২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
ব্যাপারটা বিব্রতকর। অভিবাবকের জন্য এবং বাচ্চার জন্যও অবশ্যই। যেই বয়সে বাচ্চার নিজে থেকে মলত্যাগের বেগ বোঝার কথা, সে হয়ত ভয়ে মুখ কাঁচুমাচু করে বলছে, আম্মু প্যান্টে টয়লেট হয়ে গেছে। এই সমস্যাকে চিকিৎসাবিদ্যায় বলে এনকপ্রেসিস। সাধারণত ৪ বছরের বেশি বয়সের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এটি রোগ হিসেবে চিন্তা করা হয়। সে যদি ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছাকৃতভাবে ‘কুস্থানে’ মলত্যাগ করে তবেই সমস্যা। এই ‘কুস্থান’ হচ্ছে পটি কিংবা টয়লেট ছাড়া এমন কোন জায়গায় মলত্যাগ করা, যেখানে এটা করা সাজে না। আর ‘এনকপ্রেসিস’ হতে হলে অন্তত টানা তিনমাসে কমপক্ষে একবার করে হলেও এরকম মলত্যাগ হতে হবে।
কেন হয় এরকম? এক কথায় বলা মুশকিল। অনেকগুলো কারণ আছে এর। খুব সহজভাবে জিনিসটা এভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। কোন কারণে যদি বাচ্চা পায়খানা আটকে রাখে তাহলে আমাদের অন্ত্র এটা থেকে পানি শুষে নেয়। পায়খানা ধীরে ধীরে আরও শক্ত হতে থাকে, বাচ্চা মলত্যাগ করতে গেলে ব্যাথা অনুভব করে, সে পায়খানা আরও আটকে রাখে। একসময় মলদ্বারের স্বাভাবিক অনুভূতি হ্রাস পায় আর বাচ্চার অজান্তেই অপেক্ষাকৃত নরম মল শক্ত মলের চারপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। বাচ্চা দেখে তার প্যান্ট নষ্ট হয়ে গেছে। সাধারণত এই বাচ্চাদের বিভিন্ন বংশগত, আবেগিয় (পারিবারিক কলহ, অতিরিক্ত চাপ, পরীক্ষাভীতি) এবং বিকাশজনিত ঘাটতি থাকতে পারে।
পাঁচ থেকে ছয় বছরের বাচ্চাদের শতকরা ৪ ভাগ, আর এগারো থেকে বারো বছরের বাচ্চাদের শতকরা ১.৫ ভাগ এই সমস্যায় ভুগে থাকে। তবে কারও কারও সমস্যা জন্মের প্রথম বছর থেকেও হতে পারে (প্রাথমিক)। ছেলে বাচ্চাদের সমস্যাটি একটু বেশিই হয়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আবার ঠিকও হয়ে যায়।
অনেক বাচ্চার সাথে পেটে ব্যাথা, পেশাব ধরে রাখতে না পারা কিংবা সংক্রমণ, অরুচি, শরীরের বৃদ্ধি ঠিকমত না হওয়া, পড়ালেখায় পিছিয়ে পড়া এসব সমস্যা থাকতে পারে। মানসিক চাপে থাকতে থাকতে ব্যাবহারগত পরিবর্তন, বিষণ্ণতাও হতে পারে। স্কুল-পড়ুয়া বাচ্চাদের সাথে কথা বলে জানতে পারবেন, কোন কারণে স্কুলের টয়লেট পছন্দ না হওয়াতে তারা প্রায়ই পায়খানা আটকে রাখে। এতে সমস্যা বরং আরও তীব্র হয়।
সাধারণত রোগের ইতিহাস আর হাতের পরীক্ষা দিয়েই এই অসুখটি ধরা পড়ে। চিকিৎসার প্রথম এবং প্রধান ধাপ হচ্ছে বাচ্চাকে এবং অভিবাবকদের আশ্বস্ত করা। কোন ভাবেই বাচ্চাকে প্যান্ট নষ্টের জন্য মানসিক চাপ দেওয়া যাবে না। বরং শুকনো কাপড়ের জন্য তাকে পুরস্কৃত করা যেতে পারে। পাশাপাশি বাচ্চা যদি পরিবারে, স্কুলে কোন ব্যাপারে আতঙ্কিত, চাপে থাকে সেটাও খুঁজে বের করতে হবে। ওষুধের কাজ হচ্ছে পায়খানা নরম করে আটকে থাকা মল বের করে দেওয়া। গিøসারিন, এনেমা, মিল্ক অফ ম্যাগনেশিয়া, ল্যাক্টুলোজ জাতীয় ওষুধ এক্ষেত্রে কাজ করে। এরপরেও সমস্যা থাকলে চিকিৎসককে অন্য কোন জটিল রোগ আছে কিনা চিন্তা করতে হবে।
শুধু এই রোগেই নয়, সবার নিয়মিত স্বাভাবিক মলত্যাগের অভ্যাসের জন্য পর্যাপ্ত পানি, প্রচুর আঁশ জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে হবে। পেশাব পায়খানা আটকে রাখা অনেক সময়ই বড় সমস্যা তৈরি করে।
রেজিস্ট্রার (শিশু বিভাগ), আইসিএমএইচ
মাতুইয়াল, ঢাকা। ০১৯১২২৪২১৬৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।