Inqilab Logo

শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

৩৪ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিলের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০১৯, ৯:১৬ পিএম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান ৩৪ জন নেতাকে অবৈধভাবে ভর্তি করায় তাদের ভর্তি বাতিলের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। বাণিজ্য অনুষদের ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনস্যুরেন্স বিভাগের অধীনে পরিচালিত “মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামে” বিনা ভর্তি পরীক্ষায় বিধি বহির্ভূতভাবে ভর্তিকৃত শিক্ষার্থীদের ছাত্রত্ব বাতিল এবং এ প্রক্রিয়ায় জড়িত সংশ্লিষ্টদের শাস্তির দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ে বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দল। এ দাবিতে এরআগে ঢাবি ভিসিকে স্মারকলিপি দিয়ে কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় এবার সাধারণ শিক্ষকদের কাছে লিফলেট বিতরণ করছে সাদা দল। সংগঠনের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম বলেন, অবৈধভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো মারাত্মক জঘন্য কাজ। আমরা ভিসির কাছে অবৈধ ভর্তি বাতিল এবং এ ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় সাধারণ শিক্ষকদের কাছে লিফলেট বিতরণ করছি।

লিফলেটে বলা হয়- ঢাবি গোটা জাতির গৌরব ও অহঙ্কারের প্রতিষ্ঠান। শুধু একাডেমিক ও গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনায়ই নয়, বাংলাদেশ নামক জাতিরাষ্ট্রের অভ্যূদয়সহ এদেশের সকল ইতিবাচক অর্জনে ঢাবির ঐতিহাসিক ভূমিকা সর্বজনবিদিত। কিন্তু আমাদের এ গর্বের প্রতিষ্ঠানটি আজ নানা কারণে সমালোচিত এবং জাতির কাছে এর অবস্থান প্রশ্নবিদ্ধ। ঢাবিতে ভর্তি হতে পারা এদেশের প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে পরম কাক্সিক্ষত বিষয়। এ কারণেই ঢাবির ভর্তি প্রক্রিয়া তীব্র প্রতিযোগিতামূলক। দুঃখজনক হলেও সত্য- নজিরবিহীন ও অভূতপূর্ব এ ঘটনায় আমরা দারুণভাবে মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ। ঘটনাটি জানার পরপরই একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আমাদের ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশের সাথে সাথে অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তিকৃতদের ভর্তি বাতিল ও এর সাথে সংশ্লিষ্টদের শাস্তি দাবি করি। এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ দেশের বিভিন্ন মহল থেকেও প্রতিবাদ এবং কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানানো হয়। আমরা আশা করেছিলাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি আমলে নিয়ে এর সমাধানে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। এমনকি এসব বিষয়ে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদমুখর হলে তাদের উপর ক্ষমতাসীন ছাত্র সংগঠনের দমন-নিপীড়নের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনাও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এ অবস্থায় একই দাবিতে আমরা গত ১৯ সেপ্টেম্বর ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে একটি মানববন্ধন করি এবং একটি স্মারকলিপি ভিসির কাছে উপস্থাপন করি।

লিফলেটে বলা হয়- ভিসি বিষয়টির গুরুত্ব উপলব্ধি করে ঢাবির প্রতি জনআস্থা পুনরুদ্ধারে এতদবিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে জানাচ্ছি যে, ভিসি আমাদের সাথে আলোচনায় ৩৪ জন শিক্ষার্থীর ভর্তি কার্যক্রমের সপক্ষে তার অবস্থান ব্যক্ত করেছেন। ৩৪ জন শিক্ষার্থীর ভর্তির যৌক্তিকতা তুলে ধরতে গিয়ে একটি সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বাণিজ্য অনুষদের ডিন ও মাস্টার্স অব ট্যাক্স ম্যানেজমেন্ট প্রোগ্রামের তদানিন্তন প্রোগ্রাম ডিরেক্টর অসত্য তথ্য দিয়ে সকলকে বিভ্রান্ত করার যে অপচেষ্টা করেছেন ভিসিও প্রকারান্তরে সেটাই করেছেন। এতে ৩৪ জন শিক্ষার্থীর অবৈধ প্রক্রিয়ায় ভর্তির সাথে ডিন ও ভিসির সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কে বিভিন্ন মহল থেকে যে অভিযোগ উঠেছে, তা সত্য বলে প্রতীয়মান হয়। ঘটনার অনেকদিন পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ব্যাপারটি ডিনস্ কমিটি বা সিন্ডিকেট কোথাও উপস্থাপন করা হয়নি, এমনকি ঘটনা তদন্তের জন্য কোনো কমিটিও গঠন করা হয়নি। সচেতন শিক্ষক হিসেবে আমরা এ অন্যায়ের প্রতিবাদ ও প্রতিকার দাবি করাকে নৈতিক কর্তব্য বলে মনে করি। উল্লেখ্য যে, এ ব্যাপারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নিশ্চুপ অবস্থানে আমরা বিস্মিত ও হতাশ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঢাবি


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ