Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উইঘুর বন্দী শিবিরের স্বীকারোক্তি

সিনজিয়াংয়ে হালালবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে চীন

ইনকিলাব ডেস্ক : | প্রকাশের সময় : ১২ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

লাখ লাখ উইঘুর মুসলিমের লাপাত্তা হয়ে যাওয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগের মুখে চীনের শিনজিয়াং প্রদেশের কর্তৃপক্ষ বন্দী শিবিরগুলোকে আইন করে বৈধতা দিয়েছে। চীনের কর্তৃপক্ষ এতদিনে স্বীকার করলো বহু উইঘুর মুসলিমকে বন্দী শিবিরে নিয়ে রাখা হয়েছে। বলা হচ্ছে, ইসলামি কট্টরবাদ মোকাবেলার অংশ হিসাবে আটক উইঘুরদের আদর্শ শেখানো, তাদের চিন্তা-চেতনায় বদল আনা হচ্ছে। মানবাধিকারের ওপর স¤প্রতি এক বৈঠকে উপস্থিত চীনা কর্মকর্তারা বলছেন ধর্মীয় উগ্রবাদের কবলে পড়া উইঘুরদের নতুন করে শিক্ষা এবং পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে কীভাবে তা করা হচ্ছে তা চীনা কর্মকর্তারা ভেঙ্গে বলছেন না। কিন্তু মানবাধিকার সংস্থাগুলো দাবি করছে, এসব শিবিরে প্রেসিডেন্ট শি জিন-পিংয়ের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে উইঘুরদের শপথ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে। একইসাথে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাস নিয়ে আত্মসমালোচনা করানো হচ্ছে। এদিকে, সিনজিয়াং প্রদেশে ‘হালালবিরোধী’ অভিযান শুরু করেছে চীন। মুসলমানপ্রধান অঞ্চলটিতে হালাল পণ্যের ব্যাপক প্রসার ধর্মীয় চরমপন্থাকে উস্কে দেয় দাবি করে এ অভিযান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ। রাজধানী উরুমকির বিচার ও তদন্ত বিভাগ চীনা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইচ্যাট অ্যাকাউন্টে দেওয়া বিবৃতিতে সরকারি কর্মকর্তাদের ‘হালালিকরণ’ অথবা ‘হালাল করার প্রবণতার’ বিরুদ্ধে ‘আদর্শগত লড়াই’ জোরদার করার আহ্বান জানিয়েছে। রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল টাইমসে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, ‘হালালীকরণ প্রবণতা ধর্ম ও সেক্যুলার জীবনের সীমানাকে বিলীন করে। তাই ধর্মীয় চরমপন্থার পাঁকে আটকে যাওয়া খুব সহজ।’ ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী, মুসলমানদের খাওয়া-পরিধানের জন্য যা কিছু বৈধ করা হয়েছে তা হালাল এবং যা নিষেধ করা হয়েছে তাকে হারাম বলা হয়। চীনের সরকারি কমকর্তা ও রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, হালাল মোড়কজাত পণ্যের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ইসলামি অনুশাসন মানার সুযোগ দেওয়া হবে যা, চীনের সেক্যুলার জীবনযাপন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করবে। শিনজিয়াং এ গত কয়েকবছর ধরে অব্যাহত সহিংসতা চলছে। চীন তার জন্য বিচ্ছিন্নতাবাদী ইসলামি সন্ত্রাসীদের দায়ী করে। চীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছিল যে তারা বিপুল সংখ্যক উইঘুর মুসলিমকে কতোগুলো বন্দী শিবিরের ভেতরে আটকে রেখেছে। গত আগস্ট মাসে জাতিসংঘের একটি কমিটি জানতে পেরেছে যে ১০ লাখের মতো উইগর মুসলিমকে পশ্চিমাঞ্চলীয় শিনজিয়াং অঞ্চলে কয়েকটি শিবিরে বন্দী করে রাখা হয়েছে। চীন শিনজিয়াংয়ে কি করছে নতুন এই আইনের মাধ্যমে এই প্রথম তার একটি ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। আইনে বলা হয়েছে, যে সব আচরণের কারণে বন্দী শিবিরে আটক করা হতে পারে তার মধ্যে রয়েছে - খাবার ছাড়া অন্য হালাল পণ্য ব্যবহার, রাষ্ট্রীয় টিভি দেখতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় রেডিও শুনতে অস্বীকার করা, রাষ্ট্রীয় শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে বাচ্চাদের দূরে রাখা। চীন বলছে, এসব বন্দী শিবিরে চীনা ভাষা শেখানো হবে, চীনের আইন শেখানো হবে এবং বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। বিবিসি বাংলা, দ্য গার্ডিয়ান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উইঘুর


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ