২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
আমাদের দেশে অপুষ্টি হলো একটি জাতীয় সমস্যা। আর্থিক অনটন, খাদ্য সংকট, পুষ্টি জ্ঞানের অভাব ও কুসংস্কার হলো এর মূল কারণ। মা ও শিশুরা হলো অপুষ্টির সহজ ও নির্মম শিকার। আমাদের অজ্ঞতা অথবা অসতর্কতার কারণে রান্নার সময় খাদ্যের মূল্যবান পুষ্টি উপাদানের অপচয় হয়ে থাকে। অথচ একটু যতœবান হলে আমরা খাদ্য থেকে পুষ্টি উপাদানের ফায়দা পুরোপুরি হাসিল করতে পারি। এখানে সে সম্বন্ধে কিছুটা আলোকপাত করা হলো।
* ভাতের মাড় কখনো ফেলবেন না। কারণ মাড়ের সাথে আমিষ ১৫%, শর্করা ১০%, ভিটামিন বি-৩০%, লৌহ ৫০% ও ফসফরাস ৫০% নষ্ট হয়ে থাকে। তাই পরিমাণমত পানি দিয়ে ভাত রান্না করুন।
* রান্নার সময় পাত্রের মুখ ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখুন। যাতে বাইরের বাতাস ঢুকতে না পারে। বড় মুখের পাত্রে রান্না করলে বাতাসের অক্সিজেন সবজির সংস্পর্শে বেশি আসে এবং ভিটামিন বেশি নষ্ট হয়। ছোট মুখ বিশিষ্ট গর্তযুক্ত পাত্র ভাল।
* তরকারি সেদ্ধ করে পানি ফেলে দিবেন না। এ পানি ডাল বা অন্য তরকারির সাথে ব্যবহার করা যায় বা তরকারির পাত্রেই শুকিয়ে নেয়া ভাল। অল্প পানি ব্যবহার করলে ভিটামিন-সি রক্ষা পায়।
* বেশি তাপে অল্প সময়ে রান্না করা উচিত। বেশি সেদ্ধ করলে গলে যায় এবং অধিক তাপে ভিটামিনের অপচয় বেশি হয়।
* খুব পাতলা করে সবজির খোসা ছাড়ানো উচিত। যতঠা সম্ভব খোসাসহ কাটতে হবে। কেননা খোসার নিচেই বেশির ভাগ ভিটামিন থাকে।
* শাকসবজি ক্ষেত থেকে তোলার পর রান্না করতে যত দেরি ততই পুষ্টিমান কমতে থাকে। তাই টাটকা শাকসবজি খাওয়া উচিত।
* শাকসবজি কাটার আগে ভাল করে ধুয়ে ফেলুন। কাটার পরে ধুবেন না। শাকসবজি কাটার পর কখনও পানিতে ভিজিয়ে রাখবেন না।
* শাকসবজি ছোট টুকরো না করে বড় বড় করে কাটুন। বেশি পানিতে শাক সেদ্ধ না করে সম্ভব হলে শাকের পানিতেই শাক সেদ্ধ করুন।
* শাক পরিমাণমত তেল সমেত রান্না করা উচিত। অতিরিক্ত তেল-মসলা পরিহার করতে হবে। একই তেল দিয়ে বারবার পেঁয়াজো, পুরি, পিঠা, জিলাপি ভাজার পর অবশিষ্ট তেল বিষাক্ত হয়ে যায় এবং ভিটামিন-এ আংশিক নষ্ট হয়। তাই অন্য রান্নায় ব্যবহার করা উচিত নয়। গোশত ডাল, তাড়াতাড়ি সেদ্ধ করার জন্য সোডা ব্যবহার করা ঠিক নয়। এতে ভিটামিন সি এবং বি নষ্ট হয়ে যায় এবং গোশতের সাথে বিষক্রিয়া হতে পারে।
* লোহা বা তামার সংস্পর্শে ভিটামিন-সি নষ্ট হয়ে যায়। তাই মাটি বা এলুমিনিয়ামের পাত্রে রান্না করা ভাল।
* গাজর, টম্যাটো, বিট, ক্ষীরা, শসা, পুদিনা পাতা, ধনে পাতা, লেটুস এসব রান্না না করে সালাদ বানিয়ে খেলে পুষ্টি উপাদান বেশি পাবেন।
* আলুর খোসা রান্নার পূর্বেই ছাড়িয়ে নিন। সবুজ রঙের আলু খাবেন না।
* সূর্যের আলোতে দুধ রাখবেন না, এতে ভিটামিন বি-২ নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু আগুনের তাপে নষ্ট হয় না। তাই দুধ অবশ্যই ফুটিয়ে খেতে হবে।
মনে রাখবেন, শাকসবজি কচি অবস্থায় সুস্বাদু। তাই অতিরিক্ত বাত্তি হওয়ার আগেই সংগ্রহ করতে হবে। তাই সুস্থ সবল জীবন চান-সুষম খাবার রোজই খান। সবশেষে এ সত্যটি মনে রাখুন-নিজের যতœ না নিলে নিজে-অন্যের ওপর ভরসা মিছে।
মো: লোকমান হেকিম
চিকিৎসক-কলামিস্ট, মোবা : ০১৭১৬২৭০১২০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।