মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
চার্লস এ বেয়ার্ড তার লেখা ‘আমেরিকান ফরেন পলিসি ইন দ্য মেকিং, ১৯৩২-১৯৪০ : এ স্টাডি ইন রেসপন্সিবিলিটি’ বইয়ে সাম্রাজ্যবাদ নিয়ে বলেছেন, ‘ক‚টনীতি ও নেতাদের হাতে রাখার মাধ্যমে অন্য জাতির এলাকা দখল করা বা নিয়ন্ত্রণে রাখা এবং সেখানে কারখানা, ব্যবসা ও বিনিয়োগে উৎসাহিত করাই হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদ। আরও স্পষ্ট করে পার্কার টি মুন তার ‘সাম্রাজ্যবাদ ও বিশ্ব রাজনীতি’ বইয়ে লিখেছেন, ‘এক কথায় সাম্রাজ্যবাদ বলতে বোঝায় অ-ইউরোপীয় জাতিগোষ্ঠীর উপরে ইউরোপীয়দের আধিপত্য বিস্তার করা।’
দুজনেই আলাদাভাবে একটি কথাই বলেছেন। তা হলো, অন্যের এলাকা জবরদখল করা আর ভৌগলিক সার্বভৌমত্ব হরণ না করে দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে একতরফা ভাবে অন্যের উপরে সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার মধ্যে খুব একটা পার্থক্য নেই। অনুসন্ধান করলে দেখা যায়, সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রগুলো সার্বভৌম রাষ্ট্রগুলোর উপরে সাম্রাজ্যবাদ বা উপনিবেশবাদ চাপিয়ে দিতে সে সব দেশে যুদ্ধ, পাশবিকতা, শোষণ, লাঞ্ছনা, জবরদখল, অবক্ষয়, পরস্পরের প্রতি ঘৃণা ইত্যাদি সৃষ্টি করত তাদের উদ্দেশ্যে সাধণের জন্য। তবুও বেশিরভাগ উপনিবেশের সৃষ্টির পেছনের কারণগুলো গভীরভাবে দেখলে বোঝা যায়, সাম্রাজ্যবাদীরা যুদ্ধ করে অন্য এলাকা দখল করার চেয়েও দ্রæত সময়ে, ক‚টচালের মাধ্যমে সে জায়গাগুলোতে নিজস্ব উপায়ে বিস্তার লাভ করেছিল।
তবে আফ্রিকার মধ্যে ইথিওপিয়া একটু ব্যতিক্রম বলে মনে হয়। তারা ১৮৯৬ সালে উপনিবেশবাদী ইতালির বিরুদ্ধে সাহসিকতার সাথে যুদ্ধ করেছিল। কিন্তু, দুঃখের বিষয় আফ্রিকার সবচেয়ে বেশি জনবহুল দেশ হয়েও নাইজেরিয়া ব্রিটেনের কাছে স্বাধীনতা হারিয়েছিল। এর কারণ তাদের ভিন্নধর্মী প্রকৃতি। ইতালিও ইথিওপিয়াকে শোষণ করার চেষ্টা করেছিল এবং এভাবে তাদের পূর্ব আফ্রিকার উপনিবেশগুলোকে একত্রিত করার চেষ্টা করেছিল, কিন্তু তারা ইথিওপীয়দের চেয়ে শক্তিশালী বাহিনী নিয়েও একটি অপমানজনক এবং চ‚ড়ান্ত সামরিক পরাজয়ের মুখোমুখি হয়েছিল। তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে ইতালি আবার ইথিওপিয়ায় আক্রমণ করে জয়লাভ করেছিল এবং পূর্ব আফ্রিকায় তাদের উপনিবেশগুলো সংগঠিত করতে পেরেছিল।
প্রসঙ্গত, আফ্রিকার ভাগাভাগি নিয়ে ইতিহাসের অন্যতম ভয়ঙ্কর ষড়যন্ত্র অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৮৮৪ সালে বার্লিন সম্মেলনে। পলাতক ডাকাতরা যেভাবে তাদের লুটের সম্পদ ভাগ করে সেভাবে ১৩টি ইউরোপীয় দেশ আফ্রিকাকে ‘দখল যার, অধিকার তার’ ভিত্তিতে ভাগ করে নিয়েছিল। সেই সম্মেলনের আয়োজক ছিলেন জামার্নীর প্রথম চ্যান্সেলর ওটো ভন বিসমার্ক।
তবে উপনিবেশগুলোতে ইউরোপীয়রা কিছু প্রশংসনীয় কাজও করেছিল। পানামায় উইলিয়াম গর্গাস এবং কিউবার ওয়াল্টার রিড যেভাবে চিকিৎসা পরিষেবার উন্নয়ন করেন তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। একইভাবে, ব্রিটিশ উপনিবেশিক সরকার কর্তৃক নিম্ন প্রশাসনিক পদ পরিচালনার জন্য স্থানীয়দের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চালু করার বিষয়টিও উল্লেখযোগ্য। স্পেন থেকে স্বাধীনতা অর্জনের পরে কিউবা, পুয়ের্তো রিকো এবং ফিলিপাইনকে উন্নয়নের পথে পরিচালিত হতে সহযোগিতা করাটা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির অংশ ছিল। (কাল শেষ পর্ব)
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।