২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
মানব দেহে রয়েছে অসংখ্য গ্রন্থি। এর মধ্যে মুখের ভিতর লালা নিঃসরণকারী তিন ধরনের গ্রন্থি আছে। এসব লালাগ্রন্থিকে সেলিভারি গ্লান্ড বলে এবং লালাকে সেলিভা বলা হয়। লালাগ্রন্থি লালা নিঃসরণ করে খাবার হজমে সাহায্য করে; মুখের ভিতরের তাপমাত্রা বজায় রাখে; লালা মুখের ভিতরকে ভেজা রেখে কথা বলতে সাহায্য করে। মুখকে জীবানুমুক্ত রাখে। এই লালাগ্রন্থিতে ইনফেকশন হলে এরা ঠিকমতো কাজ করতে পারে না; ফলে মুখের ভিতর জীবানুর সংক্রমণ ঘটে।
কানের নিচে ম্যান্ডিবল হাড়ের কোনে গালের দু’পাশে পেরোটিড লালাগ্রন্থির অবস্থান। পেরোটিড গ্রীক শব্দ, যার অর্থ কানের ধারে। এই গ্রন্থির প্রদাহ বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে, তবে সবচেয়ে বেশি ঘটে ভাইরাসের সংক্রমনের কারণে। পেরোটিড গ্রন্থির প্রদাহকে পেরোটাইটিস বলে। এটি যে কোন বয়সে হতে পারে। পেরামিক্সো পরিবারের অন্তর্গত মাম্পস ভাইরাসের আক্রমণের ফলে মাম্পস হয়। যদি টিকা না দেওয়া থাকে; যদি আগে কখনও মাম্পস না হয়ে থাকে তাহলে প্রায় প্রত্যেক বাচ্চাই মাম্পসে আক্রান্ত হতে পারে। এখানে উল্লেখ্য যে ৩০-৪০% ক্ষেত্রে মাম্পস এর আক্রমন অপ্রকাশিত থাকে। একবার মাম্পস আক্রান্ত হলে বা টীকা দেওয়া থাকলে সারা জীবনের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মে।
মাম্পস ভাইরাস সাধারণত শ্বাসনালী পথে আক্রমণ করে। মাম্পস এর লক্ষণ প্রকাশের ২ দিন আগে থেকে এবং প্রকাশের পর ৫ দিন পর্যন্ত মাম্পস ছড়াতে থাকে। এ জন্য মাম্পস প্রকাশের প্রথম ৫ দিন বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাতে নিষেধ করা হয়।
লক্ষণ দেখে মাম্পস রোগ কিভাবে বুঝব? মাম্পস হলে গালের দু’পাশের পেরোটিড গ্রন্থি তথা গাল ফুলে যায়, সাথে থাকে প্রচন্ড ব্যথা। তবে এক পাশেও গাল ফুলতে পারে। এসময় কান উপরে উঠে যায় সামান্য। শরীরে অনেক জ্বর থাকে। ঢোক গিলতে ব্যথা লাগে; সহজে খেতে পারে না। কথা বলতে কষ্ট হয়।
সাধারণত গ্রন্থির ফোলা কমতে এক সপ্তাহ সময় লাগে। মাম্পস সাধারণত দেখেই বুঝা যায়। মাম্পস এর চিকিৎসায় ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল বা অন্যান্য ব্যথা নাশক এবং জটিলতা জনিত ইনফেকশন প্রতিরোধের জন্য কখনও কখনও কিছু বাচ্চাকে এ্যান্টিবায়োটিক দেয়া হয়। কুসুম গরম পানিতে লবন মিশিয়ে গড়গড়া / কুলকুচি করতে বলা হয়। প্রচুর পরিমান পানি ও তরল পানের উপদেশ দেয়া হয়। এ সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে বিভিন্ন তরল খাদ্য দেয়া উচিত। নিয়মিত দাত ব্রাশ করতে হবে।
মাম্পস এর জটিলতা ঃ এর মধ্যে অন্যতম হল মস্তিস্কের প্রদাহ এবং অন্ডকোষের প্রদাহ। উল্লেখ্য যে টীকা শুরু হওয়ার আগে মস্তিস্ক প্রদাহের অর্থাৎ মেনিনজাইটিসের অন্যতম কারণ ছিল মাম্পস। বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাম্পস থেকে হতে পারে অন্ডকোষের প্রদাহ বা অরকাইটিস। সাধারণত একপাশের অন্ডকোষ বা টেসটিস আক্রান্ত হয়ে ফুলে উঠে; লাল হয়ে যায়। অন্ডকোষের প্রদাহ হলে অন্যান্য চিকিৎসার সাথে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধও যোগ করে দেওয়া হয়।
মাম্পস এর আক্রমন প্রতিরোধ করাই গুরুত্বপূর্ণ। বাচ্চাকে সময়মত এবং নিয়মমত এমএমআর টীকা দিন। তাহলে সে মাম্পস থেকে মুক্ত থাকবে। নয় মাস বয়স হলেই এই টিকা নেয়া শুরু করা যায়।
ডাঃ মোঃ আব্দুল হাফিজ (শাফী)
এএজি ওসমানি মেডিকেল কলেজ, সিলেট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।