Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

রাজধানীতে পৃথক গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ একজনের মৃত্যু, চিকিৎসাধীন ৩

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

রাজধানীর মোহাম্মদপুরে গ্যাস লাইন লিকেজে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে সাইফুল ইসলাম রুবেল (২৬) নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল সকালে রুবেল ও তার স্ত্রী সাজেনা বেগম (১৮) দগ্ধ হন। সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারা যায় রুবেল। আগুনে তার শরীরের ৯৭ শতাংশ দগ্ধ হয়। সাজেনা বেগম বর্তমানে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন। আগুনে তার শরীরের ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে।
এদিকে, গতকাল রায়েরবাগে পৃথক গ্যাস লিকেজের ঘটনায় রিয়াজ (২৫) ও সোহেল (২২) নামে দুই স্যানেটারি মিস্ত্রি দগ্ধ হন। তাদেরকে ঢামেকের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। এছাড়া, সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে দগ্ধ আব্দুর রব (২০) গতকাল ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। আগুনে তার শরীরের ৮৮ শতাংশ পুড়ে গেছে।
মোহাম্মদপুরে দগ্ধ রুবেলের ভাই এখলাস বলেন, তারা মোহাম্মদপুর নবীনগর হাউজিংয়ের ১৩ নম্বর রোডের ৬৬ নম্বর বাসায় ভাড়া থাকেন। তাদের পাশের রুমেই থাকেন ভাই রুবেল ও তার স্ত্রী সাজেনা। তিনি বলেন, গতকাল ভোর ৫টার দিকে রুবেলের রুমে চিৎকার শুনে তারা ছুটে গিয়ে রুমের ভেতর আগুন দেখতে পান। পরে দরজা ভেঙ্গে ভেতর থেকে রুবেল ও সাজেনাকে উদ্ধার করে ঢামেকে নিয়ে ভর্তি করলে সন্ধ্যার দিকে তার ভাই মারা যায়।
তিনি আরো বলেন, রাজধানীতে গ্যাসের সঙ্কট থাকায় গত ৪/৫ দিন আগে তারা ছোট চুলা ও সিলিন্ডার গ্যাস আনেন। রুমের পাশের বারান্দায় সেটি রাখা ছিলো। গত রোববার রাতে মশার কয়েল জ্বালিয়ে তার ভাই-ভাবী ঘুমিয়ে পড়েন। সারা রাত ধরে সিলিন্ডার লিকেজ হয়ে গ্যাস বেড়িয়ে পুরো রুমে ছড়িয়ে পড়ে। ভোর রাতে সেই গ্যাস মশার কয়েলের সংস্পর্শে এসে আগুন ধরে মুহুর্তেই তা পুরো রুমে ছড়িয়ে পড়ে। এতে তার ভাই-ভাবী দগ্ধ হয়।
ঢামেক সূত্র জানায়, গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রায়েরবাগে মিরাজ নগরের ইউনুস টাওয়ারে গ্যাসের পাইপ লাইনের লিকেজ পরীক্ষা করার সময় আগুন ধরে রিয়াজ ও সোহেল দগ্ধ হন। তাদের সহকর্মী শাহীন বলেন, গতকাল ইউনুস টাওয়ারের ৭ তলায় স্যানেটারি কাজ করার জন্য যায়। এ সময় তারা রান্না ঘরে গ্যাসের গন্ধ পেয়ে সেটি পরীক্ষার জন্য দিয়াশলাই জ্বালালে সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে তা ছড়িয়ে পড়ে। এতে তাদের দু’জনের হাত ও মুখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ দগ্ধ হয়। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢামেকে ভর্তি করা হয়। দগ্ধ রিয়াজ বরিশালের লুৎফর রহমানের ছেলে এবং সোহেল নোয়াখালীর মোবারক হোসেনের ছেলে।
ঢামেক বার্ণ ইউনিটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল বলেন, আগুনে সাইফুলের শরীরের ৯৭ শতাংশ ও সাজেনার ৭৫ শতাংশ পুড়ে গেছে। এছাড়া রিয়াজের ৩৪ শতাংশ ও সোহেলের ২২ শতাংশ দগ্ধ হয়।
ঢামেক হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বাচ্চু মিয়া বলেন, গতকাল সকালে হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দগ্ধ আব্দুর রব মারা গেছেন। আগুনে তার শরীরের ৮৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল।
বার্ণ ইউনিট সূত্রে জানা গেছে, গত ২ নভেম্বর সাভারের আশুলিয়ায় গ্যাস সিলিন্ডার বিষ্ফোরণে একই পরিবারের পাঁচ জন দগ্ধ হন। পরে তাদের উদ্ধার করে ঢামেক হাসপাতালের বার্ণ ইউনিটে ভর্তি করা হয়। এর মধ্যে গত ৩ নভেম্বর রাতে আব্দুর রবের মা হাসিনা বেগম এবং ৫ নভেম্বর বাবা আরব আলী মারা যান। এ ঘটনায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকা দু’জনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে বার্ণ ইউনিটের চিকিৎসকরা জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মৃত্যু


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ