পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : অমর একুশে বইমেলায় গতকাল শিশুপ্রহরে জমে ওঠে মেলা প্রাঙ্গণ। বাংলা একাডেমি চত্বর ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শিশু-কিশোরসহ সব বয়সের পাঠকদের পদচারণা লক্ষ করা যায়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত অমর একুশে বইমেলা শিশুদের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। সকাল থেকেই অভিভাবকের হাত ধরে মেলায় আসতে শুরু করে শিশুরা। শিশুদের কলতানে আনন্দমুখর হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ।
আয়োজকরা জানান, শিশুদের মানসিক বিকাশ ও সবকিছুতে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে বাঙালির প্রাণের মেলা ‘অমর একুশে বইমেলা’য় রয়েছে ‘শিশু প্রহর’। এখানে শিশুদের বিনোদনেরও ব্যবস্থা রয়েছে। শিশুরা তাদের প্রিয় কার্টুন চরিত্রের সঙ্গে দুষ্টুমিতে মেতে উঠতে পারবে।
মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা গেছে, শিশু প্রহরে স্কুলের ইউনিফর্ম পড়া শিশুরা শিক্ষক কিংবা পরিবারের সদস্যের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে। খুঁজে নিচ্ছে তাদের পছন্দের বই। কিনছে কার্টুন। অপরদিকে বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মেলার বিভিন্ন স্টল ঘুরে দেখছেন। কিনে নিচ্ছেন পছন্দের বই। নারীরা রান্না, ফ্যাশন ও লাইফস্টাইলের বইয়ের দিকে বেশি আগ্রহী বলে জানা গেছে। এছাড়া লিটলম্যাগ চত্বরেও আশানুরূপ ভিড় লক্ষ করা গেছে।
লিটলম্যাগ স্টল সূত্রে জানা যায়, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার লিটলম্যাগের দিকে পাঠকের আগ্রহ বেড়েছে। তারা আশা করেন এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
মালিবাগ থেকে আসা শিক্ষার্থী আফরোজ বলে, একটু সকাল সকাল আসছি। পরে তো ভিড় বেড়ে যাবে। সময় পেলে আবার আসবো। এখনো বই কিনিনি। আগে একটু দেখি। পরে কিনবো।
এছাড়াও অমর একুশে উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয় শিশুকিশোর সাধারণ জ্ঞান ও উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতার প্রাথমিক বাছাই পর্ব। প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খায়রুল আলম সবুজ, প্রফেসর মোহাম্মদ সেলিম এবং অপরেশ কুমার ব্যানার্জী। শিশুকিশোর সাধারণ জ্ঞান প্রতিযোগিতায় ১৪৯ জন এবং উপস্থিত বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় ৬০ জন প্রতিযোগী অংশগ্রহণ করেন।
এদিকে অন্বেষা প্রকাশন থেকে বেরিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী কবি মাহবুবুল হক শাকিলের তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ ‘মন খারাপের গাড়ি’। মেলার ষষ্ঠ দিন শনিবার বিকেলে বাংলা একাডেমির কবি শামসুর রাহমান সেমিনার কক্ষে বইটির মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে ছিলেন ইমেরিটাস প্রফেসর আনিসুজ্জামান, প্রফেসর শামসুজ্জামান খান, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রফেসর ফকরুল আলম, কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও কথাসাহিত্যিক আনিসুল হক।
মূলমঞ্চের অনুষ্ঠান : বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : ফোকলোর কর্মসূচি, অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. ফিরোজ মাহমুদ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ভারতের কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের প্রফেসর অসীমানন্দ গঙ্গোপাধ্যায়, শাহিদা খাতুন, নন্দলাল শর্মা এবং সাইফুদ্দীন চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন প্রফেসর শামসুজ্জামান খান।
প্রাবন্ধিক বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বাংলা একাডেমি ফোকলোর কর্মসূচিকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে আসছে। দেশ-বিদেশের ফোকলোর পন্ডিতবৃন্দ একাডেমির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ফোকলোর প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন। একাডেমি ফোকলোরের সনাতনি সংজ্ঞা পরিবর্তন করে আধুনিক রীতিপদ্ধতিতে ফোকলোরকে উপস্থাপন করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ফোকলোর সামার স্কুল,
আন্তর্জাতিক ফোকলোর সম্মেলন এবং চৌষাট্টি জেলার লোকজ সংস্কৃতির বিকাশ কর্মসূচির আওতায় গ্রন্থ প্রকাশ একাডেমির দীর্ঘমেয়াদি ফোকলোর-পরিকল্পনারই প্রকাশ।
আলোচকবৃন্দ বলেন, বাংলা একাডেমি ফোকলোর কর্মসূচিতে নিবিড় গবেষণা এবং অব্যাহত ফিল্ডওয়ার্কÑ উভয়কে সমান গুরুত্ব দিয়ে আসছে। বিগত ষাট বছরে একাডেমি দেশে ও বিদেশে একটি প্রশিক্ষিত ফোকলোর প্রজন্ম তৈরি করেছে। এ প্রতিষ্ঠান থেকে ফোকলোর বিষয়ে এখন পর্যন্ত প্রায় সাতশ মানসম্পন্ন বই ও সংকলন প্রকাশিত হয়েছে, যা বাংলা অঞ্চলে ফোকলোর চর্চার ক্ষেত্রে উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। তাঁরা বলেন, পরিবর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এখন প্রয়োজন বাংলা একাডেমির আওতায় একটি স্বতন্ত্র ফোকলোর ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করা।
আজকের অনুষ্ঠান : আজ বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বাংলা একাডেমির হীরকজয়ন্তী : অনুবাদ কার্যক্রম, অতীত থেকে বর্তমান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন বিশিষ্ট অনুবাদক প্রফেসর আবদুস সেলিম। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন ড. নিয়াজ জামান, প্রফেসর কাজল বন্দ্যোপাধ্যায়, ড. ফকরুল আলম এবং আবদুল্লাহ আল মামুন। সভাপতিত্ব করবেন প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।