Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভারতীয় রাজনীতিতে নাথুরাম গডসের প্রেতাত্মার অশুভ উত্থান

মোবায়েদুর রহমান | প্রকাশের সময় : ২০ আগস্ট, ২০১৯, ১২:০২ এএম

কাশ্মীর নিয়ে যা ঘটলো এবং ভবিষ্যতে যা ঘটবে তার চূড়ান্ত পরিণতি কি? এই বিষয়টি নিয়ে পত্র পত্রিকায় খুব লেখালেখি চলছে। সবচেয়ে বেশি লেখালেখি চলছে খোদ ভারতীয় পত্র পত্রিকায় এবং আলোচনা চলছে ভারতীয় ইলেকট্রনিক মিডিয়ায়। এছাড়া বিদেশী মিডিয়াতেও বেশ লেখালেখি চলছে। বাংলাদেশে সে তুলনায় লেখালেখি অনেক কম। চূড়ান্ত পরিণতিতে কি হতে পারে সে সম্পর্কে দুটি কথা বলার আগে ভারতের রাজনীতির একটি অধ্যায় নিয়ে খুব সংক্ষেপে দুটো কথা বলতে চাই।

ভারতে সর্ব ভারতীয় রাজনীতির ৩ জন শীর্ষ নেতা নিহত হয়েছেন। এদের মধ্যে ২ জন নিহত হয়েছেন আততায়ীর গুলিতে, আরেক জন নিহত হয়েছেন এক মহিলা আত্মঘাতী বোমাবাজের বোমার বিস্ফোরণে। ভারতের স্বাধীনতার উষা লগ্নে নিহত হন সারা ভারতের ‘বাপুজি’ বলে খ্যাত, ভারতের অঘোষিত জাতির পিতা, রঘুপতি রাঘব রাজা রাম মোহন দাস করম চাঁদ গান্ধী। ১৯৪৯ সালের ১৫ নভেম্বর দিল্লির বিড়লা হাউজে তাকে রিভলবার থেকে পর পর তিনটি গুলি ছুড়ে হত্যা করে নাথুরাম গডসে নামক এক ব্যক্তি। গুলি বিদ্ধ হওয়ার পর তাকে বিড়লা হাউজের অভ্যন্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে কিছুক্ষণ পর ঘোষণা করা হয় যে গান্ধীজি মারা গেছেন। নাথুরাম গডসের সহযোগী ছিল এ্যাপটে নামক আর এক জন আততায়ী। এর পর তাদের বিচার হয় এবং বিচারে গডসে এবং এ্যাপটের ফাঁসি হয়।

যে ব্যক্তি ভারতের সর্বজন শ্রদ্ধেয়, যাকে সারা ভারত জাতির পিতা বলে সম্বোধন করতো তেমন একজন নিঃস্বার্থ ত্যাগী ব্যক্তিকে অত্যন্ত কাছে থেকে পয়েন্ট বø্যাংক রেঞ্জে গুলি করা হলো কেন? সেই কাহিনীও এখন প্রকাশ হয়েছে। নাথুরাম গডসে ছিল কট্টর হিন্দুত্ববাদী সংগঠন আর এস এস বা রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের সক্রিয় কর্মী। আজ ভারতের শীর্ষ নেতৃত্বে যে ৩ ব্যক্তি বসে আছেন তারাও আর এস এসের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। এরা হলেন প্রধান মন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, বিজেপির প্রেসিডেন্ট এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ এবং বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি এবং বর্তমানে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী রাজনাথ সিং। মোহন দাস করম চাঁদ (এমকে) গান্ধীর ওপর নাথুরাম গডসের প্রচন্ড রাগ ছিল। তার কথা হলো, মুসলমানরা হিন্দুদেরকে ১ হাজার বছর শাসনের নামে শোষণ ও নির্যাতন করেছে। ভারত যদি অখন্ড থাকতো এবং স্বাধীন হতো তাহলে মুসলমানদের এই শাসন এবং পীড়নের প্রতিশোধ গ্রহণ করা সম্ভব হতো এবং মুসলমানদেরকেও হিন্দু হতে বাধ্য করা যেতো। সারা ভারতে হিন্দুদের রাজত্ব প্রতিষ্ঠাকেই ইদানিং রাজনীতির পরিভাষায় বলা হয় রাম রাজত্ব।

নাথুরাম গডসে যে আদর্শে বিশ^াস করতো, সেই চরম হিন্দুত্ব এবং প্রচন্ড মুসলিম বিদ্বেষের আদর্শে বিশ^াস করেন মোদী, অমিত শাহ এবং রাজনাথ সিং। এদেরকে নিয়েই গঠিত হয়েছে ইংরেজি ভাষায় ঞৎরঁসারৎধঃব বা ত্রিরতœ। কাশ্মীর নিয়ে তাদের বর্তমান উদ্দেশ্য ও লক্ষ সম্পর্কে কিছুক্ষণ পর আলোচনা করবো। তার আগে অপর দুটি হত্যাকান্ড সম্পর্কে দুটো কথা। ১৯৮৪ সালে ৩১ অক্টোবর প্রধান মন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে রিভলবারের গুলিতে প্রথমে হত্যা করে তার শিখ দেহ রক্ষী বিয়ন্ত সিং। সে তার পিস্তল থেকে পর পর ৩ টি গুলি করে। এর পর অপর দেহ রক্ষী শতবন্ত সিং তার স্টেনগান থেকে ৩১ টি গুলি ছোড়ে ইন্দিরার পেটে। উদ্দেশ্য ছিল ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুকে পুরোপুরি নিশ্চিত করা। ইন্দিরা গান্ধীকে হত্যা করে তারই ২ দেহরক্ষী। কেন এই হত্যাকান্ড? কারণ ভারতের শিখ সম্প্রদায়, যাদের বসবাস ভারতীয় পাঞ্জাবে, তারা ভারত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে খালিস্তান নামে পাঞ্জাবকে স্বাধীন করার আন্দোলন করছিল। এই আন্দোলন বেগবান হলে তার নেতৃত্ব গ্রহণ করেন সন্ত জর্নাল সিং ভিন্দ্রেনওয়ালা। এই হত্যাকান্ডের আগে সাড়ে ৭ শত অনুসারী নিয়ে ভিন্দ্রেনওয়ালা শিখদের পবিত্র উপাসনালয় স্বর্ণ মন্দিরে প্রবেশ করে এবং সেখানেই তাদের আস্তানা গাড়ে। তখন ভারতীয় সামরিক বাহিনী স্বর্ণ মন্দিরকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে এবং প্রচন্ড গোলা বর্ষণ করতে করতে স্বর্ণ মন্দিরের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে। ভিন্দ্রেনওয়ালা তার সাড়ে ৭ শত স্বাধীনতা যোদ্ধা সহ এই সেনা অভিযানে নিহত হন।

স্বর্ণ মন্দিরে এই ম্যাসাকারের পর শিখদের মনে প্রতিশোধের আগুন জ¦লতে থাকে। সেই প্রতিশোধের বহিঃপ্রকাশ ঘটে দুই শিখ দেহরক্ষী কর্র্তৃক ইন্দিরা গান্ধীর প্রকাশ্য হত্যাকান্ডের মধ্য দিয়ে। স্বর্ণ মন্দির অভিযানের পর শিখদের স্বাধীনতা আন্দোলন অর্থাৎ স্বাধীন খালিস্তান দাবি ধীরে ধীরে স্তিমিত হয়ে যায় এবং এখন প্রায় অস্তিত্বহীন বললেই চলে।

শ্রীলঙ্কার তামিল সম্প্রদায় স্বাধীনতার দাবিতে আন্দোলন করে। তাদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয় লিবারেশন টাইগার্স অফ তালিম এলাম (এলটিটিই)। এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেন ভেলু পিল্লাই প্রভাকরণ। ভারতের প্রাক্তন প্রদেশ মাদ্রাজ, বর্তমান নাম তামিল নাড়–তেও উল্লেখযোগ্য সংখ্যক তামিল রয়েছেন। তাদের প্রায় সকলেই শ্রীলঙ্কার তামিলদের স্বাধীনতা আন্দোলনের সমর্থক। তামিলদের সশস্ত্র স্বাধীনতা আন্দোলন দমন করার জন্য শ্রীলঙ্কা ভারতের সাহায্য চায় এবং ভারত সাহায্য করে। এর ফলে তামিল নাড়–র অধিবাসীদের একটি অংশ প্রধান মন্ত্রী রাজীব গান্ধীর ওপর দারুণ ভাবে রুষ্ট ছিল। ১৯৯১ সালের ২১শে মে ইন্দিরা গান্ধীর পুত্র প্রধান মন্ত্রী রাজীব গান্ধী তামিল নাড়–র চেন্নাইয়ের শ্রী পেরুমবুদুরের আত্মঘাতী বোমায় নিহত হন। শ্রী পেরুমপুদুরে রাজীব গান্ধীর নির্বাচনী জনসভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। গাড়ী থেকে নেমে রাজীব গান্ধী দলবল সহ মঞ্চের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য যারা অভ্যর্থনার সারিতে দাঁড়িয়েছিলেন তাদের মধ্যে এক মহিলা ছিল। নাম থেনমোজি রাজারথনম ধানু। ধানু প্রধান মন্ত্রীকে যখন পায়ে হাত দিয়ে সালাম করতে যায় তখন তার কোমরে বাধা বেল্টের মধ্যে লুক্কায়িত শক্তিশালী বোমার প্রচন্ড বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণে ধানু যেমন ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায় তেমনি প্রধান মন্ত্রী রাজীব গান্ধীর দেহও ছিন্ন ভিন্ন হয়ে যায়। রাজীব গান্ধীর সাথে এই আত্মঘাতী বোমার আঘাতে নিহত হন আরও ১৪ জন কংগ্রেস অনুসারী।

দুই
এই তিন হত্যাকান্ড ভারতীয় রাজনীতির একটি দিক নির্দেশ করে যে ওপর থেকে ভারতকে যতখানি ঐক্যবদ্ধ ও সংহত মনে হয় ভেতরটা ততখানি ঐক্যবদ্ধ এবং সংহত নয়। ওপরের আলোচনায় দেখা গেলো যে পাঞ্জাবে স্বাধীনতা আন্দোলন ছিল। কিন্তু ভারতের শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর হামলায় সেই আন্দোলন স্তব্ধ হয়ে গেছে। উত্তর পূর্ব ভারতের সাতটি রাজ্যে বিচ্ছিন্নতাবাদ তথা স্বাধীনতা আন্দোলন এক সময় তুঙ্গে উঠেছিল। এই সাতটি রাজ্য হলো ত্রিপুরা, নাগাল্যান্ড, মিজোরাম, মনিপুর, আসাম, মেঘালয় ও অরুণাচল। এই সাতটি প্রদেশকে বলা হয় সেভেন সিস্টারস অথবা সাত বোন। শক্তিশালী সামরিক অভিযানে তাদের স্বাধীনতা আন্দোলন স্তব্ধ হয়ে যায়। আসামের স্বাধীনতা আন্দোলনের প্রধান সংগঠন উলফার অন্যতম নেতা অনুপ চেটিয়া বেশ কয়েক বছর বাংলাদেশের কারাগারে বন্দী ছিলেন। মুক্তি পাওয়ার পর তিনি ভারতীয় বিএসএফের হাতে বন্দী হন। তিনি এবং তার অন্যান্য নেতা সামরিক শক্তির কাছে পরাজিত হয়ে এখন ভারত সরকারের সাথে শান্তির আলোচনা করছেন। তাদের প্রধান নেতা পরেশ বড়–য়া অবশ্য ভারতের সাথে আপোষ করেননি। তিনি এখনও আত্মগোপনে আছেন। কেউ কেউ বলে তিনি ভূটানের জঙ্গলে অবস্থান করছেন, আবার কেউ কেউ বলে, তিনি গণচীনে আছেন।

তিন
স্বাধীনতা কামীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং সবচেয়ে জনবহুল (লোক সংখ্যা আনুমানিক ১ কোটি) প্রদেশ হলো জম্মু ও কাশ্মীর। জম্মু ও কাশ্মীর নিয়ে অনেক কথা লেখা যায়, একাধিক কলাম লেখা যায়। কিন্তু গত ৫ই অগাস্ট সোমবার ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ এবং ৩৫(ক) বাতিলের মাধ্যমে যা করা হলো সেটিকে বাংলাদেশের প্রাক্তন কেরিয়ার ডিপ্লোম্যাট এবং রাষ্ট্রদূত সিরাজুল ইসলাম কাশ্মীরে নাথুরাম গডসের প্রেতাত্মার অশুভ উত্থান বলে বর্ণনা করেছেন। এসম্পর্কে ইংরেজি দৈনিক নিউ এজের ১১ অগাস্ট সংখ্যায় তিনি যে কলাম লিখেছেন তার শিরোনাম হলো, “অৎঃরপষব ৩৭০ অনৎড়মধঃরড়হ/অ ৎবরহপধৎহধঃরড়হ ড়ভ ঘধঃযঁৎধস এড়ফংব?” অর্থাৎ, ৩৭০ ধারা বাতিল: নাথুরাম গডসের পুনরুত্থান?

এখনকার প্রজন্ম ভুলে গেছেন যে কট্টর হিন্দুত্ববাদী আরএসএস রাজনৈতিক খোলস হিসাবে বিজেপি নাম ধারণ করে ১৯৮০ সালে ভারতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ করে। ১৯৮৪ সালে তারা প্রথম নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে এবং সেই নির্বাচনে তারা (লোকসভা) পায় মাত্র ২টি আসন। রাজনীতিতে এসে বিজেপি বৃহত্তম দল হিসাবে আত্মপ্রকাশ করে ২০১৪ সালে এবং নরেন্দ্র মোদি প্রধান মন্ত্রী হিসাবে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে মন্ত্রী সভা গঠন করেন।

২০১৪ সালে মন্ত্রী সভা গঠন করার পর বিজেপি তার খোলস ছাড়তে শুরু করে। আরএসএস এবং হিন্দু মহা সভা তাদের চেহারা দেখাতে শুরু করে। এই সময় ভারত ধীরে ধীরে সেই ধরণের ভারত প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যায় যে ধরণের ভারত চেয়েছিল নাথুরাম গডসে। উত্তর প্রদেশে যোগী আদিত্যনাথ মুখ্যমন্ত্রী হন। শুরু হয় মুসলমানদের ধর্মীয় বিশ^াস ও আচার আচরণের ওপর হামলা। মুসলমানদের গরুর গোস্ত খাওয়া, রেফ্রিজারেটরে গরুর মাংস সংরক্ষণ এবং গরু জবাইয়ের কারণে অনেক মুসলমানকে নির্মম ভাবে পেটানো হয় এবং এই অপরাধে কয়েকজন মুসলমানকে হত্যাও করা হয়।

আসলে এর সূচনা হয়েছিল ভারত বিভক্তির পর পরই । ভারত বিভক্তির সময় দেশীয় রাজ্যের সংখ্যা ছিল ৬৫৬। তাদেরকে বলা হয় যে তারা তাদের ইচ্ছা অনুসারে ভারত বা পাকিস্তান যে কোনো রাষ্ট্রে যোগদান করতে পারবে। কাশ্মীরের ৯০ শতাংশ মানুস মুসলমান। তারা পাকিস্তানে যোগদান করতে চেয়েছিলেন। তখন চানক্য বুদ্ধি খাটিয়ে ভারতের প্রধান মন্ত্রী পন্ডিত নেহরু কাশ্মীর মহারাজা হরি সিংকে কাশ্মীরের ভারত ভুক্তির দলিলে সই করতে বাধ্য করেন। ১৯৪৭-১৯৪৮ সালে কাশ্মীরের ভারত ভুক্তির প্রতিবাদে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ লাগে। তখন কাশ্মীর প্রশ্নটি জাতিসংঘে উত্থাপিত হলে জাতিসংঘ এই মর্মে রায় দেয় যে গণভোটের মাধ্যমে কাশ্মীরের ভবিষ্যত নির্ধারিত হবে। পন্ডিত নেহরুও এই প্রস্তাব মেনে নেন।

কিন্তু ভারত গণভোটের প্রস্তাব থেকে সরে আসে এবং কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেয়। এই বিশেষ মর্যাদার মধ্যে ছিল কাশ্মীরের আলাদা পতাকা, আলাদা সংসদ এবং কাশ্মীর মন্ত্রী সভার প্রধানকে বলা হবে প্রধান মন্ত্রী, মুখ্য মন্ত্রী নয়। প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্র এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা ছাড়া আর সব বিষয় কাশ্মীরের হাতে দিয়ে এই প্রদেশটি স্বায়ত্ব শাসন দেওয়া হয়। এটি ছিল জাতিসংঘের গণভোট প্রস্তাবের প্রতি বিশ^াসঘাতকতা। এই বিশ^াসঘাতকার বিরুদ্ধে কাশ্মীরের জনগণ অস্ত্র হাতে তুলে নেন। ভারত সরকার এই সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধকে সন্ত্রাস বলে আখ্যায়িত করে এবং সন্ত্রাস দমনের নামে হাজার হাজার কাশ্মীরী মুক্তিযোদ্ধা ও স্বাধীনতাকামীকে হত্যা করে। বস্তুত মহারাজা হরি সিং যখন কাশ্মীরের ভারত ভুক্তির দলিলে সই করতে বাধ্য হন তখনও সেই দলিলে কাশ্মীরের ওপরে বর্নিত বিশেষ মর্যাদা প্রদানের অঙ্গীকার করা হয়।

নাথুরাম গডসে যে কারণে প্রাণ দিয়েছেন, অর্থাৎ মুসলিম রাষ্ট্র গঠনকে এমকে গান্ধী কেন মেনে নিয়েছিলেন, সেই কারণটি সেদিন চাপা পড়লেও ২০১৯ সালে আবার জাগ্রত হয়েছে। সারা পৃথিবীতে ইহুদীদের কোনো দেশ ছিল না। কিন্তু সা¤্রাজ্যবাদীরা ফিলিস্তিনে ইসরাইল রাষ্ট্র গঠন করে দেয়। অতপর সা¤্রাজ্যবাদীদের অস্ত্রে বলীয়ান হয়ে ইসরাইল কয়েকটি মুসলিম দেশের কিছু কিছু ভূখন্ড দখল করে এবং ইহুদীদের সংখ্যা বাড়ায়। ভারতও কাশ্মীরে ইহুদী সম্প্রসারণকে রোল মডেল হিসাবে গ্রহণ করেছে। ৩৫(ক) ধারা বিলোপ করে সেখানে এখন লক্ষ লক্ষ হিন্দু যাবে, তারা সেখানে বিয়ে করবে, জমি জমা কিনবে, ঘর বাড়ি বানাবে, শিল্প কারখানা স্থাপন করবে এবং ভারতের একমাত্র মুসলিম প্রধান প্রদেশে মুসলমানদেরকে সংখ্যা লঘু বানিয়ে ছাড়বে। এভাবেই নাথুরাম গডসে আবার পুনরুত্থিত হচ্ছে এবং যথা সময়ে হিন্দুত্বের নেতা হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
[email protected]



 

Show all comments
  • Sanjit Das ২০ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৮ এএম says : 0
    The Government of India has made the life of the common people very difficult and tough. One should not touch anyone's freedom in a free life together. It is very against Free life
    Total Reply(0) Reply
  • Akash Ujjaman Rana ২০ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৮ এএম says : 0
    ভারতের ব্যার্থতা অতি নিকটে আর আল্লাহ নিশ্চয়ই অসহায়ের উপর অত্যাচারীদের কঠিনতম শাস্তি দিয়ে থাকেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Abdullah Al Maruf ২০ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৯ এএম says : 0
    বছরের পর বছর ধরে ভারতীয় আর্মি ও গোয়েন্দা সংস্থা কাশ্মিরের জনগণের উপর নির্মম অত্যাচার করে চলেছে। জন্মের পর থেকেই এক কাশ্মিরি হিসাবে নিজ ভূমিতে পরাধীন ও শৃঙ্খলিত জীবন যাপন করতে করতে এই পর্যায়ে এসে অধিকাংশ মানুষ এখন মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এই মানুষগুলো এখনো জানে এই নির্মমতার শেষ কোথায়!
    Total Reply(0) Reply
  • Jakir Al Faruki ২০ আগস্ট, ২০১৯, ২:০৯ এএম says : 0
    যখন কোথাও অত্যাচার চলে, মানুষকে হত্যা করা হয় তখন তার প্রতিবাদ জানানো পৃথিবীর সকল মানুষের একান্ত অধিকার। তাই আমরা ভারতীয় হত্যা এবং নির্যাতনের প্রতিবাদ জানাচ্ছি। এর প্রতিবাদে ভারতীয় পণ্য, ভারত ভ্রমন, ভারতীয় টিভি এবং ভারতে চিকিৎসা বর্জন করুন।
    Total Reply(0) Reply
  • Mizanur Rohaman ২০ আগস্ট, ২০১৯, ২:১০ এএম says : 0
    এর পরিনাম ভয়াবহ হবে কাশ্মীরী দের নেজ্য অধিকার সাদীনতা র্ধমিয় অনুস্টান ঈদ নামাজ বাক স্বাধীনতা সব কেরে নিয়ে তাদের কে এক মৃত্যু পুরীর দিকেে টেলে দেওয়ার চেষ্টা চলছে অাজ গোটা পৃথিবী নিশ্চুপ কোতায় জাতিসংঘ অার হিউম্যান রাইটস সব ক্ষমতার তরে অকাতরে কাজ করে সতন্তএ কেউ ই না সব নামে মাএ শব বোকাস।
    Total Reply(0) Reply
  • Ashraful Alam ২০ আগস্ট, ২০১৯, ২:১১ এএম says : 0
    শক্তি প্রয়োগ করে আর যাই হোক স্বাধীনতা ছিনিয়ে নেয়া যায় না । আজ হোক কাল হোক কিংবা যুগের পরে হোক স্বাধীনতা ধরা দেবেই যদি ওটা প্রানের দাবি হয় ।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন