২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
‘অটিজম’ অসুখটির নাম আজ অনেকেরই জানা। সরকারের উপযুক্ত প্রচার আর মিডিয়ার কল্যাণে আমরা অনেকেই এই রোগটি সম্বন্ধে কিছু কিছু জানি। কার্টুন এবং পাঠ্যপুস্তকে আসার ফলে বাচ্চারাও অনেকে এই রোগটির নাম জানে।
এই রোগটি নির্ধারণের জন্য কিছু লক্ষণ মিলতে হয়। তারপরেই শুরু হয় চিকিৎসা। তবে বর্তমানে চিকিৎসকরা বলছেন, কিছু চিহ্ন বা লক্ষণ আছে, যেগুলো অসুখটি প্রকট হওয়ার আগেই ধারণা দিবে যে, বাচ্চাটির অটিজম হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এরকম পাঁচটি চিহ্নকে বলা হয় ‘অটিজমের লাল-নিশানা চিহ্ন’ (RED FLAGS for AUTISM )। ‘লাল’ বিপদের রঙ। লাল নিশানা দেখে সতর্ক হতে হবে, সামনে বিপদ আসতে পারে।
১ম চিহ্নঃ একটি স্বাভাবিক বাচ্চা জন্মের তিন থেকে ছয় মাসের মধ্যে ‘কূ-কূ’ (আভিধানিক অর্থ পাখির কিচির মিচিরের মত শব্দ) জাতীয় ধ্বনি তৈরি করে, যা পরবর্তীতে ‘বা-বা’ জাতীয় ধ্বনিতে পরিণত হয়। কোন বাচ্চার বারো মাস হয়ে গেছে, অথচ ‘কূ-কূ’, কিংবা ‘বা-বা’ ধ্বনি করে না, তখন দুশ্চিন্তার কারণ আছে।
২য় চিহ্নঃ আপনি একটি বাচ্চার সাথে খেলনা দিয়ে খেলছেন, নানান মজার অঙ্গভঙ্গি করছেন। বাচাটি আপনার হাত থেকে খেলনা নিচ্ছে, আবার দিচ্ছে। আবার কোন বিশেষ বস্তুর প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন, সেও তাকাচ্ছে (যেমন, এই যে দেখ সুন্দর পুতুল, ইত্যাদি)। একটি সাত থেকে দশ মাসের বাচ্চার এমন অঙ্গভঙ্গির খেলা রপ্ত করতে পারার কথা। কিন্তু বারো মাস হয়ে গেছে, কিন্তু এসব খেলায় তার কোন ভ্রূক্ষেপ নেই, তাহলে সতর্ক হন।
৩য় চিহ্নঃ নতুন শব্দ উচ্চারণ শিখছে এমন বাচ্চার মাকে আমরা জিজ্ঞেস করি, বাবু যে ‘বা-বা’ করছে, এটা কি শুধু ‘বাবা’কে দেখেই, নাকি অন্যদের দেখেও এই শব্দ করে। সাধারণত নয়-দশ মাসের বাচ্চা ‘বুঝে’ বাবা, ডাডা, মামা জাতীয় শব্দ উচ্চারণ করে। ভয় হচ্ছে তখন, যখন ষোল মাস হয়ে গেছে, অথচ বাচ্চা ‘অর্থপূর্ণ’ একটি শব্দও বলছে না।
৪র্থ চিহ্নঃ স্বাভাবিকভাবে আঠারো থেকে কুড়ি মাস বয়স হলে বাচ্চা দু’টি শব্দ জোড়া দিয়ে কথা বলতে শিখে। যেমন- ভাত দাও, মা মাম, এটা নাক ইত্যাদি। অটিজমের সম্ভাবনা আছে এমন বাচ্চার ক্ষেত্রে দু’টি জিনিস হতে পারে। হয়, চব্বিশ মাস হয়ে গেছে অথচ সে শব্দ জোড়া দিয়ে কথা বলছে না। অথবা, অন্য কারও থেকে শোনা একই কথা বারবার আওড়াচ্ছে।
৫ম চিহ্নঃ যেকোনো শিশুর বিকাশের কয়েকটি ক্ষেত্র (DOMAIN) আছে। যেমন, পেশির সক্ষমতা, কথা বলা, ভাষা জ্ঞান, চোখে দেখা, কানে শোনা, সামাজিক কিংবা আবেগিয় বা ব্যাবহারগত সক্ষমতা অর্জন প্রভৃতি। কোন শিশু তার বয়সের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিকাশের সক্ষমতা অর্জন করেছিল কিন্তু এখন ভুলে যাচ্ছে বা পিছিয়ে পড়ছে, তাহলে এটি খুবই ভয়ের কথা। এটি শুধু অটিজম নয়, স্নায়ুতন্ত্রের অন্য কোন অসুখের জন্যও হতে পারে।
এখন, কোন শিশুর যদি অন্তত একটি ‘লাল-নিশানা চিহ্ন’ও ধরা পরে, তাহলে উপযুক্ত বিকাশকেন্দ্রে (যেমন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা শিশু হাসপাতাল, ঢাকা- চট্টগ্রাম-রাজশাহী-রংপুর-বরিশাল-সিলেট-ময়মনসিংহ ইত্যাদি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মা ও শিশু স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট, মাতুয়াইল এসব জায়গায় বিশ্বমানের বিকাশকেন্দ্র রয়েছে) যোগাযোগ করতে হবে। তখন একটি ‘দল’ মিলে বাচ্চাকে দেখে জানাবেন, তার অন্য কোন সমস্যা আছে কিনা এবং কোন পরীক্ষা লাগবে কিনা।
ডাঃ আহাদ আদনান
রেজিস্ট্রার (শিশু বিভাগ)
আইসিএমএইচ, মাতুইয়াল,
ঢাকা। ০১৯১২২৪২১৬৮।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।