গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
বিহারিদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কয়েকদফা টিয়ারশেল নিক্ষেপের পর ক্যাম্পের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। জেনেভা ক্যাম্পে এখন থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। রাস্তায় বিহারিরা না থাকলেও এলাকার সব দোকান বন্ধ আছে। জেনেভা ক্যাম্পের রাস্তার পাশে র্যাব ও পুলিশ সদস্যরা অবস্থান করছেন।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্পে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের দায়ে ক্যাম্পের ভেতর থেকে ৭ বিহারি যুবককে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার বিহারি ক্যাম্পের সামনে থেকে গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) আনিসুর রহমান।
আনিসুর রহমান বলেন, সাত দফা পুলিশের ওপর হামলা, পুলিশের গাড়ি ভাঙচুরের দায়ে ক্যাম্পের ভেতরে তল্লাশি করে ৭ বিহারি যুবককে আটক করা হয়েছে।
তিনি বলেন, দুপুর ১ থেকে দেড়টা পর্যন্ত এখানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এই সংঘর্ষে তারাও পুলিশের উপর ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে পুলিশের ১৫ থেকে ২০ জন আহত হয়েছে। তাদের সবার পায়ে ইটের আঘাত রয়েছে।
ক্যাম্পের প্রায় ৩১ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিল বাকি রয়েছে। তারা বিদ্যুত বিল দিবে না বলে রাস্তায় আন্দোলন চালায়। এতে স্থানীয় কাউন্সিল হাবিবুর রহমান মিজান তাদের বোঝানোর জন্য আসলে তাকে মারধর করে বিহারিরা। পুলিশ তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করেছে।
আনিসুর রহমান বলেন, আমরা এখন অভিযান পরিচালনা করছি। যারা এই হামলা চালিয়েছে তাদের আইনের আওতায় এনে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে ক্যাম্পবাসীরা বলছেন, তাদের অর্ধশত বাসিন্দা আহত হয়েছেন। এছাড়া সংঘর্ষে মোহাম্মদ রকি (২৩) নামের আহত একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। ওই যুবকের চোখে রাবার বুলেট লেগেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
চোখে আঘাদপ্রাপ্ত রকি বিহারি ক্যাম্পের ভেতরে একটি গ্যারেজে মেকানিকের কাজ করেন। তার বোন জুলি আক্তার জানান, সংঘর্ষের সময় একটি মোটরসাইকেল নিয়ে ওই পথে যাচ্ছিলেন রকি। হঠাৎ দুই পক্ষের সংঘর্ষের মাঝখানে পড়ে রাবার বুলেট তার চোখে আঘাত করে।
আটকে পড়া পাকিস্তানিদের অভিযোগ, প্রতিদিন ৮-১০ ঘণ্টা করে তাদের বিদ্যুৎহীন অবস্থায় থাকতে হয়। এই ক্ষোভে গতকাল থেকে তারা আন্দোলন শুরু করে। শুক্রবার বেশ কিছু সময় ধরে আন্দোলন চলে।
উর্দুভাষী যুব-ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক জুনায়েদ জুয়েল জানান, বেশ কিছুদিন ধরে জেনেভা ক্যাম্পে নিয়মিত বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে না। দিনের বেলা তো বিদ্যুৎ থাকেই না রাতের বেলায়ও বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা জেএসসি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে পারছে না। আমাদের বিদ্যুৎ সংযোগ দিতে উচ্চ আদালতের নির্দেশ থাকলেও বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ তা মানতে নারাজ।
জুনায়েদের দাবি, বিদ্যুতের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে গজনবী রোডে অবস্থান নিলে পুলিশ ক্যাম্পবাসীদের ওপর লাঠিচার্জ করে। এরপর তারাও উত্তেজিত হয়ে পুলিশের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ সময় পুলিশ রেসিডেন্সিয়াল কলেজের সামনে থেকে রাবার বুলেট ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করছে। এ ঘটনায় ৫০ জনেরও বেশি বিহারি আহত হয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।