মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরানে বাইরে বের হলে মেয়েদের মাথায় স্কার্ফ বাধ্যতামূলক। এর বিরোধিতাকারীদের জন্য শাস্তি হল কারাদণ্ড অথবা জরিমানা। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে ৪২ বছর বয়সী ইরানী নারী শাপারককে হিজাব না পরতে চেয়ে প্রতিবাদ করায় তাকে ২ বছরের সশ্রমসহ মোট ২০ বছরের কারাদণ্ডের সাজা দেওয়া হয়। সাজার ভয়ে তার আগেই তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান। খবর দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট।
ইরানের ইসলামিক পেনাল কোডের প্রাদেশিক অনুচ্ছেদ ৬৩৮ অনুযায়ী, ‘মহিলারা যদি জনসম্মুখে বা রাস্তায় হিজাব পরিধান না করে তবে তার শাস্তি হিসেবে তাকে দুই দিন থেকে দশ মাস পর্যন্ত কারাভোগ অথবা ৫০ হাজার বা ৫ লাখ রিয়াল জরিমানা পরিশোধ করতে হবে।’ এই নিয়মের বিরোধিতা করায় শাপারক সাজারিজাদেহকে ২০ বছরের সাজা দেওয়া হয়।
শাপারক বলেন, ‘যখন আমি হিজাব পরি তখন আমার মনে হয় আমি নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু যখন আমি হিজাব পরি না তখন আমার নিজেকে মুক্ত মনে হয়। যখন আমি এটা ছাড়াই প্রকাশ্যে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম মনে হচ্ছিল আমার একটা শক্তি আছে এবং আমি আমার মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে পারি।’ তিনি বলেন, ‘আমি একজন সাধারণ গৃহবধূ, একজন সাধারণ নারী। আমি আমার অধিকারের জন্য কিছু করতে চাই। ২০১৪ সালের মে মাসে কিছু নারী এ বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আন্দোলন শুরু করে। তারা হিজাব ছাড়াই নিজেদের ছবি পোস্ট করে।এরপর ২০১৬ এর ডিসেম্বরে তেহরানে একজন নারী নীরব প্রতিবাদ করে। তার লাঠিতে বেঁধে সাদা হিজাব ওড়ানোর ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। সে একমাস জেলে ছিল। আমার জন্য এটা ছিল চমৎকার উপায়ে বেসামরিক নাগরিকের প্রতিবাদের একটি প্রতীক। আমি একজন নারীকে বলেছিলাম এখন থেকে চলুন আমাদের সাদা স্কার্ফ একটি লাঠির সাথে বেঁধে রাখি।’
প্রতিবাদ শুরু করায় ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে আটকের পর এপ্রিলে তাকে জামিন দেওয়া হয়। শাপারক জানায়, ‘তারা আমাকে জোর করে বলাতে চেয়েছিল যে আমি একজন গুপ্তচর। আমি ভীত হয়ে পড়েছিলাম। এরপর তারা কয়েকজন নারী কর্মকর্তাকে ডাকে। হঠাৎ করে আমি ফ্লোরে পড়ে গেলাম এবং তাদের মধ্যে একজন আমার মুখে মারলো। একহাতে সে আমার চুল ধরলো এবং মুখে অনেকগুলো ঘুষি দিলো। আমি সাতদিন বন্দি ছিলাম এবং পাঁচদিন অনশন করেছি।’
জামিনে বের হয়ে শাপারক জীবনের ভয়ে স্বামী ও সন্তান রেখে ইরান ত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলেন। একজন পাচারকারী শাপারককে তুরস্ক সীমান্ত অতিক্রম করতে সহায়তা করে। তার পালিয়ে যাওয়ার পর ইরানের একটি আদালত তাকে দু’বছরের কারাদণ্ড দেয়। আর হেডস্কার্ফ না পরার জন্য তাকে দেওয়া হয় জেল ছাড়া ১৮ বছরের শাস্তি।
দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রসিকিউটরদের মতে, জনসম্মুখে হিজাব না পরে তারা সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিচ্ছে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত ৩০ জনেরও বেশি নারীকে জনসম্মুখে হিজাব খুলে প্রতিবাদ করার জন্য গ্রেফতার করা হয়। এটি করা হয় শুধু দেশটির বাধ্যতামূলক হিজাব পরিধানের বিরোধিতা করার জন্য।
উল্লেখ্য, ১৯৩০ সালে, দেশটির শাসক রেজা শাহ পাহলভি পশ্চিমা পোশাক বাধ্যতামূলক করেন। ১৯৭০ এর দশকে দেশটির মানুষ সহিংস বিপ্লব অনুসরণ করে শাসক পরিবারকে উৎখাত করতে। সে সময়ই নারীদের মাথায় কাপড় পরা বাধ্যতামূলক করা হয়। ১৯৭৯ সালে ইরান রাষ্ট্রের প্রধান আয়াতুল্লাহ খোমেনি এই আইন জারি করেন। সে সময়, এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিভিন্ন পেশার দশ হাজারেরও বেশি নারী রোডমার্চ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।