মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
মরক্কো কর্তৃপক্ষের কাছে উইঘুর কর্মী ইদিরেসি আইশানের মুক্তির দাবি জানিয়েছে ৪৫টি মানবাধিকার সংস্থা। কারণ তিনি এক বছর আটক থাকার পরে চীনে প্রত্যর্পণের ঝুঁকির মুখোমুখি হয়েছেন।
ইদিরেসি আইশানর ইদ্রিস হাসানের মামলাটি বিদেশি ভিন্নমতাবলম্বীদের প্রত্যাবাসনের জন্য ইন্টারপোল ব্যবস্থার অপব্যবহার করার চীনের যে কৌশল সেটিকে সামনে আনছে।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছিলেন যে চীন তার স্বার্থের জন্য একটি নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রভাবিত করে ভূ-রাজনীতিতে তার প্রভাব বিস্তারের জন্য প্রকাশ্যে তার অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করছে। চীন ২০১৬ সালের পর ইন্টারপোলে তার প্রভাব প্রয়োগ করতে শুরু করে। চীনের জননিরাপত্তাবিষয়ক ভাইস মিনিস্টার মেং হংওয়েই ইন্টারপোলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর এটি ইন্টারপোলে একটি শীর্ষস্থানীয় দেশ হয়ে ওঠে।
মেং ইন্টারপোলের দায়িত্ব নেওয়ার পর অনেকেই সংশয় প্রকাশ করেছিলেন যে চীন এখন বিদেশে ভিন্নমতাবলম্বীদের তাড়া করতে এটিকে আরও ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবে। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের একজন কর্মকর্তা ওই নির্বাচনের ফলাফলে ‘অস্বাভাবিক উদ্বেগজনক’ কিছু বিষয় খুঁজে পেয়েছেন।
এ ছাড়াও চীনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে ইন্টারপোলের রেড নোটিস সিস্টেম (আরএনএস) অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, যা মূলত একটি প্রত্যর্পণ চুক্তির অপেক্ষায় থাকা ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে। রাজনৈতিক/ধর্মীয় কার্যকলাপে জড়িত থাকা বা চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধ মতামত প্রকাশকারীদের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ চীনা নাগরিকদের প্রত্যর্পণের জন্য বেছে বেছে এই পরিষেবাটি ব্যবহার করেছে।
চীনের প্রত্যাবাসন কৌশলটি আরএনএস-এর সঙ্গে যুক্ত কারণ এটি সমস্ত আন্তর্জাতিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টগুলোকে জব্দ করে এবং টার্গেটেড ব্যক্তিদের জন্য ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাড়ায়। তথ্য অনুসারে, ২০১৫ সালে অপারেশন স্কাইনেটের মাধ্যমে তথাকথিত অর্থনৈতিক পলাতকদের বিরুদ্ধে চীন প্রায় ১০০টি রেড নোটিশ জারি করেছিল। সেই ১০০ জনের মধ্যে ৫১ জনকে ইতিমধ্যেই চীনে ফেরত পাঠানো হয়েছে। প্রচণ্ড চাপ ও সরকারের হুমকির মুখে ওই ৫১ জনের মধ্যে ৩৫ ‘অপরাধী’ স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছেন যে তারা ‘স্বেচ্ছায়’ দেশে ফিরে এসেছেন। টার্গেটেড অনেক ব্যক্তি পরিবারের হয়রানির কারণে দেশে ফিরছেন।
বিশ্ব উইঘুর কংগ্রেসের সভাপতি এবং জার্মানভিত্তিক কর্মী ডলকুন ইসাকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ২০ বছরের জন্য গ্রেপ্তারের জন্য একটি রেড নোটিশ জারি করেছিল চীন। সেই সময় তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া এবং ইতালি যেসব দেশে ভ্রমণ করেছিলেন তার মধ্যে অন্তত পাঁচটি দেশে আটক বা চীনে প্রত্যর্পণের হুমকি পেয়েছেন।
রেড নোটিশটি ১৯৯৯ সালে চীনা কর্তৃপক্ষ জারি করেছিল। যেখানে তার বিরুদ্ধে ১৯৯৬ হত্যার অভিযোগ এনেছিল, যদিও তিনি ১৯৯৪ সালে চীন ছেড়ে তুরস্কে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে অবশ্য প্রমাণের অভাবে ২০১৮ সালে নোটিশ প্রত্যাহার করতে হয়েছিল।
উইঘুর কর্মী ৩৪ বছর বয়সী কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ার ইদিরেসি আইশান বা ইদ্রিস হাসান গত এক বছর ধরে মরক্কো কর্তৃপক্ষের হেফাজতে রয়েছেন। যদিও এটি একটি হাইপ্রোফাইল কেস নয়, তবে এটি অবশ্যই সর্বাধিক প্রচারিত একটি।
আইশানের বিরুদ্ধে একটি সন্ত্রাসী সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার অভিযোগ এনে চীন ইন্টারপোলকে একটি রেড নোটিশ জারি করার জন্য অনুরোধ করেছিল। পরে মরক্কো কর্তৃপক্ষ তাকে ২০২১ সালের ১৯-২০ জুলাই রাতে কাসাব্লাঙ্কা বিমানবন্দরে তুরস্ক থেকে আসার সময় গ্রেপ্তার করে। তিনি ২০১২ সাল থেকে সপরিবারে তুরস্কে বসবাস করছিলেন। সূত্র : তিব্বত প্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।