পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : উদ্বোধনের আগেই স্টলের নির্মাণকাজ শেষ করার জন্য কড়া নির্দেশ দিয়েছিল একাডেমি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বাস্তবে মেলার দ্বিতীয় দিনেও দেখা গেল হাতুড়ি-পেরেকের ঠোকাঠুকি চলছেই। তবে প্রথম দিন থেকেই যে কোন বছরের থেকে গ্রন্থমেলা সাজানো-গোছানো বলে দাবি করেছেন প্রকাশকরা।
গতকাল দেখা গেছে, বাংলা একাডেমি চত্বরের তথ্যকেন্দ্রের পাশে দুইটি স্টলের অর্ধেক নির্মাণকাজ এখনো শেষ হয়নি। এই দুইটি মধ্যে একটির নাম চর্চা প্রকাশনী অপরটির নাম জানা যায়নি। এছাড়া সাংবাদিকদের জন্য মিডিয়া সেন্টারটির কাজও চলছে। ওই দুইটি স্টলের কাজ চলাকালীন সময় মেলার সদস্য সচিব ড. জালাল উদ্দিন তথ্যকেন্দ্র উপস্থিত ছিলেন। এই বিষয়ে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে প্রথমে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পরে আবারও জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা এখনো কাজ করছে আজকে মধ্যে কাজ শেষ না করতে পারলে সেই সব স্টলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ইভেন্ট টার্চ, সাকী পাবলিশিং প্রেস, ইউনির্ভাসিটি প্রেস লিমিটেড ছাড়াও কয়েকটি স্টলের নিমার্ণ কাজ করেত দেখা গেছে।
একাডেমি চত্বরে স্টলে বই সাজানো-গোছানোর দেখা যায়। কিন্তু সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেশ কিছু স্টলেই চলছিল সাজানো-গোছানোর পালা। এখনো সাজিয়ে উঠতে পারেনি তারা। আবার কয়েকটি স্টলে কোন মানুষ বা বই নেই, রয়েছে শুধু সাজানো স্টল। এই সব স্টলের মধ্যে অঙ্কুর প্রকাশনা, শিশুঘর প্রকাশনা সহ বেশ কয়েকটি রয়েছে। গতকাল সন্ধ্যায় এসব প্রকাশনার স্টলের কাজ চলতে দেখা যায়।
অন্যবারের তুলনায় এবারের মেলা অনেকখানিই ভিন্ন। খোলামেলা, ছিমছাম পরিবেশ। পরিবেশ ঘিঞ্জি নয়, ফলে আগত ব্যক্তিরা বেশ স্বাচ্ছন্দ্যেই ঘুরে বেড়াচ্ছেন মেলার দুই প্রাঙ্গণ বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। তবে শুধু ঘুরেই বেড়াচ্ছেন, বইয়ের বেচা-কেনা এখনো সেভাবে শুরু হয়নি বলে জানালেন প্রকাশকেরা।
এ বছর মেলায় এসেছে ডা. আনিস আহমেদের উপন্যাস ‹ ভালোবাসা ফিরে ফিরে আসে। পাওয়া যাচ্ছে গ্রন্থমেলায় মুক্তচিন্তা প্রকাশনার ২২৯ -২৩০ স্টলে । লেখকের এটি দ্বিতীয় উপন্যাস।
গতকাল বিকালে অমর একুশে বইমেলায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির স্টল উদ্বোধনে করেন তথ্য মন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। এই সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন, আমি টেলিভিশন, রেডিওসহ গণমাধ্যমগুলোকে বলবো- আপনারা অনুষ্ঠানে বিকৃত উচ্চারণ করবেন না। সঠিক উচ্চারণে বাংলা ভাষা ব্যবহার করুন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি জামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউটের (পিআইবি) মহাপরিচালক শাহ আলমগীর, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর মহাসচিব ওমর ফারুক, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ জামাল প্রমুখ।
মূল মঞ্চের অনুষ্ঠান: বিকাল চারটায় গ্রন্থমেলার মূল মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : বাংলা একাডেমিকে ফিরে দেখা শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন শফিউল ইসলাম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ফজলে রাব্বি, আজিজুর রহমান আজিজ, বেগম আকতার কামাল এবং মোহিত কামাল। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর মোহাম্মদ আবদুল কাইউম।
প্রাবন্ধিক বলেন, হীরকজয়ন্তীতে পৌঁছে বাংলা একাডেমি নিশ্চিতভাবেই বলতে পারে এ প্রতিষ্ঠান আজ বাঙালি জাতির হৃৎস্পন্দনে রূপ নিয়েছে। মহান ভাষা আন্দোলনের স্মারক এই প্রতিষ্ঠান বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের গবেষণা দিয়ে যাত্রা শুরু করে আজ জ্ঞানকান্ডের নানা বিষয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি বইয়ের প্রকাশক-সংস্থার নাম। আমাদের পাঠকদের মাঝে অভিধান-মনষ্কতা তৈরি বাংলা একাডেমির এক অবিস্মরণীয় কাজ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, গোটা বাংলা অঞ্চলের বুদ্ধিবৃত্তিক ও সাংস্কৃতিক জগতের ইতিহাস লিখতে গেলেও বাংলা একাডেমির প্রসঙ্গ আসবে। বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চার এই মহৎ প্রতিষ্ঠানে এদেশের সেরা লেখকবৃন্দ যে পারিবারিক আবহে কাজ করেছেন, আড্ডা দিয়েছেন আজ তা আমাদের জাতীয় সাহিত্য-সংস্কৃতির ইতিহাসের অংশ।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ আবদুল কাইউম বলেন, বাংলা একাডেমি প্রতিষ্ঠাকালীন সীমতি পরিধি ছাপিয়ে আজ এক বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে রূপ নিয়েছে। একাডেমি শুরুতে গবেষণামূলক কার্যক্রমের উপর জোর দিলেও একই সঙ্গে সমকালীন নাট্যচর্চা এবং সাংস্কৃতিক আন্দোলনেও যুক্ত হয়েছে।
আজ আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব: অমর একুশে এবং বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী উদ্যাপন উপলক্ষে আজ বাংলা একাডেমিতে স্লোভাকিয়া, মরক্কো, সুইডেন, চীন, তাইওয়ান, যুক্তরাজ্য, ভারত ও বাংলাদেশের কবিদের অংশ গ্রহণে অনুষ্ঠিত হবে দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব।
সকাল ১০টায় উৎসবের প্রথম অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে। এতে বাংলা ও বিশ্বকবিতা বিষয়ে প্রবন্ধ পাঠ করবেন ব্রিটিশ কবি ও জীবনানন্দ গবেষক জো উইন্টার এবং বাংলাদেশের কবি মুহম্মদ নূরুল হুদা। কবিতাপাঠে অংশ নেবেন ব্যাংক্ট বার্গ, মিলান রিচার্ড, ড. বেনাইছা বহুমালা, জাকারিয়া বহুমালা, ড. লি ফো আর, লি রো ইয়াং, ড. ফাং ইয়াও চিয়েন, তাই চি চৌ, চেন সিউ জেন, কবি আসাদ চৌধুরী, রুবী রহমান, নির্মলেন্দু গুণ, মহাদেব সাহা, রবিউল হুসাইন, কাজী রোজী, আনোয়ারা সৈয়দ হক, আমিনুর রহমান। সভাপতিত্ব করবেন সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক। সঞ্চালনা করবেন কবি আসাদ চৌধুরী ও কায়সার হক।
বিকাল ৪ টায় মেলার মূল মঞ্চে কবিতা উৎসবের দ্বিতীয় অধিবেশনে কবিতা পাঠে অংশ নেবেন কবি আলতাফ হোসেন, মুহম্মদ নূরুল হুদা, হেলাল হাফিজ, শিহাব সরকার, কামাল চৌধুরী, অসীম সাহা, নাসির আহমেদ, সানাউল হক খান, জাহিদুল হক, আসলাম সানী, রেজাউদ্দিন স্টালিন, তারিক সুজাত, আমিনুর রহমান সুলতান, শামীম রেজা, সরকার আমিন, ওবায়েদ আকাশ, টোকন ঠাকুর, আলফ্রেড খোকন, পিয়াস মজিদ। সভাপতিত্ব করবেন হাবীবুল্লাহ সিরাজী। এ অধিবেশন সঞ্চালনা করবেন কবি মুহাম্মদ সামাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।