Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সহজ ছিলনা মাহমুদউল্লাহর জন্যও!

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২২ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

গোটা সফর নিয়েই চলেছে ধারাবাহিক নাটক। নিরাপত্তা যেখানে মুখ্য তার অজুহাত কখনই সহজ ভাবে দেখা হয়নি বাংলাদেশের পক্ষ থেকে। তবে সকল অনিশ্চয়তা কাটিয়ে অবশেষে আজ রাতের বিশেষ বিমানে চেপে পাকিস্তান যাচ্ছে বাংলাদেশ। কোচিং স্টাফদের বেশির ভাগ না থাকলেও ক্রিকেটাররা সঙ্গী হিসেবে পাচ্ছেন কেবল মুশফিকুর রহিমকে। নিরাপত্তা শঙ্কায় পরিবারের সায় না থাকায় পাকিস্তান যাচ্ছেন না অভিজ্ঞ এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান। মুশফিকের সঙ্গে আত্মীয়তা (ভায়রা ভাই) থাকায় একই পরিবারে সম্পৃক্ত মাহমুদউল্লাহও। টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক হিসেবেই দলকে নিয়ে পাকিস্তান যাওয়া মাহমুদউল্লাহ জানালেন, উদ্বিগ্ন ছিল তার পরিবারও, শুরুতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তার জন্যও তাই ছিল বেশ কঠিন।

অনেক দেন-দরবার, দ্বিধা ধন্দের দোলাচল পেরিয়ে মাত্র ক’দিন আগেই চ‚ড়ান্ত হয় বাংলাদেশ দলের পাকিস্তান সফর। তিন দফায় হতে যাওয়া সেই সফরের প্রথম ধাপের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলতে আজ রাতে উড়াল দেবে বাংলাদেশ। তার আগের দিন গতকাল মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ছিল শেষ অনুশীলন। অনুশীলনের মাঝে কথা বলতে এসে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি অধিনায়ককে অনুমিতভাবেই পাকিস্তানের সফরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হলো। মাহমুদউল্লাহ জানালেন, পাকিস্তান সফর নিয়ে উদ্বিগ্ন পরিবারের সায় পেয়ে তারও বেগ পেতে হয়েছে, ‘প্রথমে অবশ্যই কঠিন ছিল। কারণ আমার পরিবারেরও উদ্বেগ ছিল। আমি আমার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তো ওরা রাজি হয়েছে। এদিক থেকে আমি কিছুটা নিশ্চিন্ত, যেহেতু আমার পরিবার এতোটা পেরেশানি অনুভব করবে না। কারণ পাকিস্তান আমাদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তাই দিচ্ছে।’

মাহমুদউল্লাহ আর মুশফিকের স্ত্রীরা আপন দুই বোন। মাহমুদউল্লাহ পরিবারের সায় পেলেও মুশফিক এই জায়গায় তা পাননি। তবে মুশফিকের এই অবস্থান পুরোপুরি সমর্থন করেন তার ভায়রা ভাই, ‘মুশির সিদ্ধান্ত আমিও সমর্থন করি। পরিবারের একটা ইস্যু থাকে সবসময়। পরিবারের চাইতে বড় ইস্যু কোনও ক্রিকেটারের বা কোনও সাধারণ মানুষের হতে পারে না। মুশফিকের সিদ্ধান্তের প্রতি আমার প‚র্ণ সমর্থন আছে।’

আজ রাতে ভাড়া করে বিশেষ বিমানে লাহোরে রওনা দেওয়ার কথা বাংলাদেশ দলের। যেহেতু সিরিজ শুরু হয়ে যাচ্ছে, এখন আর নিরাপত্তা ইস্যু নিয়ে ভাবতে রাজি নন মাহমুদউল্লাহ, ‘এই মুহ‚র্তে বলতে পারি, এটা নিয়ে কেউ চিন্তিত নয়। সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে, শুধু খেলার কথাই চিন্তা করছি। ওখানে কীভাবে ভালো করব, জিতব, সেটা নিয়েই ভাবছি।’

পাকিস্তানের মাটিতে পাকিস্তানকে হারানো সব সময়ই কঠিন। টি-টোয়েন্টি র‌্যাঙ্কিংয়ে দলটি আবার সবার ওপরে। সেখানে বাংলাদেশের অবস্থান নয়ে। র‌্যাঙ্কিং, শক্তিমত্তা যেটিই হোক, ভারতের মাটিতে ভারতকে হারানো বাংলাদেশ পাকিস্তানকে কেন হারাতে পারবে না? মাহমুদউল্লাহ আশার কথাই বলছেন, ‘র‌্যাঙ্কিং বলছে আমরা নয়ে, ওরা একে। তারা টি-টোয়েন্টি সংস্করণে ধারাবাহিক ভালো খেলছে। আমরা যেভাবে খেলছি, গত সিরিজে কিংবা সবশেষ কয়েকটা সিরিজ, আশাবাদী সেরাটা দিতে পারব। সিরিজ জেতারই চেষ্টা করব।’

২০১৬ বিশ্বকাপের পর এই প্রথম পাকিস্তানের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলবে বাংলাদেশ। সবশেষ তিনবারের মুখোমুখি লড়াইয়ের দুটিতে জেতা দলটির চোখে সিরিজ জিতে ফেরার স্বপ্ন। র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থাকলেও টি-টোয়েন্টিতে সময়টা অবশ্য ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তানের। ফল হওয়া সবশেষ ৯ ম্যাচের কেবল একটি জিতেছে তারা, হেরেছে বাকি আটটিতে। দেশের মাটিতে হোয়াইটওয়াশড হয়েছে শ্রীলঙ্কার দ্বিতীয় সারির দলের বিপক্ষে, ‘শেষ কয়েকটা সিরিজে পাকিস্তান হয়তো খারাপ করেছে। তবে তারা টি-টোয়েন্টিতে অনেক শক্তিশালী দল। তাদের দেশে খেলা। দেশের মাটিতে শেষ সিরিজে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারা নিয়ে তাদের হয়তো উদ্বেগ আছে।’

সাকিব নিষিদ্ধ, মাশরাফি খেলেন না, মুশফিক নেই, ইমরুলও উপেক্ষীত- দলে তারুণ্যের আধিক্য। সেদিক থেকে অভিজ্ঞদের যারাই আছেন তাদেরই দায়িত্বটা বেশি। বিশেষকরে ২০০৮ সালে পাকিস্তানে সবশেষ সফর করা দলটির মধ্যে এবার মাহমুদউল্লার সঙ্গী কেবল তামিম ইকবাল। দায়িত্বটা তাই দেশসেরা ওপেনারকেই দিতে চান আপৎকালীন অধিনায়ক, ‘তামিম আর আমি দুজনেই বিশ্বাস করি, এবার আমাদের কাঁধেই দায়িত্বটা বেশি। তার অভিজ্ঞতা টপঅর্ডারে ভালো কাজে দেবে। বিপিএলে দারুণ খেলে ছন্দে আছে। আমি নিজেও চেষ্টা করবো দলের প্রয়োজনে দায়িত্বশীলতার সঙ্গে ব্যাট করতে।’

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাহমুদউল্লাহ


আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ