এড়িয়ে গেছেন এবং বাংলাদেশের কাছে তিস্তার গুরুত্ব কমে যাওয়ার জন্য অতীতের ঘটনাবলী ইচ্ছে করেই স্মরণ করেননি।

ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা হয়তো ভুলে গেছেন যে, ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং যখন ঢাকায় এসেছিলেন তখন তিনি তিস্তা চুক্তি চূড়ান্ত করেই ঢাকা এসেছিলেন। তখন শুধু একটি বিষয়ই বাকি ছিল। সেটি হলো, দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীদের বা সচিবদের স্বাক্ষর করা। শেষ মুহূর্তে মমতা ব্যানার্জী আসেননি। তখন ভারতীয় পক্ষ থেকে বলা হয় যে, ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার যখন অন্য কোনো দেশের সাথে কোনো চুক্তি স্বাক্ষর করবেন তখন সেই চুক্তিটি যদি ভারতের কোনো প্রদেশ বা অঙ্গরাজ্য সংশ্লিষ্ট হয় তাহলে সেই রাজ্যের সম্মতি প্রয়োজন। মনমোহন সিং যে চুক্তির খসড়া এনেছিলেন, ঢাকায় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর অনুপস্থিতিই বলে দেয় যে, ঐ চুক্তিতে মমতা ব্যানার্জীর সম্মতি নাই। সেই কারণে ২০১১ সালে ড. মনমোহন সিংয়ের আমলে চুক্তিটি আর সই হয়নি।

তারপর ৯ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে। তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি আর আলোর মুখ দেখেনি। ভারতের পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা যতই আশ্বাস দিন না কেন যে চলতি সালের শেষের দিকে তিস্তা নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে, সেই আশ্বাস নেহায়েৎ বাংলাদেশের মন ভুলানো কথা। এই ৯ বছরে পানি অনেক দূর গড়িয়েছে। এর মধ্যে মমতা ব্যানার্জী রুদ্র নামক এক ব্যক্তিকে দিয়ে একটি কমিশন গঠন করেছিলেন। মিস্টার রুদ্র নাকি পশ্চিমবেঙ্গ সবচেয়ে বড় ওয়াটার এক্সপার্ট। রুদ্র কমিশন রিপোর্ট দিয়েছে যে, উজানে অর্থাৎ সিকিমে, যেখান থেকে তিস্তা নদী উৎসারিত, সেখানে অর্থাৎ সিকিমে একাধিক বাঁধ দিয়ে তিস্তা নদীর পানি আটকে দেওয়া হয়েছে। সিকিমের চাহিদা মিটিয়ে যতটুকু পানি পশ্চিমবঙ্গে আসে সেই পানি দিয়ে পশ্চিমবঙ্গের চাহিদাই মেটানো সম্ভব হয় না। সেই পানির একটি হিস্যা বাংলাদেশকে দিলে পশ্চিমবঙ্গের কিছুই থাকে না।

তিন
মমতা ব্যানার্জী এখন যা বলছেন, সেগুলো হয়তো সত্য। কিন্তু সেগুলো তো বাংলাদেশের মাথা ব্যাথা নয়। সেগুলো ভারতের মাথা ব্যাথা। তিস্তা নদীর পানির নায্য অংশ বাংলাদেশ চায়। যেন তেন প্রকারে একটি চুক্তি করলেই বাংলাদেশ খুশি হবে কেন? সিকিম বাঁধ দিয়ে তিস্তার পানি আটকালে সেখানেই তো ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের হস্তক্ষেপ করা উচিত ছিল। ২০১৪ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদি ভারতের ক্ষমতায় আছেন। এই ৯ বছর ধরে সিকিম তিস্তার পানি আটকালো এবং তিস্তার মোট পানি কমে গেল, সেখানে বাংলাদেশ উচ্ছিষ্টের মতো যে টুকু পানি চুঁইয়ে চুঁইয়ে বাংলাদেশে আসবে, সেটুকু গ্রহণ করবে কেন? যেন তেন প্রকারের একটি তিস্তা চুক্তি বাংলাদেশ সরকারের নিকট গ্রহণযোগ্য হলেও বাংলাদেশের জনগণের নিকট তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।
সীমান্ত হত্যা সম্পর্কে ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব যে কথা বলেছেন, বাংলাদেশের নিকট তা মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়। কোনো রকম পরিসংখ্যানের আশ্রয় না নিয়েই হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা ঢালাওভাবে বলেছেন যে সীমান্তে যে, হত্যাকান্ড হচ্ছে সেটার অনুপাত নাকি দুই দেশের মধ্যে ৫০ঃ৫০। কাকে কী বোঝাচ্ছেন ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব? বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর গুলিতে কয়জন ভারতীয় মারা গেছে? তার পরিসংখ্যান দেওয়া হোক। দেখা যাবে, সেই অনুপাত ৯৫ঃ৫ও নয়। অর্থাৎ ভারত ৯৫ জন বাংলাদেশি হত্যা করে থাকলে বাংলদেশ ৫ জন ভারতীয়কেও হত্যা করেনি। আর হর্ষ বর্ধন শ্রীংলা এক লাফে বাড়িয়ে দিলেন ৫০-এ। বাংলাদেশের জনগণ এতটা আহম্মক নয় যে, যা বোঝাবেন তাই বুঝবে।
[email protected]



 

Show all comments
  • মাহতাব হোসেন ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০০ এএম says : 0
    দু’টো দেশ- ভারত ও চীন; দেশ দু’টোর একটা, ভারত আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধে নানাভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করেছে, যার জন্য আমাদের ঐ দেশটার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকাটাই স্বাভাবিক মানবীয় রীতি, যদিও দুর্মূখ ও ছিদ্রান্বেষীরা বলাবলি করে যে, ভারত তার নিজের সুবিধার জন্যই আমাদের সহায়তা করেছিল, অর্থাৎ প্রকৃতিগত বৈরী প্রতিবেশী পাকিস্তানকে স্থায়ীভাবে দুর্বল করার মানসেই আমাদের স্বাধীনতা ‍যুদ্ধে সে সহায়তা করেছিল, যা মূলতঃ তার ভূ-রাজনৈতিক কৌশল বৈ নয়। অপরদিকে চীন ঐ যুদ্ধে আমাদের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষে ছিল, এবং স্বভাবতঃই তাকে আমাদের বৈরী ভাবার যথেষ্ট প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য কারণ রয়েছে। কিন্তু স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে আমরা কি দেখলাম- ভারত আমাদের জন্মগত বন্ধু হওয়া সত্ত্বেও বন্ধুত্বের রীতি ও আন্তর্জাতিক আইনকানুনের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শণ করে আমাদের যৌথ নদীগুলোকে একতরফা বাঁধ দিয়ে আমাদেরকে ‘পানিতে মারা’-র পদক্ষেপ নিয়েছে; আমাদের দেশটাকে তার প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য বাজারে পরিণত করেছে, অথচ আমাদের কোন পণ্য তার দেশে ঢোকার তেমন একটা রাস্তা রাখেনি; তার নানা মিডিয়ায় আমাদের দেশটা সয়লাব, অথচ সেদেশে আমাদের মিডিয়া নিষিদ্ধ; অধিকন্তু সারা বিশ্বেই সীমান্তে কিছু লোকের অবৈধ আনাগোণা থাকে, ভারত আমাদের দেশের মানুষদের পাখীর মত গুলি করে মারছে, পক্ষান্তরে আমাদের দেশ, তা ভদ্রতাই বলি অথবা বাস্তবতার অনুধাবন, সেটা করছে তো না-ই অধিকন্তু বন্ধুত্বের চরম পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে ট্রানজিট, বন্দর ব্যবহার, সর্বোপরি তার সেভেন-সিস্টারসের গোলযোগ প্রশমনে, যথেষ্ট ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও, সব ধরণের সহযোগিতা করার মত বড় মাপের সুবিধা ভারতকে ইতোমধ্যেই দিয়ে দিয়েছে। পক্ষান্তরে চীন নানা প্রক্রিয়ায় আমাদের সাথে মুক্তিযুদ্ধকালীন তিক্ত সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটিয়ে নানা মাত্রিক উন্নয়নে পরীক্ষিত সহায়তা চালিয়ে যাচ্ছে। যার কারণে উভয় দেশের ক্ষেত্রে প্রকৃত কূটনৈতিক ও বন্ধুত্বের সম্পর্কের গণেশ উল্টে গেছে। সম্পর্কের পারদ-ঘটিত বিষয়ে অনেক বলে ফেললাম। এখন সামরিক সরঞ্জাম সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু না বললেই নয়। সারা বিশ্বের প্রেক্ষাপটে দেখা যায় যে, যুদ্ধ সাধারণতঃ প্রতিবেশী দেশের মধ্যেই বেশী লাগে, যদিও আমাদের প্রতিবেশী ভারত বা মায়ানমারের সাথে তা কখনো লাগার সম্ভাবনা দেখছি না, কেননা ভারতের সাথে লাগলে তা তা ন্যাক্কারজনক পানি রাজনীতির কারণে এবং মায়ানমারের সাথে লাগলে তা তার দেশের মানবতা-বিরোধী রোহিঙ্গা ইস্যুর চেয়ে বড় কোন ইস্যু কার্যতঃ থাকতে পারে না । এর পরও যদি কখনো তা লেগে বসে, সেক্ষেত্রে ঐ প্রতিবেশী দেশের উপর অস্ত্র বা তার খুচরা যন্ত্রাংশের জন্য নির্ভরশীল থাকলে, অতি বড় আহাম্মকেও ‍বুঝে যে, ঐ সময় ঐ দেশ কোন প্রকারেই তা আর সরবরাহ করবে না, তা যত চুক্তিই থাকুক না কেন। এমতাবস্থায় প্রতিরক্ষা সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য কোন দেশেরই তার সীমান্তের প্রতিবেশীর উপর নির্ভরশীল থাকাটা ‍কোনমতেই যুক্তিযুক্ত নয়। সম্মানিত নিবন্ধকারকে ধন্যবাদ, তাঁর অনেক মূল্যবান তথ্য-সমৃদ্ধ নিবন্ধটার জন্য।
    Total Reply(1) Reply
    • jack ali ১০ মার্চ, ২০২০, ১১:৪৩ এএম says : 0
      Excellent......
  • Sajjad ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    যে দেশের সাথে বন্ধুত্ব আমাদের দেশের জন্য বেশী কার্যকর/ফলদায়ী, সেই দেশের সাথেই বন্ধুত্ব বজায় রাখা উচিত-–তা সে ভারত/চীন বা যেই হোক না কেন। সবার আগে দেশ ও জন‌গনের স্বার্থ।
    Total Reply(0) Reply
  • Rabby Shaid ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    ভাল লেগেছে লেখাটি।
    Total Reply(0) Reply
  • Ahmed ahmad ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    যে কোন চুক্তির ব্যাপারে দেশবাসীকে আগে অবহিত করতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • mahfuza bulbul ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০১ এএম says : 0
    বাংলাদেশ সরকার আশা করি নিজ দেশ ও দশের স্বার্থে অনড় থাকবে।
    Total Reply(1) Reply
    • masud ১২ মার্চ, ২০২০, ৪:২০ পিএম says : 0
      এই সরকার জনগনের খায় না পরে যে জনগনের স্বার্থ দেখবে। তারা তাদের স্বার্থ দেখবে তাই নয় কি ।
  • Mohammed Khan ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    চমৎকার আলোচনা, সময়োপযোগী হয়েছে। আমরা ভারত ও চীন উভয়ের সাথেই বন্ধুত্ব চাই এবং তা সমমর্যদার উপর ভিত্তি করে।
    Total Reply(0) Reply
  • Solaiman T ১০ মার্চ, ২০২০, ১:০২ এএম says : 0
    আপনি একটি ভাল, সময়উপযোগী বিশ্লেষন করেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১০ মার্চ, ২০২০, ১১:৩৯ এএম says : 0
    We liberate our country from Pakistan... but we are not independent--- our political leaders they don't love our beloved country .. rather they like to stay in power and loot our tax payers hard earned money.. and also they have sold our beloved country to India.. Now India is our Boss and they are ruling our country behind the screen... we must not buy Indian toy arms and ammunition.. We don't need India to train our Military either..
    Total Reply(0) Reply
  • Monjur Rashed ১০ মার্চ, ২০২০, ১:৫০ পিএম says : 0
    Good analysis. India is never a trust-worthy neighbor.
    Total Reply(0) Reply
  • মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ১০ মার্চ, ২০২০, ৪:৪১ পিএম says : 0
    মিলিটারী টু মিলিটারী চুক্তিটিও ভারতের প্রধান উদ্দ্যেশ্য । তিস্তার সামান্য হিস্যার কথা এবং অন্যান্য গুলো লোভ দেখানো । ভারতের আগ্রাসী নীতির একটি গোপন রহস্য হলো বাংলাদেশ মিলিটারীর সমস্ত তথ্য, বিকলাঙ্গ অস্ত্র বিক্রি করা, অসম ট্রেনিং এর মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনামধ্যন্য প্রতিষ্ঠান সেনাবাহিনীকে ধ্বংস করা । বাংলাদেশ যাতে কোন দিন মাথা উচু করে দাড়াতে না পারে এবং এর চাইতে বড় সত্য হলো ভারতের মুসলমানদের পুশ ইন করতে হলে এই মূহুর্তে দুই দেশের মিলিটারী টু মিলিটারী চুক্তি তাদের জন্য খুবই জরুরী । যাহাতে বাংলাদেশ এ ব্যাপারে কোন নাক গলাতে না পারে । বিষয়টি নিয়ে সরকারী মহল বিশদ ভাবে পর্যালোচনা, পরীক্ষা নিরীক্ষা ও যাচাই বাছাই করা বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য খুবই জরুরী । না হলে ভারতের কু চক্রান্তের স্বীকারে পরিনত হবে । তখন আর কিছুই করার থাকবে না । ধন্যবাদ লেকখকে ।
    Total Reply(0) Reply
  • Mam Akash ১১ মার্চ, ২০২০, ৮:২৮ পিএম says : 0
    অসাধারণ!!! এমন বাস্তবধর্মী উপস্থাপনা করার জন্য অনেক ধন্যবাদ।।।
    Total Reply(0) Reply
  • Kibria khan ১১ মার্চ, ২০২০, ৮:৪৩ পিএম says : 0
    দাদাদের কোন কিছুই এত সস্তা নয় যে খুব সহজেই পেয়ে যাবেন । চেষ্টা করতে থাকুন ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন