যেভাবে মাছ ভাজলে ভেঙে যাবে না
বাঙালির প্রতিদিনের খাবারে মাছ তো থাকেই। এটি সব খাবারের মধ্যে পুষ্টির অন্যতম উৎস। তাড়াহুড়ো করে
রাগ বা ক্রোধ শাশ্বত, স্বাভাবিক এবং কোনো কোনো সময় প্রয়োজনীয় আবেগ। এটা কোনো মানুষকে অবিচার রোধে সাহায্য করে বা নিরপরাধ ব্যক্তিকে সুরক্ষা দেয়। ক্রোধ রাজনৈতিক অভিযানকে উসকে দেয় এবং সমাজে পরিবর্তন আনতে সহায়ক হয়। ক্রোধ দুর্ভোগও আনে। যেমন-আপনার কোনো সহকর্মী বা পরিবারের কোনো সদস্য অকারণে রেগে গেল। তখন অশান্তির আগুন জ্বলে। গবেষকদের মতে, যেসব মানুষ রাগ চেপে রাখতে বাধ্য হয়, তাদের পরিণামে স্ট্রোক ও হৃদরোগের ঝুঁকি থাকে। শুধু তাই নয়, সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যহানি ঘটে। বেশির ভাগ গবেষকদের মতে, রাগ হয় এনজাইনা থেকে। বুকের ব্যথা হয় করোনারি ধমনির প্রতিবন্ধকতা থেকে। মানুষ যখন রেগে যায়, তখন তার মুখম-ল রক্তিম হয়ে ওঠে, রক্তচাপ বেড়ে যায়, রক্তে স্ট্রেস হরমোন বৃদ্ধি পায়। যদিও এসব সাধারণ প্রতিক্রিয়া, তবুও এমন যদি বেশির ভাগ সময় থাকে তাহলে এর প্রভাব স্বাস্থ্যের ওপর পড়বেই।
ঋৎধসরহমযধস ঐবধৎঃ ঝঃঁফু বলছে, যেসব মানুষ প্রতিহিংসা ও আক্রমণাত্মক ব্যক্তিত্বের, যারা বারবার রেগে যায়, তারা করোনারি আর্টারি রোগের ঝুঁকিতে আছে। তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি রয়েছে। ইউরোপিয়ান হার্ট জার্নাল বলছে, এমনকি একবার প্রবল রাগ হার্ট অ্যাটাক করতে পারে। এ ছাড়া অপর ৯টি পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে ক্রুদ্ধ রোগীরা স্ট্রোক অথবা হার্ট অ্যাটাকের শিকার হয়েছে। তবে এটাও নিশ্চিত নয় যে, আপনি রেগে গেলেই স্ট্রোক করবে বা হার্ট অ্যাটাক হবে। কারো মাসে একবার, কারো মাসে পাঁচবার রাগ উঠলে স্ট্রোক করতে পারে বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। যার দিনে একাধিকবার রাগ ওঠে, তার স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এ ছাড়া ধূমপান, উচ্চ রক্তচাপ, স্থুলতা এবং উচ্চমাত্রার কোলেস্টেরল হার্ট অ্যাটকের কারণ হতে পারে। তবে এসব সমস্যার সাথে রাগ যুক্ত হলে মহাবিপদ ঘটতে পারে। আপনার যদি হৃদরোগ থাকে এবং সেজন্য আপনি উদ্বিগ্ন হন, তাহলে রাগ সংবরণ করুন। কারণ, রাগ হলে রক্তচাপ বাড়ে, ধূমপান বৃদ্ধি পায়। এসব থেকে রক্ষা পেতে আপনার দৈহিক ওজন নিয়ন্ত্রণ করুন। কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখুন। ধূমপান বর্জন করুন। এমক কোনো প্রমাণ পাওয়া যায় না যে, ক্রোধ প্রশমিত হলে হার্ট অ্যাটাক করবে না। তবে সাহায্য করে।
ক্রোধ নিয়ন্ত্রণের জন্য কিছু পরামর্শ : রাগ মানুষের স্বাভাবিক আবেগ। এ থেকে কেউ সম্পূর্ণ মুক্ত হতে পারে না। তবে বহুলাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। যেমন- * আপনার বাসায় হাতের কাছে কিছু জার্নাল, সাপ্তাহিক বা মাসিক পত্রিকা রাখুন। সময় পেলেই সেগুলো পড়–ন। আপনার আবেগ নিয়ন্ত্রণে থাকবে। মাঝে মাঝে আপনি আপনার রাগের বিষয়ে চিন্তা করুন, সেটা কি যুক্তিসঙ্গত নাকি আবেগতাড়িত। ভেবে দেখুন, কী কী কারণে আপনি রেগে যান। তখন আপনার শরীরের অবস্থা কেমন হয়। মনের অবস্থা কেমন হয়। অপর কোনো ব্যক্তি আপনার প্রতি রেগে গেলে আপনি কেমন বোধ করেন? এসব চিন্তা আপনার রাগকে প্রশমিত করতে পারে। * মেনে নিন আপনার সিদ্ধান্ত সব সময় সঠিক নয়।* উপলদ্ধি করুন যে সমগ্র পৃথিবী আপনার নিয়ন্ত্রণে নয়। * অন্যকে দোষারোপ করার আগে নিজে নির্দোষ কি না ভেবে দেখুন। * কোনো ব্যক্তি আপনাকে নিরাশ করলে তা অন্যের কাছে প্রকাশ করুন। মন হালকা হবে। রাগ কমে যাবে। *অন্যকে ক্ষমা করার চেষ্টা করুন। অতীতের কথা ভেবে রাগ বাড়াবেন না। *রাগ উঠে গেলে ১০০ থেকে উল্টো দিকে গণনা করতে থাকুন। ধীরে ধীরে রাগ কমে যাবে। *যে চিন্তা আপনাকে রাগান্বিত করে, সে চিন্তা বর্জন করে অন্য কোনো চিন্তা করুন। হাতের কনুই পর্যন্ত ও মুখম-ল ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।* রাগ উঠলে কোনো ব্যায়াম করুন অথবা কোনো শারীরিক পরিশ্রম করুন। *বাইরে প্রকৃতির মধ্যে বেরিয়ে পড়–ন। পাখির গান শুনুন। ফুল, ফল, প্রজাপতি বা কোনো পশু দেখুন। *বিশ্রাম নিন। ইসলামী সংঙ্গীত, ইসলামি গান শুনুন। বাজার বা কোনো জনবহুল জায়গায় যান। শিশুদের খেলাধুলা দেখুন। * অন্য লোকের সাথে কথাবার্তা মতবিনিময় করুন। * মদ বা মাদক বাদে অন্য যেকোনো হালকা পানীয় পান করুন। ঘুমানোর চেষ্টা করুন। * আপনার চিন্তা পরিবর্তন করুন। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ত্যাগ করুন। বাস্তব চিন্তা করুন। * কোরআন হাদিস অর্থ সহ বুঝে পড়–ন, নিয়মিত নামায কায়েম করুন। * সব চেষ্টা ব্যর্থ হলে কোনো মনোচিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
চিকিৎসক-কলামিষ্ট , ০১৭১৬২৭০১২০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।