মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইরানের একটি প্রত্যন্ত বন্দর ভারত ও চীনের মধ্যে পরবর্তী ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্ব›িদ্বতার কারণ হয়ে উঠতে যাচ্ছে। কৌশলগত চাবাহার বন্দরের উন্নয়নের জন্য ৫০০ মিলিয়ন ডলার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। রাজধানী তেহরান থেকে প্রায় ১৮০০ কিলোমিটার দূরে এই বন্দরের অবস্থান। সেই ২০০৩ সালে প্রথম ভারত এখানে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ জানিয়েছিল। কিন্তু বারবার দেরি করার কারণে বন্দরের নির্মাণকাজ এগিয়ে নিতে এখন চীনের দ্বারস্থ হচ্ছে ইরান।
গত মার্চ মাসে ইসলামাবাদ সফরের সময় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ জানিয়েছিলেন যে, তারা চাবাহার বন্দরে পাকিস্তান ও চীনা বিনিয়োগকে স্বাগত জানাবেন। তিনি এমনকি গোয়াদার বন্দরের ক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতার কথাও উল্লেখ করেছিলেন যেটা চীনের বেল্ট-অ্যান্ড-রোড ইনিশিয়েটিভের অংশ।
অবস্থানের এই পরিবর্তন ইরানের দিক থেকে বোধগম্য। তারা চায় চাবাহার বন্দর অর্থনৈতিকভাবে লাভজনক হয়ে উঠুক। কিন্তু ভারতের জন্য এটা কৌশলগত ক্ষতির কারণ হতে পারে। কারণ তারা ভারত মহাসাগরে চীনের প্রভাব বিস্তার নিয়ে উদ্বিগ্ন। গোয়াদার বন্দরে চীনের সামরিক ঘাঁটি গড়ে উঠতে পারে, এ ধরনের খবরে এমনিতেই ভারত উদ্বিগ্ন। এবং তাদের আশঙ্কা চীনের পৃষ্ঠপোকতায় নির্মিত মিয়ানমার, বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার অন্যান্য বন্দরগুলোও এর সাথে যুক্ত হতে পারে।
বেইজিং আনুষ্ঠানিকভাবে বিনিয়োগ করলে তা চাবাহার বন্দরে ভারতের কৌশলগত সুবিধাজনক অবস্থানকে দুর্বল করে দেবে। চাবাহার বন্দরটি পাকিস্তান পশ্চিম সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত। পাকিস্তানে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য চীনা প্রেসিডেন্ট শি-এর ৫০ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের যে পরিকল্পনা রয়েছে, গোয়াদর বন্দর তার মধ্যে অন্যতম এবং চীনা ব্যবসায়ীরা এরই মধ্যে সেখানে শক্ত অবস্থান গড়ে তুলেছেন। এ ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া জানতে ই-মেইল করা হলেও চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিকভাবে কোন প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।
অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কলেজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ডেভিড ব্রুসটার বলেছেন, “দিল্লীর দৃষ্টিভঙ্গি হলো চীন যদি চাবাহারে বন্দর পরিচালনা কার্যক্রমে জড়িত না-ও হয়, এরপরও সেখানে তাদের যে কোন ধরনের উপস্থিতি স্থানীয় কর্তৃপক্ষের উপর ভারতের প্রভাব খর্ব করার জন্য ব্যবহার করা হতে পারে। তাছাড়া ভারতের কর্মকান্ডের উপর নজরদারির জন্যও তাদের উপস্থিতিকে কাজে লাগানো হতে পারে।”
চীন ইরানের প্রস্তাব গ্রহণ করবে কি না, এটা এখনও নিশ্চিত হওয়া না গেলেও, এটা নিশ্চিত যে, বেইজিংয়ের মতো বিত্তশালী পক্ষ এখানে জড়িত হলে বন্দরের উন্নয়ন কার্যক্রমের গতি নিশ্চিতভাবে বেড়ে যাবে।
নয়াদিল্লী-ভিত্তিক অবজার্ভার রিসার্চ ফাউন্ডেশান থিঙ্ক-ট্যাঙ্কের ফেলো মনোজ যোশি বলেন, চীনের সাথে ইরানের স্থলপথে ট্রেন যোগাযোগ রয়েছে এবং ইরানে চীনের বিশাল বিনিয়োগ রয়েছে। তিনি বলেন, “চীনের অবস্থান সেখানে ভারতের চেয়ে অনেক গভীর।”
বিনিয়োগের জন্য ইরানের আহ্বানকে পাকিস্তান স্বাগত জানিয়েছে। গোয়াদার বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান দোস্তাইন খান জামালদিনি টেলিফোনে জানান, “তাদের দিক থেকে আসা এটা প্রথম একটা ইতিবাচক প্রস্তাব।” তিনি বলেন, দুই দেশ এরইমধ্যে গোয়াদার ও করাচি বন্দর ও ইরানের চাবাহার বন্দর ও বন্দর আব্বাসের মধ্যে নতুন ফেরি সার্ভিস চালুর বিষয় নিয়ে আলোচনা করছে।
দুই বন্দরের মধ্যে যোগাযোগটা অনেকটা অস্বাভাবিক হবে। ভারত আর পাকিস্তান ঐতিহাসিকভাবে পরস্পর পরস্পরের শত্রু এবং বেশ কতগুলো যুদ্ধ হয়েছে দুই দেশের মধ্যে। অন্যদিকে ভারত ও চীন স¤প্রতি হিমালয় অঞ্চলে মুখোমুখি হয়েছিল। দুই দেশই দক্ষিণ এশিয়ায় ভূ-রাজনৈতিক প্রাধান্য বিস্তারের লড়াইয়ে নেমেছে। এরপরও, ইরানের জন্য বন্দর উন্নয়নের বিষয়টা গুরুত্বপূর্ণ। তেহরানের ইরান-ভারত চেম্বার অব কমার্সের প্রধান ইব্রাহিম জামিলী বলেছেন, ওমান উপসাগরে বাণিজ্যের অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হবে এই চাবাহার বন্দর।
সূত্র : সাউথ এশিয়ান মনিটর।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।