Inqilab Logo

রোববার, ০৭ জুলাই ২০২৪, ২৩ আষাঢ় ১৪৩১, ৩০ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সখিপুরে এক লোকের পেটের ভিতর বাঁশ ঢুকে মৃত্যু

সখিপুর(টাঙ্গাইল)উপজেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৪:৪২ পিএম

সখিপুর-ঢাকা-টাঙ্গাইল সড়কের বোয়ালী সখিপুর ফিলিং স্টেশনের সন্নিকটে সোমবার বিকালে সড়কের মধ্যে বাঁশের ট্রাক লুট করার সময় অপর গাড়ীর ভিতর বাঁশ ঢুকে গিয়ে সোহেল(২৫) নামে এক হেলপার গুরুতর আহত হয়েছে। পেটের বাম পাশে বাঁশ ঢুকে পড়ায় তাকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার রাত আটটার সময় সোহেলের মৃত্যু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, সড়কের পাশে ট্রাক থামিয়ে বাঁশ লুট করার সময় প্যারগন কোম্পানির গাড়ির সামনের গ্লাস ভেঙ্গে বাঁশ ঢুকে পড়লে ওই গাড়ীর হেলপার সোহেলের পেটে বাঁশ ঢুকে যায়। সোহেল পাবনা সদর উপজেলার শ্রীপুর গ্রামের জাকির শেখের ছেলে। এ বিষয়ে সখিপুর থানা পুলিশ উপজেলার দেওদিঘী গ্রামের হবি সিকদারের ছেলে ড্রাইভার হারুনকে গ্রেফতার করেছে। বাঁশের গাড়ির কারনে সখিপুর থানার এসআই শাহজাহান ও আলিমুদ্দিন ভেন্ডার গুরুতর আহত হয়েছে।

টাঙ্গাইলের সখিপুর থেকে দৈনিক অভারলোড হয়ে ঝুঁকি নিয়ে ৩৫/৪০ট্রাক বাঁশ ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা হচ্ছে। এ জন্য সড়ক খরচ বাবদ সড়কের বিভিন্ন থানা, ট্রাফিক পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ,বনবিভাগকে ট্রাক প্রতি দিতে হয় ৪/৫হাজার টাকা। এভাবে প্রতিদিন ৪০টি বাঁশের ট্রাক পরিবহনে প্রায় দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হয়। কোন স্পটে কত টাকা দিতে হবে পূর্ব থেকেই নির্ধারিত থাকে। এভাবে প্রতি মাসে কোটি টাকা চাঁদা আদায় করা হচ্ছে। উপজেলার বড়চওনা,কালিয়া, কচুয়া এলাকার কয়েকজন বাঁশ ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থানার ডিমান্ড বেশী থাকায় কিছুদিন ট্রাকে বাঁশ পরিবহন বন্ধ ছিল। ডিমান্ড কমানোর পর পূনরায় বাঁশ পরিবহন শুরু হয়েছে। থানা পুলিশ,ট্রাফিক পুলিশ ছাড়াও প্রধান সড়ক ও স্থানীয় সড়কে প্রতি ট্রাক বাঁশ পরিবহনের জন্য গোড়াই-চন্দ্রা-সফিপুর-কোনাবাড়ি হাইওয়ে পুলিশকে ০১৮৫৯৯১২১৪৩ বিকাশ নাম্বারে ৩/৪হাজার টাকা দিতে হয়। সখিপুর থেকে দৈনিক ৩৫/৪০ ট্রাক বাঁশ ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ট্রাকে পরিবহন করা হচ্ছে। ট্রাকে ধারন ক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্তি বাঁশ পরিবহন করায় প্রতিনিয়ত দূর্ঘটনা ঘটছে। উপজেলার শোলা প্রতিমা ও প্রতিমাবংকী এলাকায় গলা ও মাথায় বাঁশ ঢুকে দুইজন মারা গেছে। বাঁশের ট্রাকের কারনে সড়কে দূর্ঘটনা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ও যানজটে নাকাল হচ্ছে অন্যান্য পরিবহনের যাত্রীগন। থানা পুলিশ ও ট্রাফিক পুলিশের চাঁদাবাজির কারনে ট্রাক ড্রাইভার ও বাঁশ ব্যবসায়ীরা আইনের কোন তোয়াক্কা করছে না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন বাঁশ ব্যবসায়ী বলেন,থানা পুলিশ ও ট্রাফিক ম্যানেজ করেই ধারনক্ষমতার চেয়ে বেশী বাঁশ নিয়ে আস্তে আস্তে ট্রাক ঢাকা যায়। বাঁশের ট্রাক ড্রাইভার বলেন,ট্রাকের পিছনে বাঁশ রাস্তায় ঘেঁষে যাওয়ায় ও অন্যান্য যান বাহনের চেয়ে ধীর গতিতে চলার কারনে প্রায়ঃশই বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটছে। কয়েকজন সাংবাদিক বাঁশের গাড়ি সম্পর্কে সখিপুর থানার ওসি মো.আমির হোসেনকে জানালে তিনি বিষয়টি ওসি তদন্তকে দেখার জন্য নির্দেশ দেন। সখিপুর থানার ওসি তদন্ত লুৎফুল কবীর বলেন, ট্রাক মালিক,ড্রাইভার ও বাঁশ ব্যবসায়ীকে থানায় ঢাকার পরও তারা আসেনি। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন সাধারন যাত্রীগন ও ভুক্তভোগীরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ