মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ৪ অক্টোরব তার বিশেষ আইএল-৯৬ বিমানে করে নয়া দিল্লি যাচ্ছেন। এবারের রুশ-ভারত শীর্ষ বৈঠকটির দিকে সবার তীক্ষ্ণ নজর থাকবে। গত মাসে দিল্লিতে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের ‘২+২’ সংলাপের পর যে পরিবর্তন হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে, তার প্রেক্ষাপটে পুতিনের ভারত সফর বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে ওঠেছে। বিশেষ করে রুশ অস্ত্র কেনা হলে ভারতের ওপর অবরোধ আরোপ করার মার্কিন হুমকির ফলে সত্যি কী ঘটে, সে ব্যাপারে সবার নজর থাকবে।
রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্র না কেনার জন্য ভারতকে হুঁশিয়ার করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। অথচ ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী সীতারামন ১৭ সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে মিডিয়াকে বলেছেন যে ওই ক্রয়চুক্তি ‘চূড়ান্ত পর্যায়ে’ রয়েছে। ভারত ৪০,০০০ কোটি রুপিতে চারটি এস-৪০০ কেনার কথা ভাবছে। এশিয়া ও প্যাসিফিক নিরাপত্তাবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী স্করিভার ভারতের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ না হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি ওয়াশিংটনে বলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ নতুন প্লাটফর্ম ও সিস্টেম কেনা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য ‘অত্যন্ত উদ্বেগের’ বিষয় হবে।
এর আগে মে মাসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সোচিতে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সাথে অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে বলেছিলেন যে রাশিয়ার সাথে ভারতের ‘বিশেষ ও সুবিধাজনক কৌশলগত সম্পর্ক’ রয়েছে। একসময় মিগ-২১ বিমান রাশিয়ার কাছে ভারতের অস্ত্র বাজারের দুয়ার খুলে দিয়েছিল। এখন পর্যন্ত রুশ নির্মিত জঙ্গিবিমান, রণতরী, ট্যাঙ্ক ও সাবমেরিন ভারতে যাচ্ছে। ভারতীয় অস্ত্র ভাণ্ডারের ৬০ ভাগ সরঞ্জামই রাশিয়ায় নির্মিত।
ওয়াশিংটনের বিরক্ত হওয়ার কারণ বোধগম্য। যুক্তরাষ্ট্র এখন ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র রফতানিকারক। গত এক দশকে তারা ভারতে ১৫ বিলিয়ন ডলারের অস্ত্র বিক্রি করেছে। কিন্তু তবুও রাশিয়াকে এই বাজার থেকে সরাতে পারেনি।
এবারের শীর্ষ বৈঠকে নর্থ-সাউথ করিডোরও গুরুত্ব পাবে। এই সংক্ষিপ্ত রুটটি দিয়ে মুম্বাই থেকে ইরান ও রাশিয়া হয়ে ভারতীয় পণ্য চলাচল করতে পারবে। তবে প্রতিরক্ষা সম্পর্কই হবে প্রধান বিষয়।
রাশিয়ার অস্ত্র আরো দুই দশক পর্যন্ত ভারতের বাজারে সরবরাহ অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা হতে পারে মোদি-পুতিন বৈঠকে। দুই পক্ষের মধ্যে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা ছাড়াও আরো অনেক অস্ত্র নিয়ে আলোচনা হতে পারে। ফ্রান্স থেকে ৩৬টি রাফাল জঙ্গি বিমান কেনার চুক্তি হলেও ভারতীয় বিমান বাহিনীতে আরো বিমান প্রয়োজন। তাছাড়া ২ বিলিয়ন ডলারে আরেকটি আকুলা-ক্লাস পরমাণু-চালিত অ্যাটাক সাবমেরিন কেনার কথাও ভাবছে ভারত। দুই বিলিয়ন ডলারের চারটি ক্রিভস-ক্লাস ফ্রিগেট, ২০০টি কেএ লাইট ইউটিলিটি হেলিকপ্টার কেনার আলোচনাও হতে পারে। ভারত তার সেনাবাহিনীর জন্য তার দেশে ছয় লাখ একে-১০৩ অ্যাসাল্ট রাইফেল তৈরি করার ব্যাপারেও আগ্রহী।
রুশ কর্মকর্তারা ৫ অক্টোবরের শীর্ষ বৈঠককে ‘লিটমাস টেস্ট’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতের সাবেক হাই কমিশনার জি পার্থসারথী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের ঘনিষ্ঠতাকে রাশিয়া সন্দেহের চোখে দেখছে। এই ঘনিষ্ঠতা ত্রিদেশীয় সামরিক মহড়া, হার্ডওয়্যার বিক্রি, বাহরাইনে মার্কিন নৌবাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ডে একটি ভারতীয় নৌবাহিনীর বহরকে সংযুক্ত করার দিকে নিয়ে গেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতে সই করা কয়েকটি কৌশলগত চুক্তি নিয়েও রাশিয়া উদ্বিগ্ন। এসবের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ভারতের সম্পর্ক ক্রমাগত নিবিড় হচ্ছে। রাশিয়া এখন একই ধরনের চুক্তি তাদের সাথে করার জন্যও ভারতকে চাপ দিচ্ছে। এদিকে রাশিয়ার সাথে চীনা ঘনিষ্ঠতায় পাশ্চাত্য যেমন উদ্বিগ্ন, ভারতও তা সহজভাবে নিচ্ছে না। এদিকে যুক্তরাষ্ট্র এখন পাকিস্তানের প্রতি বৈরী হয়ে ওঠছে। কিন্তু এই ফাঁকে পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করছে রাশিয়া। সূত্রঃ টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।