পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
এখন মার্চ মাস চলছে। এই মাসের ২৬ তারিখে আমরা স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস হিসাবে পালন করি বলে এ মাসকে স্বাধীনতার মাসও বলা হয়ে থাকে। এ মাসে আমাদের বিচার করতে হয় আমরা আমাদের স্বাধীনতাকে কতটা সার্থক ও অর্থপূর্ণ করতে পেরেছি বা পারিনি।
স্বাধীনতা নিয়ে বিচার করতে গেলেই আমাদের আরেকটি বিষয় বিবেচনার মধ্যে আনতে হয়, সেটি গণতন্ত্র। এক হিসাবে বলতে হয়, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। এ দুটি ধারণা একে অন্যের পরিপূরক। একটি ছাড়া অন্যটির কথা কল্পনা করাও সম্ভব নয়।
ইতিহাসবিদ মাত্রই জানেন ১৭৫৭ সালে পলাশীর বিয়োগান্তক ঘটনার মধ্যে দিয়ে স্বাধীনতা হারানোর পর ১৯০ বছর আমরা সাত সমুদ্র তের নদীর ওপার থেকে আসা সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশ শক্তির অধীনে ছিলাম। ব্রিটিশের সেই পরাধীনতার শৃঙ্খল ছিন্ন করে আমরা প্রথমবারের মতো স্বাধীন হই পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। সেই পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল উপমহাদেশের উত্তর-পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকাসমূহ নিয়ে।
সেই পাকিস্তান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় যদিও পূর্বাঞ্চল তথা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অবদান অধিক ছিল, তবু সে রাষ্ট্রে পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ বৈষম্য এবং অবিচারের শিকার হয় বেশি। সমগ্র পাকিস্তানের জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ বাস করতো পূর্ব পাকিস্তানে এবং তাদের মাতৃভাষা ছিল বাংলা। পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে উর্দুভাষীদের প্রবল সংখ্যাধিক্যের কারণে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে কোনো আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ধরে নিয়ে পোস্টকার্ড, মানিঅর্ডার ফর্ম, এনভেলপ প্রভৃতি নিত্যপ্রয়োজনীয় বিষয়ে ইংরেজ আমলের ধারাবাহিকতায় ইংরেজির সাথে শুধু উর্দু ব্যবহার শুরু করা হয়। এর প্রতিবাদেই গড়ে উঠে ঐতিহাসিক রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন।
এখানে উল্লেখযোগ্য যে, উপমহাদেশের ইংরেজ রাজত্বের শেষ দিকে দুটি রাজনৈতিক সংগঠন স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃত্বে চলে আসে। এর একটি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস, আরেকটি নিখিল ভারত মুসলিম লীগ। প্রথমটির দাবি ছিল ভারতবর্ষকে অবিভক্ত হিসাবে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা। পক্ষান্তরে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের লক্ষ্য ছিল উপমহাদেশের উত্তর পশ্চিম ও পূর্বাঞ্চলের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা সাথে নিয়ে পাকিস্তান নামের একটি রাষ্ট্র গঠন করা।
যেহেতু পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে পূর্বাঞ্চল তথা পূর্ব পাকিস্তানের জনগণের অবদান অধিক ছিল এবং স্বাভাবিকভাবে তাদের প্রত্যাশাও ছিল বেশি, কিন্তু নানা কারণে তারা বঞ্চিত হয়। প্রথমত পাকিস্তান রাষ্ট্রের একাধিক রাজধানীর ভৌগোলিক অবস্থান ছিল পশ্চিমাঞ্চলে। তাছাড়া পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বাহিনীর আর্মি, নেভি ও এয়ার ফোর্স সবগুলোর সদর দপ্তর ছিল পাকিস্তানে। এসব কারণে পূর্ব পাকিস্তানের তুলনায় পশ্চিম পাকিস্তান দ্রুততর গতিতে উন্নয়নের সুযোগ লাভ করে। কিন্তু এসবের চাইতেও বড় কথা ছিল। রাষ্ট্রের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে উর্দুভাষীদের প্রবল সংখ্যাধিক্য। একারণে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ধরে নিয়ে কেন্দ্রীয় নানা কাজ ব্রিটিশ আমলের ধারাবাহিকতায় ইংরেজির সাথে শুধু উর্দু ব্যবহারের চেষ্টা করা হয়। এর বিরুদ্ধেই যে মঞ্চে ওঠে ঐতিহাসিক ভাষা আন্দোলন, সে কথা আগেই বলা হয়েছে।
ভাষা আন্দোলনের সূচনা হয় ১৯৪৭ সালেই। ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট স্বাধীন রাষ্ট্র পাকিস্তানের জন্মের পর পরই ১৯৪৭ সালের ১ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের তরুণ শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেমের উদ্যোগে নতুন রাষ্ট্রের আদর্শিক দিক নির্দেশনার লক্ষ্যে গঠিত হয় তমদ্দুন মজলিস নামের একটি সাংস্কৃতিক সংস্থা। অধ্যাপক আবুল কাসেম ছাড়াও এই সংস্থার প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে যারা ছিলেন তারা হলেন, পরবর্তীকালে মুজিবনগর সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপ্রধান সৈয়দ নজরুল ইসলাম, পাকিস্তান আন্দোলনের অন্যতম সাংস্কৃতিক সদস্য শামসুল আলম প্রমুখ। যদিও প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ছিলেন না, তবুও বিখ্যাত কথাশিল্পী শাহেদ আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নূরুল হক ভুঁইয়া প্রমুখ বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী তমদ্দুন মজলিসের প্রথম দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তমদ্দুন মজলিস প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৪৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বরে। এই তমদ্দুন মজলিস ১৯৪৭ সালের ১৫ সেপ্টেম্বরেই ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা না উর্দু’ শীর্ষক পুস্তিকা প্রকাশ মারফৎ ভাষা আন্দোলন শুরু করে।
তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক আবুল কাসেমসহ সবাই ছিলেন পাকিস্তান আন্দোলনের সমর্থক। পাকিস্তান আন্দোলনের সমর্থক হিসেবে তাদের সিলেট রেফারেন্ডামে যাবার কথা ছিল। সবাই যেতে না পারলেও সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ আমরা কেউ কেউ যাব। সেখানেই তিনি কথাশিল্পী শাহেদ আলীর সন্ধান পান এবং বলেন, পরবর্তীকালে ঢাকা এলে যেন অবশ্যই অধ্যাপক আবুল কাসেমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
পরবর্তীকালে ঢাকায় এসে কথাশিল্পী শাহেদ আলী প্রথম দিকে কয়েকদিন ফজলুল হক হলে তার এক পরিচিতজনের সঙ্গে থাকেন। পরে অধ্যাপক আবুল কাসেমের সাথে সাক্ষাৎ করেন এবং অধ্যাপক আবুল কাসেমের বিশেষ আগ্রহে তার আজিমপুর রোডস্থ বাসায় ওঠেন। এভাবে তমদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতা না হয়েও অন্যতম প্রতিষ্ঠাতার ভূমিকা পালন করেন শাহেদ আলী। একারণে আমরা দেখতে পাই তমদ্দুন মজলিসের মেনিফেস্টো ‘একমাত্র পথ’ নামের যে পুস্তিকা প্রকাশিত হয় তার লেখক হিসাবে আমরা অধ্যাপক আবুল কাসেমের পাশাপাশি শাহেদ আলীর নাম দেখতে পাই।
এতক্ষণ আমরা পাকিস্তানের প্রাথমিক ইতিহাসে তমদ্দুন মজলিস এবং মজলিসের সূচিত ভাষা আন্দোলন সম্বন্ধে আলোকপাত করেছি। ভাষা আন্দোলনকে জোরদার করার লক্ষ্যে ১৯৪৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক নূরুল হক ভুঁইয়াকে কনভেনার করে প্রথম রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়। ইতোমধ্যে ১৯৪৮ সালের ৪ জানুয়ারি পাকিস্তান আন্দোলনের সমর্থক ছাত্রদের নিয়ে পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্র লীগ নামে একটি নতুন ছাত্র সংগঠন গঠিত হয়। জন্মলগ্ন থেকেই এই প্রতিষ্ঠান তমদ্দুন মজলিস সূচিত ভাষা আন্দোলনে সমর্থন দেয়া শুরু করে। এর ফলে এই দুই সংগঠনের মধ্যে হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। ছাত্রলীগ ভাষা আন্দোলনে সমর্থন শুরু করার কারণে তমদ্দুন মজলিস ও ছাত্রলীগের যুগপৎ সদস্য শামসুল আলমকে কনভেনর করে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ পুনর্গঠিত হয়।
এদিকে এ সময় করাচিতে অনুষ্ঠানরত পাকিস্তান গণপরিষদের অধিবেশনে কংগ্রেস দলীয় সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত ইংরেজি ও উর্দুর পাশাপাশি গণপরিষদে বাংলাতেও বক্তৃতা দানের দাবি উত্থাপন করলে সে দাবি প্রত্যাখ্যাত হয়। এর প্রতিবাদে ১৯৪৮ সালের ১১ মার্চ সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানে হরতাল প্রতিপালিত হয়। বস্তুত এটাই ছিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পর প্রথম সফল হরতাল।
সে সময় পূর্ব পাকিস্তান রেল কর্মচারীদের সঙ্গে তমদ্দুন মজলিসের সুম্পর্ক থাকায় ঐ দিন চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে কোনো ট্রেন রওনা হতেই পারেনি। রাজধানী ঢাকার অবস্থা ছিল আরও ভয়াবহ। সকাল থেকে সেক্রেটারিয়েটের চারদিকে বাংলাভাষা সমর্থকদের প্রতিরোধের কারণে অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারী সেদিন অফিস করার জন্য সেক্রেটারিয়েটে প্রবেশ করতেই সক্ষম হয়নি। তখন সেক্রেটারিয়েটের চারদিকে বর্তমানের মতো পাকা দেয়াল ছিল না, ছিল কাঁটা তারের বেড়া। অনেক পিকেটার কাঁটা তারের বেড়া ডিঙ্গিয়ে ভেতরে প্রবেশ করে উপস্থিত সচিব ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা না করা হলে তারা পদত্যাগ করবেন এ ওয়াদা নিয়ে আসেন।
এদিকে পুলিশ পিকেটিংরত ভাষা সৈনিকদের অনেককে গ্রেপ্তার করে এবং অনেকের উপর লাঠিচার্জ করে। এই গ্রেপ্তার ও লাঠিচার্জের খবর রাজধানী শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে গেলে বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জনগণ এসে সেক্রেটারিয়েট এলাকায় জমায়েত হয় এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। এই অবস্থা চলতে থাকে ১১ থেকে ১২, ১৩, ১৪, ১৪ মার্চ পর্যন্ত। সারা শহরে অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
এতে তদানীন্তন চিফ মিনিস্টার খাজা নাজিমুদ্দিন বিব্রত হয়ে পড়েন। কারণ, কয়েকদিনের মধ্যেই কায়েদে আজমের ঢাকা সফরে আসার কথা। তিনি এসে ঢাকার এ অরাজক পরিস্থিতি দেখলে নাজিমুদ্দিনের প্রতি তাঁর খুশি থাকার কথা নয়। তিনি নিজে উদ্যোগ নিয়ে রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে তাদের দাবি-দাওয়া মেনে নিয়ে চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এতে অবস্থা শান্ত হয়।
পরে ১৯ মার্চ কায়েদে আজম ঢাকা আসেন। তিনি রেসকোর্স ময়দানে এক বিরাট জনসভায় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হলে বিশেষ সমাবর্তন অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। উভয় স্থানে তিনি উর্দুকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করার সংকল্প ঘোষণা করেন। উভয় স্থানে তাঁর এ বক্তব্যের প্রতিবাদ হয়। রেসকোর্স ময়দানে বিরাট জনসভায় কোথায়, কে তাঁর বক্তব্যের প্রতিবাদ করল, তা তিনি টের না পেলেও কার্জন হলের সীমিত উপস্থিতিতে কতিপয় ছাত্র তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করেন। তিনি বিস্ময়ে অবাক হন। কারণ এই ছাত্ররাই তাঁর আহ্বানে সাড়া দিয়ে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। এত শীঘ্রই তাদের মধ্যে এ পরিবর্তন আসল কী করে? তিনি বক্তৃতা সংক্ষেপ করে হল ত্যাগ করেন। পরে তিনি ছাত্রদের সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠক বসেন। কিন্তু উভয় পক্ষ যার যার অবস্থানে অটল থাকাতে বৈঠক ব্যর্থ হয়। তবে একটা বিষয় লক্ষণীয়। ঐ বছর (১৯৪৮) ১১ সেপ্টেম্বর তার ইন্তেকাল পর্যন্ত তিনি রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে প্রকাশ্যে কোনো বক্তব্য দেননি। বরং মৃত্যুশয্যায় তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক কর্ণেল এলাহি বখশকে একাধিকবার বলেন, অন্যের কথায় বিশ্বাস করে তিনি জীবনে একাাধিক ভুল করেছেন। তার অন্যতম ছিল রাষ্ট্রভাষা প্রশ্নে তার বক্তব্য। এটা তাঁর গণপরিষদের উপর ছেড়ে দেয়া উচিৎ ছিল।
অন্যের কথায়, বলতে কায়েদে আজম যে খাজা নাজিমুদ্দিনকে জানিয়েছেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ খাজা নাজিমুদ্দিন পারিবারিকভাবে উর্দুভাষী ছিলেন শুধু নন, তিনি বিশ্বাস করতেন পূর্ব পাকিস্তানের জনগণও উর্দুভাষা বোঝে। খাজা নাজিমুদ্দিন যখন পরবর্তীকালে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হয়ে ১৯৫২ সালের জানুয়ারি মাসে ঢাকার পল্টন ময়দানে এসে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার কথা বলেন, জনগণ তাকে বিশ্বাসঘাতক হিসাবে ধিক্কার প্রদান করে ২১ ফেব্রুয়ারি প্রতিবাদ দিবস পালন করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এই ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে তরুণরা বুকের তাজা রক্তঢেলে প্রমাণ করলো, বিশ্বাসঘাতককে তারা কিছুতেই ক্ষমা করতে রাজী নয়। এই রক্তদানের ফলেই শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান রাষ্ট্রের অপমৃত্যু হয় এবং ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ শুরু হওয়া প্রতিরোধ সংগ্রামের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় হয়। ২৬ মার্চ একারণেই স্বাধীনতা দিবসের মর্যাদা লাভ করেছে।
আগেই বলা হয়েছে, স্বাধীনতার সঙ্গে গণতন্ত্রের ওতপ্রোত সম্পর্ক। স্বাধীন রাষ্ট্র আমরা কতটা গণতন্ত্রের জন্য উন্মুক্ত করে দিচ্ছি তার উপর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে বাংলাদেশের সার্থকতা নির্ভর করে বিশেষভাবে। তবে এটাও সত্য যে, বাংলাদেশ একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে সার্থক হতে পারেনি। অথচ, গণতন্ত্র ছাড়া স্বাধীনতা প্রকৃত পক্ষে কোনো অর্থ বহন করে না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।