২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
বিরল এক সিনড্রোম। সিনড্রোম মানে হচ্ছে এক গুচ্ছ উপসর্গ। আমাদের দেশে তেমন একটা দেখা যায় না। সিনড্রোমটির আরো কিছু নাম আছে। একে গাওয়ারস-প্যাটন-কেনিডি সিনড্রোমও বলা হয়। আরো দু’টি নাম হচ্ছে কেনেডি’স ফেনোমেনন এবং কেনেডি সিনড্রোম। আমাদের ব্রেন বা মস্কিষ্ককে ৪টি লোবে ভাগ করা হয়। ফ্রন্টাল, প্যারাইটাল, টেম্পোরাল এবং অক্সিপিটাল। ফ্রন্টাল লোবে টিউমার হলে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়। একেই ফস্টার কেনেডি সিনড্রোম বলা হয়।
রবার্ট ফস্টার নামের একজন বিজ্ঞানী ১৯১১ সালে এই সিনড্রোমের বিস্তারিত বিবরণ দেন। কেনেডী সাহেব ব্রিটিশ হলেও জীবনের বেশির ভাগ সময় কাটান আমেরিকায়। তবে প্রথম গাউয়ার ১৮৯৩ সালে এই সিনড্রোমের কথা বলেন। ফস্টার কেনেডি সিনড্রোমে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। যেমনঃ-
১। বমিভাব ২। বমি ৩। মাথাব্যাথা ৪। মাথাঘোরা ৫। স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া ৬। মানসিক সমস্যা ৭। ঘ্রাণশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া ৮। দেখতে সমস্যা হওয়া।
অফথ্যালমোস্কোপ দিয়ে পরীক্ষা করলে দেখা যায় অপটিক এট্রফি এবং প্যাপিলিওডেমা। অপটিক এট্রফি মানে অপটিক নার্ভ শুকিয়ে যাওয়া এবং প্যাপিলিওডেমা হচ্ছে অপটিক ডিস্ক ফুলে উঠা।
ভালভাবে ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষা করলে রোগটির ব্যাপারে সন্দেহ হয়। তবে যেহেতু বিরল অসুখ তাই চট করে মনে আসেনা। নিশ্চিত হবার জন্য সিটিস্ক্যান, এম আর আই করা হয়।
ফ্রন্টাল লোবে বিভিন্ন টিউমার, যেমন-মেনিনজিওমা অথবা প্লাসমাসাইটোমাতে যেহেতু সিনড্রোমটি দেখা যায় তাই এসবের চিকিৎসা করলে সিনড্রোমের উন্নতি হয়। তবে প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে ভাল। ক্যান্সার যদি ছড়িয়ে পড়ে বা বিধ্বংসী রূপ ধারণ করে তখন চিকিৎসা করে খুব ভাল হয়না।
ফস্টার-কেনেডি সিনড্রোমের পরিণতি নির্ভর করে টিউমারের প্রকার এবং চিকিৎসার উপর। যেহেতু খুব বেশী একটা সিনড্রোমটি দেখা যায়না সুতরাং আতংকের তেমন কিছু নেই। তবে মাথাব্যাথা বা চোখে দেখতে সমস্যা হলে অবহেলা করা ঠিক না। অবশ্যই একজন নিউরোলজিস্টকে দেখান উচিত। নাহলে দুঃখজনক পরিণতি হতে পারে।
ডাঃ ফজলুল কবির পাভেল
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।