Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রকৃতির মহৌষধ মধু

আফতাব চৌধুরী | প্রকাশের সময় : ৫ ডিসেম্বর, ২০১৯, ৯:০৪ পিএম

বিখ্যাত চিকিৎসক ইবনে সিনা তাঁর বিশ্বখ্যত (গবফরপধষ ঃবংঃ নড়ড়শ “ঞযব পধহড়হ ড়ভ গবফরপরহব” এ রোগের প্রতিষেধক হিসাবে মধু ব্যবহারের সুপারিশ করেছেন। তিনি মধুর উপকারিতা সম্পর্কে বলেছেন, মধু মানুষকে সুখী করে, পরিপাকে সহায়তা করে, ঠান্ডার উপশম করে, ক্ষুধা বাড়ায়, স্মৃতিশক্তি বৃৃদ্ধি ও তীক্ষ্ম করে, জিহ্বা পরিষ্কার ও যৌবন রক্ষা করে।

ঁ দুই চামচ দারুচিনি গুড়া, এক চামচ মধু, এক গ্লাস হাল্কা গরম পানি মিশিয়ে সেবন করলে মূত্রথলির জীবাণু ধ্বংস হয়। ঁ দাঁতে ব্যথা হলে এক চামচ দারুচিনি গুড়ো, পাঁচ চামচ মধু একসঙ্গে মিশিয়ে ব্যথা যুক্ত দাঁতের গোড়ায় ব্যবহার করলে উপশম হয়। ব্যথা না সারা পর্যন্ত দিনে তিনবার করে ব্যবহার করতে হবে। ঁ ক্লোরেষ্টেরলের রোগীকে দুই চা চামচ মধু ও তিন চা চামচ দারুচিনি গুঁড়া ১৬ আউন্স পানি মিশিয়ে সেবন করালে দুই ঘন্টার মধ্যে কোলেষ্টেরলের পরিমাণ ১০ শতাংশ কমিয়ে আনা যায়। দিনে দু’বার সেবন করলে যে কোনও ধরনের ক্লোরেষ্টেরল জনিত রোগ উপশম হয়। ঁ যারা সাধারণ বা তীব্র ঠান্ডায় ভোগেন তাদের এক টেবিল চামচ হাল্কা গরম মধু ও দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে দিনে একবার করে তিন দিন সেবন করতে হবে। এ প্রক্রিয়ায় ঠান্ডা, পুরনো কাশি উপশম হয় ও সাইনাস পরিস্কার করে। ঁ পাকস্থলীর ব্যথা ও গ্যাষ্ট্রিকজনিত ব্যথা উপশমে দারুচিনি পাউডারের সঙ্গে মধু মিশিয়ে সেবন করলে পাকস্থলীর মূল থেকে আলসার ভালো করে। ঁ প্রতিদিন মধু ও দারুচিনি গুঁড়ো সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় ও ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। ঁ দুই টেবিল চামচ মধুর ওপর সামান্য দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে খাবারের আগে সেবন করলে এসিডিটি কমে যায় ও ভারী খাবার হজম হয়। ঁ মধু ইনফ্লুয়েঞ্জার জীবাণু ধ্বংস করে। ঁ মধু ও দারুচিনি গুঁড়ো সমপরিমাণে মিশিয়ে একজিমা, দাঁদ ও অন্য সব ধরনের ত্বকের ইনফেকশনে আক্রান্ত স্থানে লাগাতে হবে। দিনে দু’বার সাত দিন থেকে শুরু করে প্রয়োজনে এক মাস ব্যবহার করতে হবে। সকালে খাবারের আধ ঘন্টা আগে খালিপেটে ও রাতে শোবার আগে মধু ও দারুচিনি গুঁড়ো এক কাপ গরম পানি মিশিয়ে পান করতে হবে। নিয়মিত পান করলে স্থুলকায় শরীরের ওজনও কমতে থাকে। এ মিশ্রণ নিয়মিত পানে উচ্চমানের খাবার খেলেও শরীরে চর্বি জমতে পারে না। ঁ সম্প্রতি জাপান ও অষ্ট্রেলিয়ায় পাকস্থলী ও হাড়ের ক্যান্সার সফলতার সঙ্গে সারছে। যেসব রোগী এ ধরনের ক্যান্সারে ভোগেন তাদের ক্ষেত্রে এক টেবিল চামচ মধু ও এক চা চামচ দারুচিনি গুঁড়ো একসঙ্গে মিশিয়ে দিনে তিনবার এক মাস সেবন করলে আরোগ্য লাভ সম্ভব। ডাঃ মিল্টন যিনি এ গবেষণা করেছেন তিনি বলেন, এক গ্লাস পানি অর্ধেক টেবিল চামচ মধু ও কিছু দারুচিনি গুঁড়ো মিশিয়ে সকালে দাঁত ব্রাশ করার পর ও বিকেলে পান করলে সাত দিনের মধ্যে শরীর সতেজ হয়ে ক্লান্তি দূর হয়। ঁ যে সব রোগী কানে কম শোনে তাদের ক্ষেত্রে সমপরিমাণ মধু ও দারুচিনি গুঁড়া মিশিয়ে সকালে ও রাতে পান করলে শ্রবণশক্তি বৃদ্ধি পায়। ঁ খাঁটি মধু পোড়ার উপর আলতোভাবে নিয়মিত লাগালে পোড়ার জ্বালা বন্ধ করে, ব্যথা দূর করে ও দ্রুত উপশম হয়। ঁ এক গ্লাস দুধের সঙ্গে এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে পান করলে ভালো ঘুম হয়। ঘুমের পর শরীর সতেজ হয়, কর্মোদ্যম ফিরে পাওয়া যয়। ঁ শিশুদের ঘুমানোর আগে এক চা চামচ মধু খাওয়ালে বিছানায় প্র¯্রাব করা বন্ধ হয়। ঁ ক্ষতস্থানে মধুর প্রলেপ দিয়ে বেঁধে দিলে ভালো উপকার পাওয়া যায় ও নিয়মিত ব্যবহার করলে কোনও এন্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয় না। ঁ প্রতিদিন এক চা চামচ মধু পান করলে ক্যালসিয়াম ব্যবহারে সহায়ক হয় ও অস্টিওপোরোসিস রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বিশেষ করে পঞ্চাশোর্ধ বয়সের লোকের জন্য এটি খুব উপকারী। ঁ হাল্কা গরম পানি এক টেবিল চামচ মধু মিশিয়ে মাইগ্রেন ব্যথার শুরুতে চুমুক দিয়ে পান করতে হবে। ২০মিনিট পর পর পান করতে হবে এতে খুব ভালো ফল পাওয়া যায়।
মোট কথা প্রকৃতির দান মধুর উপকারিতার শেষ নেই। আজকাল অনেকেই নিজ নিজ বাড়িতে মধুর চাষ করতে শুরু করেছেন। এটা ভাল লক্ষণ, কারণ বাজারে আজকাল খাটি ও ভাল মধু পাওয়া কঠিন।

সাংবাদিক ও কলামিস্ট।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মধু

৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২
১৯ জুলাই, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন