রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
কথায় আছে নদীর পানি বৃদ্ধি পেলে নদীতে মাছ কম ধরা পড়ে, আর পানি কমলে নদীতে বেশি মাছ ধরা পড়ে। এখন পদ্মা নদীর পানি কমার সাথে সাথে নদীতে বেশি মাছ ধরা পড়তে শুরু করেছে। কথাটি বাস্তবে পরিণত হয়েছে, তাই জেলের পরিবারগুলোতে খুশির বন্যা বইতে শুরু করেছে। কিছুদিন আগেই হু হু করে উত্তাল পদ্মার পানি বেড়েই চলেছিল। তখন নদীতে মাছের দেখা মেলা খুবই কষ্ঠকর ছিল, জেলে পরিবারদের মাঝে হতাশা নেমে এসেছিল। পানি কমার সাথে সাথে অব্যাহতভাবে মাছ ধরা বেশি পড়ছে, তাই পদ্মা নদীর দু’ধারে যেখানে সেখানে মাছ বিক্রি হচ্ছে। এ যেন অন্যরকম মাছের বাজার।
প্রতি বছরই পদ্মা নদীর পানি কমতে শুরু করলে হরেক রকমের মাছ ধরা পরে জেলেদের জালে। সেই মাছ এবারো ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে জেলেদের জালে। সারারাত নৌকা আর জাল দিয়ে পদ্মার বুক চিরে চষে বেড়িয়ে মাঠ ধরে খুব ভোরবেলা পদ্মা নদীর পাড়েই জমজমাট হাট বসিয়ে মাছ কেনা বেচা করতে পারছে। শুক্রবার খুব সকালে গোদাগাড়ী পৌর এলাকার রেলওয়ে বাজার, হরিসংপুর, প্রেমতলী, নাজিরপুর, সারাংপুর, সুলতানগজ্ঞ এলাকায় ভোরবেলায় পদ্মা নদীর পাড়ে গিয়ে দেখা গেছে সেই চিত্র। ছোট ছোট ডিঙ্গি নৌকায় করে পদ্মা নদী বেয়ে মাছ ধরে জেলেরা পদ্মার পাড়ে নৌকা ভিড়িয়ে দিচ্ছে। আর পদ্মা নদীর পাড়ের উপরে থাকা মাছ ক্রেতারা অপেক্ষা করতে আছে। নৌকা কিনারে ভেড়া মাত্রই মাছে ক্রেতারা নৌকার কাছে ছুটে গিয়ে মাছ দেখতে ভিড় জমিয়ে দিচ্ছে। যার যেটা মাছ সেই মাছ পছন্দ হলেই সরাসরি জেলেদের সাথে মাছ দামদর করছে। দামে মিললেই সরাসরি নদী থেকে টাটকা মাছটি কেনা বেচা হয়ে যাচ্ছে। তবে এখানে মজার বিষয় হলো সরাসরি জেলেদের নিকট হতে সাধারণ ক্রেতারা মাছ তুলনামূলকভাবে কম দামে বিক্রয় করতে পারছেন। কেননা এই মাছ আড়ৎ হতে ক্রয় করতে হলে পাইকারেরা আড়ৎ ঘর হতে মাছ ক্রয় করলে ক্রেতা ও বিক্রেতাকে আড়ৎতের খাজনা দিতে হতো। সেই হিসেবে এখানে ক্রেতারা সরাসরি মাছ ক্রয় করতে পাড়ায় আড়ৎ খরচ হতে বেঁচে যাচ্ছেন ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই। ফলে তারা কোনো রকম ঝঞ্ঝাট ঝামেলা ছাড়াই মনের মতো মাছ ক্রয়-বিক্রয় করতে পারছেন। ফলে অড়ৎদারগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে তার দাবি করেছেন। রাজাবাড়ী এলাকার মো. কামরুজ্জামান বলেন, খুব কমদামে নদীর তাজা মাছ কিনলাম, সত্যিই মাছগুলো খুব ভালো মানের। আরো কয়েকদিন নদীর তাজা মাছ পাওয়া যেতে পারে।
অনেক মাছের পাইকারেরাও এই পদ্মার পাড়ে মাছ ক্রয় করতে আসতেও দেখা গেছে। মাছের পাইকার জামাল শেখ জানান, আমাদের রেলবাজার মাছের আড়তে গেলে খাজনাসহ নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয় আড়তদারের কাছ থেকে। এই পদ্মার পাড়ে মাছ ক্রয় করতে কোনো ঝামেলা হয় না বলে জানান। এই বাজারে শুধু নদীর আসল মাছ পাওয়া যায়। আড়তে অনেক সময় পুকুরের মাছ হলেও নদীর বলে বেচাকোন হয়। মাছ কিনতে আসা বিপ্লব বলেন, এখানে সকাল সকাল মাছ ক্রয় করতে আসি সরাসরি নদীর সুস্বাদু মাছটি পাই। অন্যান্য বাজারের তুলনায় এখানে মাছের দাম কম পাই। জেলেদের কাছে সরাসরি মাছ ক্রয় করতে পাড়ায় দাম কম হয়। সাধারণ বাজারে মাছ ক্রয় করতে গেলে দাম দ্বিগুণ হয় বলে জানান। তিনি দুই কেজি মধ্যম আকারের চিংড়ি মাছ ৪০০ টাকা কেজি দরে কিনেছেন বলে জানান। সুলতানগঞ্জ এলাকার আলহাজ্ব গোলাম রাব্বানী জানান, এখন সকাল বেলায় জেলেদের কাছ থেকে মাছ ক্রয় করতে পারি কমদামে তিনি দুই কেজি বড় চিংড়ি ৬০০ টাকায় ক্রয় করছেন বলে জানান। শুধু এই মাছই না, আইড়, চিতল, রিঠাসহ হরেক রকমের ছোট-বড় মাছ কম দামে বেচা কেনা হয় এই বাজারে। মাছ ক্রেতা ইব্রাহিম জানান, তিনি একজন পেশাদার মাছচাষি। পুকুরে দীর্ঘদিন থেকে মাছ চাষ করে আসছেন। সে পুকুরে আইড় মাছ ছাড়ার জন্য মাছ ক্রয় করতে এসেছে। এই পদ্মার তীরে গেলেই চোখে পরে নদীর তীরে সারিসারি জেলেরা নৌকা ভিড়িয়ে দিয়েছে, আর এলাকাবাসী ও ক্রেতারা ইচ্ছেমতো মাছ ক্রয় করছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।