পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
আজ থেকে শুরু হচ্ছে বাংলা ভাষাভাষীর প্রাণের মেলা অমর একুশে বইমেলা। বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, একাডেমির হীরক জয়ন্তি উদযাপন উপলক্ষে এবারে বইমেলা হবে স্মরণকালের বড় ও জাঁকজমকপূর্ণ। গতবারের চেয়ে এবারে মেলার পরিসর প্রায় তিনগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির হীরক জয়ন্তি উদযাপন করতে এবারে মেলার মূল থিম নির্ধারণ করা হয়েছে, ‘বাংলা একাডেমির হীরক জয়ন্তি’। এ উপলক্ষে একাডেমির ইতিহাস এবং বিভিন্ন গবেষণামূলক কর্ম, অমর একুশে গ্রন্থমেলা নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি ঐতিহাসিক ছয়দফার সুবর্ণ জয়ন্তি, শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতি-রাজনীতির সমকালীন প্রসঙ্গ এবং বিশিষ্ট বাঙালী মনীষার জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। মেলা উপলক্ষে ৩ ফেব্রুয়ারি থেকে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব। এতে বাংলা ও বিশ্ব কবিতা বিষয়ে আলোচনার পাশাপাশি সেøাভাকিয়া, মরক্কো, সুইডেন, তাইওয়ান, যুক্তরাজ্য, ভারত ও বাংলাদেশের কবিরা অংশগ্রহণ করবেন। এদিকে মেলা চলাকালে লেখক-প্রকাশকদের মেলার আশপাশের এলাকায় সাবধানে চলাচলের পরামর্শ দিয়েছেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক শামসুজ্জামান খান। তিনি আরো বলেছেন, গত দুই বছর বইমেলার অদূরে ও পরবর্তী সময়ে দুটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। একজন লেখক ও একজন প্রকাশক নিহত হয়েছেন। আমরা চাই না এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক। আমরা এবারে বইমেলায় নিরাপত্তার দিকটি বিশেষভাবে নজর রাখছি। তিনি মনে করেন, গত বছরের জুন মাস থেকে এসব বিষয় নিয়ে নিরাপত্তা সংস্থাসমূহ, মন্ত্রণালয়, আন্তঃমন্ত্রণালয়, ফায়ার ব্রিগেট সকলের সাথে আলাপ-আলোচনা করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। এবারও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিচ্ছিদ্র হবে। ডিএমপি কমিশনার আছাদুজ্জামান মিয়াও বলেছেন বইমেলাকে কেন্দ্র করে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তোলা হয়েছে।
একুশের বইমেলা এক ভিন্ন আমেজ সৃষ্টি করে। তা এক মিলনমেলায় পরিণত হয়। পাঠক-প্রকাশক ও দর্শনার্থীদের আগমনে এক অভূতপূর্ব দৃশ্যের অবতারণা হয়। মেলাকে কেন্দ্র করে বাংলা একাডেমি, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, রমনা পার্কসহ গোটা এলাকায় বিরাজ করে এক ভিন্ন চিত্র। সকলেরই প্রাণের মিলন ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত এই মেলা। মেলার জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাবার কারণে মেলার পরিসরও বাড়ছে। মাসব্যাপী মেলায় সমবেত হন দেশ-বিদেশের লেখক, সাহিত্যিক, শিক্ষানুরাগীরা। মত ও মনের সম্মিলন হয় মেলায়। তবে বাংলা ভাষাভাষী মানুষের সাংস্কৃতিক মিলন কেন্দ্র হলেও মাঝে মাঝে নানা অপসংস্কৃতিও এখানে ভর করছে। সে বিবেচনায় কিছুটা হলেও মেলার ঐতিহ্য ক্ষুণœ হয়। এই মেলার বণিজ্যিক গুরুত্বকেও খাটো করে দেখার কোন সুযোগ নেই। দেশের প্রকাশকদের সবচেয়ে বড় বাজার হিসেবে এ মেলা পরিগণিত হয়। মেলাকে উপলক্ষ্য করে বছরব্যাপী তাদের প্রস্তুতি থাকে। মেলায় প্রকাশিত কোন কোন বই নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে কোন না কোন বিতর্ক উঠেছে। এবার যাতে এ ধরনের অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা না ঘটে সেদিকে বিশেষ নজর দেয়া উচিত।
অমর একুশে বইমেলাকে কেন্দ্র করে প্রাণের সঞ্চার হবে এটাই স্বাভাবিক। মেলাকে কেন্দ্র করে যাতে কোন অপসংস্কৃতি আঘাত হানতে না পারে তা দেখার দায়িত্ব সবার। কেবল পুলিশের নজরদারি বা কর্তৃপক্ষের সতর্কতা এধরনের মেলার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যথেষ্ট নয়। এ জন্য সকলেরই সতর্ক থাকতে হবে এবং সহযোগিতা করতে হবে। প্রাণের মেলা প্রাণের উচ্ছ্বাসে ভরে উঠুক, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।