Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

এশিয়ান পেপার মিলকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা

হালদা নদী দূষণ

চট্টগ্রাম ব্যুরো : | প্রকাশের সময় : ১১ জুন, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

চট্টগ্রামের হাটহাজারীর নন্দীরহাট এলাকায় হালদা নদী ও পরিবেশ দূষণের দায়ে এশিয়ান পেপার মিলকে ২০ লাখ টাকা জরিমানা (ক্ষতিপূরণ আরোপ) করেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। গতকাল সোমবার পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়ে শুনানি শেষে এশিয়ান পেপার মিলকে এ জরিমানা করেন পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন।

তিনি বলেন, তরল বর্জ্য শোধনাগার (ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্ট প্ল্যান্ট) অকার্যকর রেখে কারখানা পরিচালনা করা এবং কারখানার ভেতরের এলাকায় একটি প্রাকৃতিক পুকুরে রাসায়নিক মিশ্রিত তরল বর্জ্য সংরক্ষণ বিষয়ে প্রমাণ মিলেছে। পরিবেশ ও প্রতিবেশের ক্ষতি সাধন করায় পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ধারা-৭ অনুসারে প্রাথমিকভাবে ‘এনভায়রনমেন্টাল ডেমেজ এসেসমেন্ট’ করে ২০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
পাশাপাশি এক মাসের মধ্যে ইটিপি সম্পূর্ণরূপে কার্যকর করতে এবং প্রাকৃতিক পুকুরে রাসায়নিক মিশ্রিত তরল বর্জ্য সংরক্ষণ করা হবে না মর্মে ২৩ জুনের মধ্যে অঙ্গীকারনামা দিতে এশিয়ান পেপার মিলকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এসব নির্দেশ পালনে ব্যর্থ হলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুসারে মামলাসহ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

এর আগে গত ২৫ মে হাটহাজারীর নন্দীরহাট এলাকায় এশিয়ান পেপার মিল পরিদর্শন করেন পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন। এ সময় নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করা হয়। পরে তাদের শুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দেওয়া হয়। গতকাল শুনানিতে চিটাগাং এশিয়ান পেপার মিলস (প্রাইভেট) লিমিটেডের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান প্রকৌশলী (যান্ত্রিক) মো. সফিউল আলম এবং ব্যবস্থাপক মো. এহছানুল হক আজাদ।

এর আগে ৩০ মে হালদা নদীর রাউজান অংশে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার স্থানীয় বাসিন্দা ও সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে এশিয়ান পেপার মিলের বিরুদ্ধে মামলাসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. মুক্তাদির হাসান বলেন, ২৫ মে পরিবেশ অধিদপ্তরের একটি পরিদর্শক দল ওই কারখানা পরিদর্শন করে। এরপর শুনানির জন্য দিন ধার্য করা হয়।

চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার চিকদণ্ডী ইউনিয়নের নন্দীরহাট এলাকায় ‘চিটাগাং এশিয়ান পেপার মিলস (প্রাইভেট) লিমিটেড’ নামের কারখানাটি অবস্থিত। কারখানাটির কাছেই মরা ছড়া খাল। মরা ছড়া খালটি স্থানীয় আরো কয়েকটি খালের মাধ্যমে ডোম খাল, মাদারি খাল ও কাটাখালি খালের সাথে সংযুক্ত। এরমধ্যে মাদারি খাল ও কাটাখালি খাল উপজেলার মার্দাশা এলাকায় হালদা নদীর সাথে যুক্ত। এসব বর্জ্য খালের পানির সাথে হালদায় গিয়ে পড়ে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ভারি বর্ষণের রাতে এশিয়ান পেপার মিল থেকে বর্জ্য খালে ফেলা হয়। এসব বর্জ্যরে কারণে সংলগ্ন খালের পানি শুরুতে কালচে বর্ণ ও পরে লাল বর্ণ ধারণ করে। ২৫ মে রাতে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম প্রধান প্রাকৃতিক মৎস প্রজনন ক্ষেত্র হালদা নদীতে ডিম ছাড়ে মা মাছ। সে রাত থেকে পরদিন ভোর পর্যন্ত ডিম সংগ্রহ করেন ডিম আহরণকারীরা। ২৬ মে সকালে মাদারি খালের লালচে পানি দেখতে পেয়ে এ বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তরকে লিখিত প্রতিবেদন দেন হাটহাজারীর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জরিমানা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ