Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তেহরানে ইউক্রেনের বিমান বিধ্বস্ত, ১৭৮ যাত্রীর মৃত্যু

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

ইরানের রাজধানী তেহরান বিমানবন্দরের কাছে গতকাল একটি ইউক্রেনীয় বিমান বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় বিমানকর্মী-সহ ১৭৮ যাত্রীর প্রত্যেকেই নিহত হয়েছেন। বিমানটি তেহরানের ইমাম খোমেইনি বিমানবন্দর থেকে রওনা দিয়েছিল। আকাশে ওড়ার কিছু ক্ষণের মধ্যেই সেটি ভেঙে পড়ে। দুর্ঘটনায় যাত্রীদের সকলেরই মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে সে দেশের সরকারি টিভি চ্যানেল।

বিমানবন্দর থেকে রওনা দেয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই দুর্ঘটনা ঘটল কীভাবে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে ইরানের সংবাদ সংস্থা আইএসএনএ। গত সাড়ে তিন বছর ধরে যাত্রী পরিবহণের জন্য বিমানটি ব্যবহার করা হচ্ছিল বলে জানিয়েছে ফ্লাইট ট্র্যাকিং সার্ভিস ‘ফ্লাইট রেডার-২৪’।

এই বিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় কোনো সন্ত্রাসী হামলার সংশ্লিষ্টতা নেই বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। গতকালর তেহরানে অবস্থিত ইউক্রেনের দূতাবাসে এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ‘বোয়িং-৭৩৭’ মডেলের বিমানটি কারিগরি ত্রুটির কারণেই বিধ্বস্ত হয়েছে।
জানা গেছে, গতকাল ভোরে রাজধানী তেহরানের ইমাম খোমেনি বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়নের পরপরই বিমানটি দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর পারান্দে বিধ্বস্ত হয়। ‘ফ্লাইহার্ডার ২৪’ ফ্লাইট ট্র্যাকারের তথ্য মতে, ইউক্রেনের আন্তর্জাতিক এয়ারলাইন্স ফ্লাইট ৭৫২ বিমানটি স্থানীয় সময় ভোরে উড্ডয়ন করে। বিমানটি আরোহীদের নিয়ে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের বোরিস্পিল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের কথা ছিল।
তেহরানের ইমাম খোমেইনি বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, গতকাল স্থানীয় সময় ভোর ৫টা ১৫ মিনিটে বিমানটির রওনা দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এ দিন প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে, সকাল ৬টা ১২ মিনিটে বিমানটি ছাড়ে। তার কিছুক্ষণ পরই দক্ষিণ-পশ্চিমের পারান্দের কাছে বিমানটি ভেঙে পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে তেহরানের আপদকালীন পরিষেবা বিভাগের কর্মীরা পৌঁছন। উদ্ধারকর্মীদের একটি দলও ঘটনাস্থলে হাজির হয় বলে জানান সে দেশের বেসামরিক বিমান পরিবহণ বিভাগের মুখপাত্র রেজা কাফরাজাদেও। ইরানের আইএসএনএ সংবাদ সংস্থার পক্ষ থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে আগুন লাগা অবস্থায় বিমানটিকে মাটিতে পড়তে দেখা যায়। তার পর প্রচন্ড জোরে বিস্ফোরণও ঘটে।

ইউক্রেনিয়ান এয়ারলাইনের যে বিমানটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়েছে, সেটি দুই ইঞ্জিন বিশিষ্ট, মাঝারি পাল্লার বোয়িং ৭৩৭-৮ মডেলের মধ্যে পড়ে। ১৯৯০ সালের শেষ দিকে এই বিমান চালু হয়। এই মুহ‚র্তে বিশ্বের বহু দেশের বিমান সংস্থাই এই বিমান ব্যবহার করে। তবে এই ধরনের বিমান দুর্ঘটনাপ্রবণ বলেও মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের। ২০১৬-র মার্চে দুবাই থেকে রাশিয়ার রোস্তভ অন ডন বিমান বন্দরে নামার সময় ফ্লাই দুবাই ৭৩৭-৮ বিমানটি ভেঙে পড়লে ৬২ জন প্রাণ হারান। ২০১০-এর মে মাসে দুবাই থেকে মেঙ্গালুরুতে নামার সময় ভেঙে পড়ে এয়ার ইন্ডিয়া এক্সপ্রেসের আর একটি ৭৩০-৮ বিমান। সে বার ১৫০ জন যাত্রীর মৃত্যু হয়।

গত কয়েক বছরে একাধিক বিমান দুর্ঘটনার সাক্ষী হয়েছে ইরান। ২০১৯-এর শুরুতেই খারাপ আবহাওয়ার জেরে সেনাবাহিনীর বোয়িং ৭০৭ বিমান ভেঙে পড়ে সেখানে। তাতে ১৫ জনের মৃত্যু হয়। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে তেহরান থেকে ইয়াসুজ যাওয়ার পথে একটি যাত্রীবাহী বিমান ভেঙে পড়ে। সে বার ৬৫ জন প্রাণ হারান। তার আগে, ২০১৪ সালে তেহরানের মেহরাবাদ থেকে ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই ভেঙে পড়ে একটি বিমান, তাতে ৩৯জন মারা যান। সূত্র : বিবিসি, আল-জাজিরা।



 

Show all comments
  • Noor Zahan ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৩ এএম says : 0
    খুবই দুঃখজনক।
    Total Reply(0) Reply
  • Kamal Pasha ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৩ এএম says : 0
    ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন
    Total Reply(0) Reply
  • Niloy Khan ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৪ এএম says : 0
    আল্লাহ তুমি সবাইকে জান্নাতুল ফেরদাউস দান করো।
    Total Reply(0) Reply
  • MD Mizan ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৫ এএম says : 0
    আল্লাহ সবাইকে এ ধরনের দুর্ঘটনা থেকে হেফাজত করুক
    Total Reply(0) Reply
  • Habib Ahsan ৯ জানুয়ারি, ২০২০, ১১:৫৬ এএম says : 0
    very sad news
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইরান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ