মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরানের ওপর ‘ইতিহাসের সবচেয়ে কঠিন’ নিষেধাজ্ঞা আরোপের হুমকি দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও।
ইরান তাদের পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্খা পরিত্যাগ করা, ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি বন্ধ করা এবং প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা বন্ধ করাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সব দাবি মেনে না নিলে এ নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়বে বলে সোমবার জানিয়েছেন পম্পেও।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ৮ মে ইরানের পরমাণু চুক্তি থেকে সরে এসে দেশটির উপর নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের ঘোষণা দেওয়ার পর পম্পেও এ কড়া কথা শোনালেন। এর মধ্য দিয়ে ওয়াশিংটন এবং তেহরানের মধ্যে গুরুতর সংঘর্ষের পট প্রস্তুত হল বলেই মনে করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হওয়ার পর পম্পেও তার প্রথম বৈদেশিক নীতি বিষয়ক ভাষণে ইরানকে ওই হুমকি দেন। তিনি আরো বলেন, “ইরানের শাসকরা দেশের জনগণ এবং নিজেদের জন্য যে অগ্রহণযোগ্য এবং নিস্ফল পথ বেছে নিয়েছে তা থেকে সরে আসলে গাদা গাদা নিষেধাজ্ঞা কেবল তাদের জন্য আরো যন্ত্রণাদায়কই হবে।”
পম্পেও বলেন, “এ নিষেধাজ্ঞাগুলো হবে ইতিহাসে আমাদের আরোপ করা এ যাবৎকালের সবচেয়ে কঠিন নিষেধাজ্ঞা।”
নিষেধাজ্ঞাগুলো কার্যকর হলে ইরানকে তাদের অর্থনীতিকে বাঁচিয়ে রাখতে রীতিমত যুদ্ধ করতে হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রভাব বিস্তারের নীতিরও সমালোচনা করেছেন পম্পেও। তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র বিদেশে ইরানি তৎপরতার মূলোৎপাটন করবে এবং দোসরদের নির্মূল করবে। সিরিয়া থেকে ইরানকে তাদের বাহিনীও সরিয়ে আনার কথা বলেন পম্পেও।
কিন্তু ইরান যুক্তরাষ্ট্রের কোনো দাবির কাছে মাথা নত করার সম্ভাবনা তেমন নেই।
পম্পেও বলেছেন, ইরানের যে কোনো আক্রমণ প্রতিহত করতেও তিনি পেন্টাগন এবং আরব মিত্রদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবেন।
বৈদেশিক নীতি বিষয়ক প্রথম ভাষণে পম্পেও ইরানকে আটকাতে ‘প্ল্যান বি’ ঘোষণা করেছেন।
সেখানে তেহরানের সঙ্গে ‘নতুন চুক্তি’ করতে ওয়াশিংটন থেকে ১২টি দাবি পূরণের কথা বলা হয়েছে। ওই দাবির মধ্যে সিরিয়া থেকে ইরানের সব সেনা প্রত্যাহার এবং ইয়েমেনে সরকার বিরোধীদের সমর্থন দেওয়া বন্ধ করতে বলা হয়।
পম্পেও বলেন, যখন ওয়াশিংটনের মনে হবে ইরান তাদের নীতিতে পরিবর্তন এনেছে কেবল তখনই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হবে।
“আমরা ইরানের উপর নজিরবিহীন অর্থনৈতিক চাপ প্রয়োগ করব। বিষয়টি আমরা কতটা গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছি সেটি নিয়ে তেহরানের নেতাদের কোনো ধরনের সন্দেহের মধ্যে থাকা উচিত না। ইরান ভবিষ্যতে মধ্যপ্রাচ্যকে চাপে ফেলার মত স্বেচ্ছাচারী আর কখনোই হতে পারবে না।”
ইসরায়েল পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রশংসা করলেও জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছে এবং চুক্তির অন্য দুই দেশ রাশিয়া ও চীনকে নিয়ে চুক্তি বাঁচানোর চেষ্টা করছে।
২০১৫ সালে ইরান পরমাণু চুক্তির পর ইউরোপের অনেক ফার্ম দেশটিতে বিনিয়োগ করেছিল। এখন যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে সরে গিয়ে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করায় তাদের ইরানে করা বিনিয়োগ বাঁচানো বা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য এ দুটির মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বাধ্য হতে হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার কোপে পড়ে বিশ্ববাজার হারাতে হতে পারে আশঙ্কায় অনেক কোম্পানি ক্ষতি স্বীকার করে হলেও এরই মধ্যে ইরানে ব্যবসা গুটিয়ে নিতে শুরু করেছে।
পম্পেও স্পষ্ট করেই তার ইউরোপের মিত্রদের সহায়তা পাওয়ার আশার কথা বলেছেন। সেইসঙ্গে তিনি অস্ট্রেলিয়া, বাহরাইন, মিশর, ভারত, জাপান, জর্ডান, কুয়েত, ওমান, কাতার, সৌদি আরব, দক্ষিণ কোরিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাতকে তাদের এ সিদ্ধান্তে সমর্থন দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।