মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতীয় মুসলিমরা কি পরিত্যক্ত হওয়ার মতো অবস্থায় পড়ে গেছে? রাজনৈতিক দলগুলো আর আগের মতো মুসলিমদের সাথে সম্পৃক্ত হচ্ছে না। সরে যাওয়া ও চিড় ধরার এই প্রক্রিয়াটি ২০১৪ সালের লোকসভার নির্বাচনে দেখা গিয়েছিল এবং ২০১৯ সালেও তা আরো প্রকট হয়েছে। বৈশ্বিকভাবে ৯/১১-এর পর শুরু হওয়া মুসলিমদের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াটি ইসলামফোবিয়ায় প্রবেশ করে। এর জের ধরে তাদেরকে পুরোপুরি সন্ত্রাসের সাথে সম্পৃক্ত করে ঘেটোকরণের দিকে অগ্রসর হয়। ভারতীয় গণতন্ত্রের সংখ্যাগরিষ্ঠতাবাদে উদ্দীপনা এই প্রক্রিয়াকে গ্রহণ করে। আর তা ফুটে ওঠে স¤প্রদায়টির রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থগুলো পাশে ঠেলে দেয়ার মাধ্যমে। ভারত কি তার সবচেয়ে বড় সংখ্যালঘু গ্রুপকে রাজনৈতিক সমাজ থেকে দূরে রেখে স্বস্তিতে থাকতে পারবে? এই প্রক্রিয়ায় কি সে তার টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পারবে? কোনোভাবেই নয়। ভারতে মুসলিম জনসংখ্যা হচ্ছে ১৪ ভাগের সামান্য বেশি। ভারতে রয়েছে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম জনগোষ্ঠী। লোকসভার ৮৫টি ও রাজ্য বিধান সভার ৭২০টি আসন রয়েছে, যেখানে মুসলিমরা ২০ ভাগের বেশি। মুসলিম ভোটাররা অনেক আসনের ভাগ্য বদলে দেয়ার মতো ভালো অবস্থানে রয়েছে। মুসলিমদের ভোট দানের চিত্রটি একরৈখিক, অভিন্ন বা সা¤প্রদায়িকতাপূর্ণ নয়। তবে মোটামুটিভাবে তারা ওইসব দল ও প্রার্থীকে ভোট দেয় যারা তাদেরকে ‘অন্য’ হিসেবে চিহ্নিত করে না, তাদের পাশে থাকে এবং তাদের নাগরিকত্বের যোগ্যতা নিয়ে সন্দেহ পোষণ করে না। কিন্তু তারপরও মুসলিমরা ২০১৪ সালে রাজনৈতিক অধিকার অনেকটাই হারিয়েছে। রাজ্য বিধানসভার চিত্রও ভিন্ন নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০১৩-২০১৫ সময়কালে মুসলিমদের প্রতিনিধিত্বের হার ৩৫ ভাগ থেকে কমে হয়েছে ২০ ভাগ। ২০১৮ সালে মুসলিম প্রার্থী জয়ী হয়েছে ছত্তিশগড়ে ১ জন, মধ্য প্রদেশে ২ জন, রাজস্থানে ৮ জন, তেলেঙ্গানায় ৮ জন। মূলধারার দলগুলো মুসলিমদের প্রার্থী করতে অনীহার কারণেই তাদের প্রতিনিধিত্ব কমছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, ২০০৯ সালে বিজেপি যে চার মুসলিম প্রার্থী দিয়েছিল, তার মধ্যে মাত্র একজন জয়ী হয়েছে। ২০১৪ সালে বিজেপি দিয়েছিল ৭ প্রার্থী। কিন্তু জয়ী হয়নি একজনও। ২০০৯ সালে কংগ্রেস মুসলিম প্রার্থী দিয়েছিল ২৯ জন, জিতেছিল মাত্র ১০ জন। ২০১৪ সালে কংগ্রেসের ৩১ মুসলিম প্রার্থীর মধ্যে জয়ী হয়েছিল মাত্র সাতজন। ২০১৯ সালে ৪৬৪ জন প্রার্থীর মধ্যে মুসলিম ছিল ৩২ জন। মজার ব্যাপার হলো, আঞ্চলিক দলগুলো সংখ্যালঘু ভোটব্যাংকের দিকে মনোযোগী হলেও সেখানেও একই চিত্র দেখা গেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, বিএসপি ও এসপির ৭৮ জন প্রার্থীর মধ্যে মুসলিম ছিল মাত্র ১০ জন। এর মধ্যে বিএসপির ছয়জন, এসপির চারজন। অথচ ২০০৯ ও ২০১৪ সালে বিএসপির মুসলিম প্রার্থী ছিল যথাক্রমে ১৪ ও ৯ জন। আর এসপি দিয়েছিল ১১ ও ১৪ জনকে। বিহারে এবার আরজেডি চারজন, জেডিইউ ও এলজেপি একজন করে প্রার্থী দিয়েছে। আর তেলেঙ্গানা, এপি, কর্নাটক ও উড়িষ্যায় টিআরএস, টিডিপি ও ওয়াইএসআর কংগ্রেস, জেডিএস ও বিজেডি একজনও প্রার্থী দেয়নি। প্রার্থিতা না দেয়াটা নাগরিক হিসেবে আইন ও সিদ্ধান্তগ্রহণকারী সংস্থাগুলোতে সমান সুযোগ না দেয়া, রাজনীতির অধিকার না দেয়ার সামিল। ক্ষমতা আরো হ্রাস পাওয়ার বিষয়টি মুসলিমদের হতাশা আরো গভীর করবে, আমাদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরপেক্ষ কাজের প্রতি হুমকি সৃষ্টি করবে। সন্দেহ নেই যে মুসলিমদের প্রতি এই উদাসিনতার কারণ হলো হিন্দু ডানপন্থী জনসাধারণের বিপুল জয়। তথাকথিত সংখ্যালঘুবান্ধব দলগুলো নিজেদের নতুন করে গুছিয়ে সম্ভাব্য মুসলিম প্রার্থীদের দূরে সরিয়ে রেখেছে জয় নিশ্চিত করার নামে। এতে করে মেরুকরণকে জোরদারই করা হচ্ছে। কিন্তু মেরুকরণ ও জয় নিশ্চিতকরণের বিষয়টি কি ২০১৪ সালের আগে ছিল না? এই পতনের পেছনে অনেক কারণ রয়েছে। সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।