Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় নির্বাচন ও জনগণের রাজনীতি

কামরুল হাসান দর্পণ | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে বাগযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। কথার তুবড়ির মাধ্যমে যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে চলেছে। ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে প্রায়ই বলা হয়, আগামী জাতীয় নির্বাচনে বিএনপিকে আসতেই হবে। এছাড়া তাদের উপায় নেই। তা নাহলে দলটি অস্তিত্ব সংকটে পড়বে। অন্যদিকে বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, দলের চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যবে না। আর বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হবে না। দলটির পক্ষ থেকে ক্ষমতাসীন দলকে বরাবারই চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলা হচ্ছে, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে প্রমাণ করুক, কে সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের এক কথা, সংবিধানের বাইরে সে এক পা-ও যাবে না। ফলে নির্বাচনের আর অল্প সময়ের মধ্যে দেশের রাজনীতি কোনদিকে মোড় নেয়, সেটাই দেখার বিষয়।
দুই.
দেশে ক্ষমতার প্রতিদ্ব›দ্বী বলতে দুটো দলকেই বোঝায়। এক. আওয়ামী লীগ। দুই. বিএনপি। বড় জাহাজের সাথে যেমন ছোট ডিঙ্গি নৌকা বাঁধা থাকে, তেমনি এই দুই দলের সাথেও ছোট ছোট দল ডিঙ্গি নৌকার মতোই ভিড়ে রয়েছে। উভয় দল এই ছোট ছোট দল নিয়ে জোট বেঁধেছে। যদিও রাজনৈতিক মাঠে এসব দলের কার্যক্রম খুবই সীমিত। অন্যদিকে জাতীয় সংসদের বিরোধী দল হিসেবে পরিচিত জাতীয় পার্টির ভূমিকা সকলেরই জানা। দলটি সরকারেও আছে, আবার বিরোধী দলেও আছে। না ঘরকা না ঘাটকা। অবশ্য দলটি এভাবে থাকতেই পছন্দ করে। তবে বড় বড় কথা বলতে ছাড়ে না। বিএনপি নির্বাচনে না এলে ৩০০ আসনে নির্বাচন করার কথা বলছে দলটি। আর এলে সুরসুর করে ক্ষমতাসীন দলের ভেতরেই আসন ভাগাভাগিতে চলে যাবে। তার এ ধরনের আচরণের কারণে অনেকে তাকে ‘জ্বী হুজুর’-মার্কা দল বলে থাকে। ক্ষমতাসীন দল যা বলে, তাতেই জ্বী জ্বী করে। ফলে এ দলটিকে নিয়ে দেশের মানুষ খুব একটা মাথা ঘামায় না। তাদের সকল দৃষ্টি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও প্রধান বিরোধী দল বিএনপির দিকে। সকলেই জানেন, ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতে এই দুইটি দলই মূল প্রতিদ্ব›দ্বী। যথাযথভাবে ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে এ দুইটি দলের যে কোনো একটি ক্ষমতায় যাবে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপিকে কোনঠাসা অবস্থায় রেখে তার নির্বাচনী কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। যদি প্রশ্ন করা হয়, নির্বাচনে কার প্রস্তুতি কেমন? কে কি অস্ত্র নিয়ে নির্বাচনী যুদ্ধে অবতীর্ণ হবে? ক্ষমতাসীন দলের দিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, দলটি বেশ সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। অনেকে এ কথাও জোর দিয়ে বলছেন, আগামী নির্বাচনে তারাই ক্ষমতায় আসবে। এর কারণ হিসেবে তাদের অভিমত হচ্ছে, ক্ষমতাসীনদের মূল অস্ত্র প্রশাসন। তারা প্রশাসনকে এমনভাবে সাজিয়েছে যে, এখানে তাদের অনুগত লোক ছাড়া খুব কম লোকই আছে। পুরো প্রশাসন তার নিয়ন্ত্রণে। আগামী নির্বাচন এই প্রশাসন দিয়েই হবে। কাজেই, দলীয় লোকদের দিয়ে সাজানো প্রশাসন ক্ষমতাসীন দলের কথার বাইরে যাবে, এমন ভাবার কোনো কারণ নেই। এ সরকারের আমলে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে পৌরসভা, সিটি করপোরেশন নির্বাচনসহ যত নির্বাচন হয়েছে, সেদিকে দৃষ্টি দিলে দেখা যাবে, ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীরা প্রশাসনের পরোক্ষ-প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় যেভাবে প্রভাব বিস্তার করেছে, তাতে আগামী জাতীয় নির্বাচনেও যে তা করা হবে না, তার গ্যারান্টি দেয়া যায় না। এমন সাজানো প্রশাসনিক ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের হারানো এক প্রকার অসম্ভব। ক্ষমতাসীন দলও জোর দিয়েই বলছে, এভাবেই তাদের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যদি তাই হয়, তবে তাদের বিজয় হয়ে উঠবে সময়ের ব্যাপার মাত্র। প্রশ্ন হচ্ছে, এভাবে বিজয়ের মধ্যে কোনো গৌরব আছে কিনা? সাধারণ অর্থে নেই। কারণ জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত ও প্রত্যক্ষ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার মধ্যে যে শক্তি ও স্বস্তি থাকে, প্রশাসন নির্ভর নির্বাচনের মধ্যে তা থাকে না। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনে ক্ষমতাসীন দল সাংবিধানিকভাবে নির্বাচিত হয়েছে ঠিকই, তবে জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত না হওয়ায় তা মোটেও গৌরবের ছিল না, এখনও নয়। এতে অবশ্য ক্ষমতাসীন দল অগৌরব বোধ করছে না। সে সগৌরবেই ক্ষমতা ভোগ করে চলেছে এবং এর মাধ্যমেই আবারও ক্ষমতায় থাকার পথ অনেকটা পাকাপোক্ত করে ফেলেছে। আসলে ক্ষমতা এমন এক জিনিস যেভাবেই তা আসুক না কেন, বিজয়ী দল তা ভোগ করতে দ্বিধা করে না। তারা ভাল করেই জানে, প্রতিপক্ষকে যদি দমন-পীড়ন করে দুর্বল করে ফেলা যায়, মাঠে নামতে না দেয়া হয়, তখন জনগণ কী বলল, তাতে কিছু যায় আসে না। তাদের পক্ষ হয়ে বলার মতো কোনো প্রতিনিধিত্বশীল শক্তি যদি না থাকে, তবে জনগণের কথা কে শোনাবে? ক্ষমতা এমনই এক জিনিস যা দিয়ে লাজ-লজ্জা ঢেকে ফেলা যায়। কেউ যে কিছু বলে লজ্জা দেবে, এ সুযোগও ক্ষমতাসীনরা রাখে না। বিভিন্ন কৌশলে জনগণের দৃষ্টি তা থেকে সরিয়ে দেয়ার জন্য একটার পর একটা কৌশল অবলম্বন করে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলও এই কৌশল অবলম্বন করে চলেছে বলে প্রতীয়মাণ হচ্ছে। তাদের একমাত্র পথ উন্নয়নের জোয়ার বইয়ে দেয়ার পথ বেছে নেয়া। ইতোমধ্যে দেশব্যাপী বেশ জোরেসোরে তা চালিয়ে যাচ্ছে। নিজেদের দুর্বলতা ঢাকতে এসব উন্নয়ন ও সাফল্যের কথা বলে চলেছে। জনগণের দৃষ্টি একেকবার একেকদিক সরিয়ে তার মূল ত্রæটি ঢেকে ফেলার চেষ্টা করছে। এরূপ কাজ সাধারণত স্বৈর শাসকরা করে থাকে। আমরা যদি স্বৈরশাসকদের শাসনামলের দিকে তাকাই, তবে দেখব তারাও একই ধারায় ক্ষমতা ভোগ করেছে। এ ধরনের সরকার এবং স্বৈরাচারদের মধ্যে পার্থক্য শুধু সাংবিধানিক বৈধতা। স্বৈরাচারদের সাংবিধানিক বৈধতা থাকে না। অন্যদিকে সাংবিধানিক বৈধতাধারী সরকার এ অস্ত্রটি ব্যবহার করে তাদের ইচ্ছামতো দেশ পরিচালনা করে। তারা এতটাই নিস্পৃহ হয় যে, নিজেদের সমর্থকদেরও খুব একটা আমলে নেয় না। এর কারণ হচ্ছে, তারা জানে তাদের সমর্থক ও জনসাধারণের ভোটের মাধ্যমে তারা ক্ষমতায় আসেনি। কাজেই এ নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের মনোভাব এবং আচার-আচরণেও তাই প্রতীয়মাণ হচ্ছে। তারা ভাল করেই জানে, জনগণের কাছে যাওয়া মানে ক্ষমতায় থাকা অনিশ্চিত হয়ে পড়া। তার চেয়ে সাজানো-গোছানো প্রশাসন যন্ত্র দিয়ে পুনরায় ক্ষমতায় যেতে পারলে, তা যতই বিতর্কিত হোক, সামাল দেয়া কোনো ব্যাপার না। আবার যদি কোনো কারণে অপ্রত্যাশিতভাবে হেরে যায় এবং হেরে যাওয়ার ভয় থাকে তবে তার পরিণতি সম্পর্কেও তারা ভাল করে জানে। গত বছর মে মাসে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে শঙ্কার কথা প্রকাশ করে বলেছেন, অবৈধভাবে অর্জিত টাকা-পয়সা থাকবে না। ক্ষমতায় না থাকলে টাকা নিয়ে পালিয়ে থাকতে হবে। সরকার ক্ষমতা হারালে নেতাকর্মীদের দেশ ছেড়ে পালাতে হবে। সাম্প্রতিক কালে ক্ষমতাসীন দলের কেউ কেউ বলেছেন, ক্ষমতায় থাকতে না পারলে দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী বিপদে পড়বে। তাদের এ বক্তব্যের মধ্যেই প্রতিভাত হয়, নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দলের নেতা-কর্মীদের কতটা বেপরোয়া অবস্থায় নিয়ে গেছে যে, ক্ষমতায় আসতে না পারলে কতটা ভয়াবহ পরিণতি ভোগ করতে হতে পারে।
তিন.
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপির প্রস্তুতি কি তা এখনও পরিস্কার নয়। পত্র-পত্রিকায় একেক সময় একেক ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। কোনো কোনো প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বিএনপি নীরবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। কোনো কোনো প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিএনপি এখনো সাংগঠনিকভাবে গুছিয়ে উঠতে পারছে না। আর বিএনপির পক্ষ থেকে স্পষ্ট করেই বলা হচ্ছে, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং সহায়ক সরকার ছাড়া তারা নির্বাচনে যাবে না। আর বিএনপিকে ছাড়া নির্বাচন হতেও দেয়া হবে না। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিএনপিকে কেন নির্বাচনে ডাকতে হবে? নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা তাদের অধিকার। আমরা কেন বিএনপিকে ডাকব? আবার এ কথাও বলা হয়েছে, বিএনপি অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। কারণ আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করলে তাদের নিবন্ধন বাতিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনারও এমন কথা বলেছেন। তাদের কথা মতো, আগামী নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ছাড়া বিকল্প নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, আগামী নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কিনা? এ প্রশ্নের দুই ধরনের ব্যাখ্যা হতে পারে। প্রথমত বিএনপিকে প্রকাশ্যে জনসভা ও মিছিল করাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি যেভাবে ঘরবন্দি করে ফেলা হয়েছে, এ অবস্থা বজায় থাকলে দলটির পক্ষে নির্বাচন করা এক প্রকার অসম্ভব হয়ে পড়বে। আমাদের দেশে সাধারণত জাতীয় নির্বাচনের এক-দেড় বছর আগে থেকেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি ও হাওয়া বইতে থাকে। সরকার ও বিরোধী দল বড় বড় জনসভা ও মিছিল করে শক্তির জানান দেয়। এক্ষেত্রে একেবারে বিপরীত চিত্র দেখা যাচ্ছে। সরকারি দল বড় বড় জনসভা এবং ট্রেন মার্চ ও রোড মার্চ করলেও বিএনপিকে তা করতে দেয়া দূরে থাক, রাজধানীতে একটি জনসভার অনুমতি পেতে তাদের কত যে কাঠখড় পোহাতে হচ্ছে, তা সাধারণ মানুষ দেখছে। অনুমতির জন্য পুলিশের কাছে তাদের বারবার ধর্ণা দিতে হচ্ছে। ফলে বিএনপির রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের বিষয়টি অনেকটা ক্ষমতাসীন দলের অনুমতি নির্ভর হয়ে পড়েছে। অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন দলের এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই সমীচিন হতে পারে না। অপ্রস্তুত অবস্থায় বিএনপিকে নির্বাচনের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে বলে প্রতীয়মাণ হচ্ছে। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন দল বেশ জোরেসোরে একতরফাভাবে তার প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে। এটা ক্ষমতাসীন দলের একটা রাজনৈতিক কৌশল। এখন এ কৌশল বিএনপি কীভাবে মোকাবেলা করবে, এটা তার সাংগঠনিক দক্ষতার উপর নির্ভর করছে। তবে দলটির শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা বরাবরই বলে আসছেন, বিএনপি নির্বাচনমুখী দল। সবসময়ই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত থাকে। শত সীমাবদ্ধতার মাঝেও দলটির এই যে প্রস্তুতিমূলক কর্মকাণ্ড, এ থেকে প্রতীয়মাণ হয়, সে নির্বাচনে যেতে চায়। তবে তাদের শর্ত, খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং নির্বাচনী সহায়ক সরকার ও নির্দলীয় সরকারের অধীন ছাড়া নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে না। কোনো কোনো নেতা এ যুক্তি দিচ্ছেন, বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের অধীনেই যদি নির্বাচনে যেতে হয়, তবে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন কী দোষ করেছিল? তখনই তো যাওয়া যেত। তাহলে নেতা-কর্মীরাও এত হামলা-মামলা এবং জেল-জুলুমের শিকার হতো না। দলও বিপর্যয়ে পড়ত না। কাজেই নির্বাচনকালীন সহায়ক সরকার ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া যাবে না। বিএনপির বর্তমান অবস্থান বিবেচনায় বলা যায়, দলটি মাঝপথে দাঁড়িয়ে আছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছে এবং নির্বাচন অবাধ ও গ্রহণযোগ্য করার জন্য বিভিন্ন বক্তব্য-বিবৃতি দিয়ে সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির কৌশল নিয়েছে। সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে থেকে যদি একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টি করা যায়, তবে বিএনপির এ দাবী কারো উপেক্ষা করার কারণ নেই। উপেক্ষা তারাই করবে, ক্ষমতায় না থাকলে যাদের দেশ ছেড়ে পালাতে হবে।
চার.
এখন সময় বদলেছে। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিতেও ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলোর মনোভাবেও পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমাদের দেশের ব্যাপারে অনেক আগে থেকেই ইউরোপ-আমেরিকার ব্যাপক আগ্রহ রয়েছে। গত জাতীয় নির্বাচনটি এসব দেশের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এখনও তাদের মনোভাব একই রয়েছে। আবার ভারত অনেকটা একতরফা সমর্থনের মাধ্যমে যেভাবে নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে, সে ভারতের মনোভাবেও পরিবর্তন এসেছে বলে পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন। এ প্রেক্ষিতে, নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসবে, দেশের দুই বড় দলের মধ্যে পাল্টাপাল্টি কথা চলতেই থাকবে। পারস্পরিক বিদ্বেষের রাজনীতি উত্তুঙ্গে উঠবে। এখনই তার আভাস পাওয়া যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে কথা হবে, বাগযুদ্ধ হবে, তাতে কোনো আপত্তি নেই। তবে তা গঠনমূলক ও রুচির মধ্যে থাকা বাঞ্চনীয়। জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার বাস্তবানুগ প্রতিফলন থাকা জরুরী। কথার ফুলঝুরি এবং কথার কথা বা রাজনৈতিক উদ্দেশ প্রণোদিত কথার অপসংস্কৃতি থেকে সরে আসা উচিত। জনগণের সামনে যে কথা বলা হবে তা ভেবেচিন্তে বলা এবং বিশ্বাসযোগ্যভাবে উপস্থাপন করা অপরিহার্য।
[email protected]



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচন

২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন