Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে মুরসিকে

| প্রকাশের সময় : ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

ইনকিলাব ডেস্ক : মিসরের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে কারাগারে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হছেÍএ অভিযোগ তুলেছে তার পরিবারের উদ্যোগে গঠিত ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা ও আইনজীবীদের একটি প্যানেল। ডিআরপি (ডিটেনশন রিভিউ প্যানেল) নামের ওই প্যানেলের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, মুরসির ক্ষেত্রে বন্দিত্বের ন্যূনতম অধিকারের জন্য নির্ধারিত আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করা হয়নি। তাকে রাখা হয়েছে অনেক বাজে অবস্থায়। বৃহস্পতিবার কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা একদিন আগে (২৮ মার্চ, বুধবার) প্রকাশিত প্রতিবেদনটিকে উদ্ধৃত করে জানিয়েছে, এতে মুরসির আইনি সুরক্ষা পাওয়ার অধিকার খর্ব করার অপরাধে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ফাত্তাহ আল সিসিকে দায়ী করার সুপারিশ করা হয়েছে।
২০১১ সালে গণঅভ্যুত্থানে হোসনি মোবারকের পতনের পর ২০১২ সালে প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মোহাম্মদ মুরসি। তবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই তিনি নিজের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ করতে ক্ষমতা কুক্ষিগত করার পথ নেন। আবারও তার পক্ষে-বিপক্ষে মানুষ রাস্তায় নামলে তীব্র উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। সেই অস্থিরতার মধ্যে সেনাপ্রধান ফাত্তাহ আল সিসির নেতৃত্বে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে মিসরীয় সেনাবাহিনী। একপর্যায়ে বিভিন্ন অভিযোগে তাকে বন্দি করা হয়। দেওয়া হয় বিভিন্ন মেয়াদে কারাদÐ। বর্তমানে তোরা নামের এক অখ্যাত কারাগারে বন্দি আছেন সাবেক এ মিসরীয় প্রেসিডেন্ট। বুধবার ডিটেনশন রিভিউ প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, তিন বছর ধরে মুরসিকে নির্জন কারাবাসে রাখা হয়েছে। প্রতিবেদনের ভাষ্য, সাবেক এ নেতাকে ‘পর্যাপ্ত চিকিৎসা সুরক্ষা দেওয়া হছে না, তার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হছে না, তার লিভারজনিত জটিলতা নিরসনেও পর্যাপ্ত কিছু করা হছে না। এ অপর্যাপ্ত সুরক্ষা ব্যবস্থার কারণে তার অবস্থার দ্রæত অবনতি হছে, যা তাকে অকাল মৃত্যুর দিকে টেনে নিয়ে যেতে পারে।’
মুরসির আটকাবস্থায় তার আইনি সুরক্ষার অধিকারের দেখভাল করার জন্য পরিবারের উদ্যোগে ডিটেনশন রিভিউ প্যানেল গঠিত হয়। লন্ডনভিত্তিক আইনি প্রতিষ্ঠান আইটিএন সলিউশনস-কে প্যানেলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা ব্রিটিশ আইনপ্রণেতা ও আইনজীবীদের নিয়ে প্যানেলটি গঠন করে। মিসরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তিন দিনের ভোটগ্রহণ শেষ হওয়ার পরপরই সেই প্যানেলের প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হলো। বিরোধী প্রার্থীরা ভোট বর্জন করায় এ নির্বাচনকে লোক দেখানো বলেই বিবেচনা করা হছে। নির্বাচনে সিসিই জয় পেতে যাছেন বলে অনেকটাই নিশ্চিত।
প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে ২০১২ সালে বিক্ষোভকারীদের নির্যাতন ও গ্রেফতারের আদেশ দেওয়ার অভিযোগে ২০১৫ সালের এপ্রিলে মুরসিকে ২০ বছরের কারাদÐ দেওয়া হয়। কাতারকে গোয়েন্দা তথ্য সরবরাহের অভিযোগে ২০১৬ সালের সেপ্টেম্বর দেওয়া হয় আরও ২৫ বছরের কারাদÐ। বিচার বিভাগ অবমাননায় দোষী সাব্যস্ত করে ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে আরও তিন বছরের কারাদÐ দেওয়া হয় তাকে। ডিটেনশন রিভিউ প্যানেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, মুরসিকে যে অবস্থায় রাখা হয়েছে তা মিসর ও আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নির্যাতনের শামিল। বর্তমান প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিকে নির্যাতনকারী হিসেবে দায়ী করা যেতে পারে।’
প্রতিবেদনটি এমন সময় প্রকাশিত হলো যখন মিসরে লোক দেখানো প্রেসিডেন্ট নির্বাচন চলছে। প্রাথমিকভাবে সাতজন প্রার্থী এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। এদের একজন হলেন সাবেক জেনারেল ও চিফ অব স্টাফ সামি আনন। অভ্যুত্থানে মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতা দখল করা বর্তমান প্রেসিডেন্ট সিসির শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন তিনি। প্রার্থিতা ঘোষণার পরপরই সেনাবিরোধী বক্তব্য প্রচার এবং সরকারি নথি জালিয়াতির অভিযোগ তুলে তাকে আটক করা হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলীয় অনেক প্রার্থী নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। তবে সিসির নির্বাচনি মুখপাত্রের দাবি, কাউকেই নির্বাচনে অংশ নিতে বাধা দেওয়া হছে না।
সিসির বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী একমাত্র প্রার্থী স্বল্পপরিচিত মধ্যপšী রাজনীতিবিদ মুসা মোস্তফা মুসা। সিসির সমর্থক হিসেবে পরিচিত মুসা ঘোষণা দিয়েছেন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট পুনরায় নির্বাচিত হলে আপত্তি করার কিছু নেই।



 

Show all comments
  • মিরাজ ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১১:৫৩ এএম says : 0
    হে আল্লাহ তুমি মোহাম্মদ মুরসিকে হেফাযত করো
    Total Reply(0) Reply
  • Farhan Ahmed ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১২:২১ পিএম says : 0
    Allah help us
    Total Reply(0) Reply
  • মো. জিয়াউর রহমান ৩০ মার্চ, ২০১৮, ১০:৪০ পিএম says : 0
    ইসলামী সমাজ কায়েমের জন্য, দেশের শান্তির জ্ন্য মরসির মত, এরদোগানের মত রাষ্ট্র নায়ক বড় প্রয়োজন।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মিসর

২৮ জানুয়ারি, ২০২২
১৭ জানুয়ারি, ২০২২
১৩ জানুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ