জনশক্তি রপ্তানিকারক ব্যবসায়ী সিদ্দিক মুন্সি হত্যার ঘটনার আসামি নুরা ওরফে পিচ্চি নুরাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত নয়টার দিকে বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁকে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) গ্রেপ্তার করে।
একই এলাকায় ডিবির আরেক অভিযানে বাড্ডার মাছ ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে বাদশা হত্যার আসামি সবুজকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এই দুজনের গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ডিবির উপকমিশনার (উত্তর) মশিউর রহমান। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, সিদ্দিক মুন্সি হত্যার তদন্তে পিচ্চি নুরার জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে। সিদ্দিককে হত্যার পর নুরা বাইরে থেকে কলাপসিবল গেট তালা দিয়েছিল। এই হত্যার জন্য ব্যবহৃত অস্ত্রও তিনি বহন করেছিলেন। নুরা বাড্ডা এলাকায় একাধিক ছিনতাই মামলার আসামি।
গত বছরের ১৪ নভেম্বর রাজধানীর বনানীর বি ব্লকের ৪ নম্বর রোডের ১১৩ নম্বর বাড়িতে এমএস মুন্সি ওভারসিজ নামে নিজের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন সিদ্দিক মুন্সি। ওই সময় দুর্বৃত্তদের এলোপাতাড়ি গুলিতে প্রতিষ্ঠানের তিন কর্মচারী মোস্তাক হোসেন, মোখলেছুর রহমান ও মিরাজ পারভেজ আহত হন। পুলিশ ওই হত্যাকে ‘পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড’ বলে উল্লেখ করেছিল। কারণ, সিদ্দিক মুন্সি কারও কাছ থেকে টাকা নেননি। তাঁর কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততাও পাওয়া যায়নি। স্বজনেরা দাবি করেছিলেন, চাঁদা না দেওয়ায় সিদ্দিক মুন্সিকে গুলি করে হত্যা করা হয়।
বাদশা হত্যা মামলার অন্যতম আসামি সবুজকে দুই হাজার ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানান ডিবি উপকমিশনার মশিউর রহমান। সবুজ একসময় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। কিন্তু একপর্যায়ে নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এমনকি স্নাতকের (সম্মান) তৃতীয় বর্ষে এসে পড়ালেখা ছেড়ে দেন। রামপুরা ও বাড্ডা এলাকায় হত্যার ও মাদক ব্যবসার একাধিক ঘটনার সঙ্গে সবুজ জড়িত।
এ বছরের ১৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানী মেরুল বাড্ডার মাছ বাজার এলাকায় দিনেদুপুরে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন মাছ ব্যবসায়ী আবুল বাসার ওরফে বাদশা। তাঁকে হত্যা করে অজ্ঞাতপরিচয় চারজন সেখান থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় নুরুল ইসলাম ওরফে নুরী (৩৫) নামের একজনকে জনতা ধাওয়া করে হাতিরঝিলে অস্ত্রসহ ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। এর পরদিন ১৮ ফেব্রুয়ারি ভোরে বাড্ডার সাতারকুল এলাকায় নুরুল ইসলাম ডিবির সঙ্গে ‘
বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হন। নুরুল ইসলাম জনশক্তি রপ্তানিকারক সিদ্দিক মুন্সি হত্যায়ও জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছিল পুলিশ।
সিদ্দিক মুন্সি ও বাদশা হত্যার ঘটনার আরেক আসামি শরিফুল ইসলাম (২৮) গত রোববার ১০ জুন রাতে ভাটারা থানার এক শ ফিট গরুর হাট এলাকায় ডিবির সঙ্গে ‘
বন্দুকযুদ্ধের’ মারা যান। এর আগেও সিদ্দিক মুন্সি হত্যার ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এঁদের মধ্যে দুজন বন্দুযুদ্ধে নিহত হন।