বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
শরতের শুরুতে মরা পদ্মায় এখন ভরা যৌবন। উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে প্রতিদিন একটু একটু করে পানি বাড়ছে। চারিদিকে ঘোলা পানি। জেগে ওঠা মধ্যচরেও পানি। তবে এখনো ডোবাতে পারেনি তীরের সবুজ কাশবনকে। ভাটিতে বানের পানি বাড়ায় শ্রাবণ মাসে পদ্মায় খানিকটা পানি বেড়েছিল নগরবাসীকে শঙ্কায় ফেলেছিল। তবে বানের পানি নেমে যাওয়ায় পদ্মার পানিও নেমে যায়।
এখন আবার উজানে (ভারত) ব্যাপক বর্ষণ হওয়ায় সেই পানি গঙ্গা হয়ে পদ্মায় নামছে। ওপারের পানির চাপ কমাতে খুলে দেয়া হয়েছে ফারাক্কার গেটগুলো। নাব্যতা হারানো পদ্মায় এক সাথে ছুটে আসা পানিতে এমনিতে ফুসে উঠছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, প্রতিদিন গড়ে ৩০/৩৫ সেন্টিমিটার করে পানি বাড়ছে। গতকাল রোববার সন্ধ্যায় পানির উচ্চতা ছিল ১৬ দশমিক ৬৬ মিটার। রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। বিপদ সীমার প্রায় ২ মিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এমনটি জানান গেজরিডার এনামুল হক। নদীর পানির গতি বিধি পর্যবেক্ষণকারী কর্মকর্তার মতে উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও বিলম্বিত বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকলে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত পানি বাড়তেই থাকবেই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সৈয়দ সহিদুল আলম বলেন, পদ্মার পানি বৃদ্ধি নিয়ে এখন পর্যন্ত ভয়ের কোন কারণ নেই। রাজশাহীতে পদ্মার বিপদসীমা ১৮ দশমিক ৫০ মিটার। আর শহর রক্ষা বাঁধের উচ্চতা ১৯ দশমিক ৬৭ মিটার। এদিকে নগরীর পশ্চিমাঞ্চলে বুলনপুর থেকে পবার সোনাইকান্দি পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার বাধ সংরক্ষণ কাজ প্রায় শেষ। শহর রক্ষার মূল গ্রোয়েনও নজরদারীতে রয়েছে।
অতএব নদীতে পানি বৃদ্ধি নিয়ে আতংকিত হবার কিছু নেই। তাছাড়া এখন ভাটিতে পানির উচ্চতা কম। সহজেই পানি নেমে যাচ্ছে। তবে নদীর পানি বৃদ্ধিতে পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে শংঙ্কা রয়ে গেছে।
যদিও গেল ১৭ বছরে রাজশাহীতে পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমা ১৮.৫০ অতিক্রম করেছে মাত্র দুইবার। এরমধ্যে ২০০৪ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত টানা ৮ বছর রাজশাহীতে পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেনি। কেবল ২০০৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মার সর্বোচ্চ উচ্চতা ছিল ১৮ দশমিক ৮৫ মিটার। এরপর ২০১৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর রাজশাহীতে পদ্মা বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল। ওই বছর পদ্মার উচ্চতা দাড়িয়েছিল ১৮ দশমিক ৭০ মিটার। এরপর পানি বাড়লেও আর এই রেকর্ড ভাঙ্গেনি।
গতকাল বিকেলে পদ্মার তীর ঘুরে দেখা যায় ভরা পদ্মার রুপ দেখতে তীরজুড়ে বিভিন্ন বয়েসী হাজারো মানুষের ভীড়। দলবেধে নৌকায় ভাসছেন। নৌকাগুলো সাধারণত তীর ঘেঁষে এ প্রান্ত থেকেও প্রান্ত পর্যন্ত যাতায়াত করছে। সতর্ককতা হিসাবে বাধ্যতামূলক লাইফ জ্যাকেট ব্যবহারও বেড়েছে। নবগঠিত নৌপুলিশও সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। অনেকে আবার সাহস করে নৌকা নিয়ে মাঝ নদীতে যাচ্ছেন। বাচ্চু মাঝির নৌকায় যাত্রীরা জানালেন মাঝ নদীতে গেলে মনে হয় যেন সমুদ্রে এসেছি। চারিদিকে অথৈ পানি। এ এক অন্যরকম রোমাঞ্চ।
কেউ কেউ আক্ষেপ করে বলেন এমন অবস্থা আর কটাদিন থাকবে। তারপর পানির স্থলে ধূ ধূ বালিচর। এর মাঝে পদ্মার রুপালী ইলিশের খোঁজে ডিঙ্গী নৌকায় জাল নিয়ে নেমেছে জেলের দল। কিন্তু সেই রুপালী ইলিশের দেখা মেলেনি। কারো কারো জালে জাটকা আকারের দু’চারটা ইলিশ ধরা পড়ছে। এবার অন্য মাছের সংখ্যা কম পাওয়া যাচ্ছে বলে মাছ ধরা জেলেরা জানান। তারপর চিংড়ী বেলে ঘেড়ে পাবদা মাছ যা পাচ্ছেন তা ভাল দামে ক্রেতারা কিনছেন। নদীর এসব টাটকা মাছের স্বাদই যে আলাদা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।