Inqilab Logo

বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪, ১৯ আষাঢ় ১৪৩১, ২৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

ইরানে রক্ষণশীলরাই আবার ক্ষমতায় আসছে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৫:৪৪ পিএম

ইরানের রক্ষণশীল ও কট্টরপন্থীরাই আবার ক্ষমতায় আসছে। গতকাল দেশটির সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার পর প্রাথমিক ফলাফলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে, কট্টরপন্থীরা বিপুল ভোটে জয়ী হচ্ছে। এর মানে দাঁড়াচ্ছে, দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির কট্টর সমর্থকরাই প্রেসিডেন্ট ছাড়া ইরানের মূল ক্ষমতায় বসছেন।

তবে চার বছর আগে সংস্কারপন্থীরাই ইরানের ক্ষমতায় এসেছিল। প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানিকে সংস্কারপন্থী এবং পশ্চিমা বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়নে আগ্রহী বলে বিবেচনা করা হয়। কিন্তু ইরানের অন্যান্য ক্ষমতাকেন্দ্রের কারণে বৃহত্তম দল হওয়া সত্ত্বে ও তাদের অনেক প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। বিশেষ করে গার্ডিয়ান কাউন্সিলের বাধার কারণে।

গতকাল সাধারণ নির্বাচন হলেও ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বছর। ইরানের সঙ্গে বহির্বিশ্বের সম্পর্ক বাড়ানোর প্রতিশ্রæতি দিয়ে দুইবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। তবে কট্টরপন্থীরা সাধারণ নির্বাচনে জিতলে তা আগামী বছরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সময় সকাল ৮টা থেকে শুরু হয়ে রাত ৮টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণের কথা থাকলেও ভোট কম পড়ার কারণে ভোটপ্রদানের শেষ সময় কয়েক দফায় বাড়ানো হয়। সরকার সমর্থিত সূত্র দাবি করছে, মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রগুলো খোলা ছিল। তবে বিরোধীরা বলছে ভিন্নকথা।

আনুষ্ঠানিক হিসাব অনুযায়ী, রাজধানী তেহরানে ভোট প্রদানের হার আনুমানিক ২২ শতাংশ। জাতীয়ভাবে এবারের নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪০ শতাংশ। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই হার ছিল ৬২ শতাংশ। এদিকে ২৯০ আসন বিশিষ্ট পার্লামেন্টের ৪২ আসনের ফল ঘোষণা হয়েছে, তাতে চার-পঞ্চমাংশ আসনে জিতেছে কট্টরপন্থীরা।

যদি কট্টরপন্থরাই শেষ পর্যন্ত জয়ী হয় তাহলে আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগের এক বছর হাসান রুহানিকে বেশ কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। প্রাথমিক ফলাফলে দেখা যাচ্ছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আহমেদিনিজাদের মন্ত্রিসভার তিন মন্ত্রীর সঙ্গে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নরও নির্বাচিত হচ্ছেন।

এছাড়া তেহরানের সাবেক মেয়র মোহাম্মদ বাঘের ঘালিবাফ জয়ী হতে যাচ্ছেন। তিনি ইরান-ইরাক যুদ্ধের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন এবং ইরাকের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) কমান্ডার ছিলেন একসময়। এই জয়ের মাধ্যমে তিনি দেশটির পার্লামেন্ট ‘মজলিসের’ স্পিকার হতে যাচ্ছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে যদি সর্বোচ্চসংখ্যক ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন তাহলে তা হবে শত্রুদের বিপক্ষে ইরানের ঐক্যের প্রদর্শন। নির্বাচনের প্রাক্কালে গত মঙ্গলবার সব ইরানি নাগরিককে ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়ে এমন একটি টুইট করেছিলেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি। কিন্তু তা কাজে আসেনি।

ইরানের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারনী পরিষদ (শুরা কাউন্সিল) এবারের নির্বাচনে মধ্যপন্থী ৬ হাজার ৮৫০ জন প্রার্থীর প্রার্থীতা বাতিল করেছে। দেশটির এবারের নির্বাচনে প্রার্থী হতে আবেদন জমা পড়েছিল ১৪ হাজার। তাদের মধ্য থেকে এই পরিষদ যাদেরকে বর্তমান শাসনব্যবস্থার জন্য হুমকি মনে করেছে, শুধু তাদেরই প্রার্থীতা বাতিল করেছে।

ইরানের বর্তমান পার্লামেন্টের (যা মজলিস নামে পরিচিত) এক-তৃতীয়াংশ আইনপ্রণেতাকেও এবারের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দেয়া হয়নি। ইরানের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি খামেনি শুরা পরিষদের এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে বলেন, ‘যারা বিদেশি শত্রুদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায় তাদের আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচনে কোনো স্থান নেই।’



 

Show all comments
  • taijul Islam ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ৩:১১ পিএম says : 0
    good jobs
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ