পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
দেশের ব্যাংকিংখাতে অস্থিরতা চলছে এবং সময়ের সাথে খেলাপী ঋণও বাড়ছে। ২০১৭ সালের শেষে ব্যাংকগুলোতে খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া রাইট অফ কৃত ঋণের পরিমাণ প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা, যা ব্যালেন্সশিটে অর্ন্তভুক্ত নয়। ২০০৮ সালের শেষে খেলাপী ঋণ ছিল ২২,৪৮১ কোটি টাকা আর রাইট অফ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫,৬৬৭ কোটি টাকা। মোট খেলাপী ঋণ ছিল ৩৮,১৪৮ কোটি টাকা। সেই ঋণ বেড়ে ২০১৭ সালের শেষে এসে দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ১৫ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকগুলো প্রতি বছর বিশাল অংকের খেলাপী ঋণকে রাইটঅফ করে এবং তা ব্যালেন্সশিট থেকে বাদ দেয়। রাইট অফ করা এই ঋণ ব্যাল্যান্সশিটের অর্ন্তভুক্ত থাকে না বিধায়, তা খেলাপী ঋণ হিসেবে ব্যাংকগুলো প্রকাশ করে না। তাছাড়া ব্যাংকগুলো আরো বিশাল অংকের খেলাপী ঋণ বিভিন্ন মেয়াদে রিসিডিউল করেছে, যা খেলাপী ঋণ হলেও রিসিডিউল করার কারণে আর খেলাপী ঋণে গণ্য করা হয় না। ২০১৫ সালে বড় বড় শিল্প গ্রপসমূহ ১৫০০০ কোটি টাকার ঋণ পুনর্গঠন করেছে, যার বেশিরভাগই আবার খেলাপী হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রায়াত্ত ব্যাংকগুলোতে বিতরণকৃত ঋণের প্রায় ২৫ শতাংশই খেলাপী আর বেসরকারি ব্যাংক খেলাপী ঋণের পরিমাণ প্রায় ১০ শতাংশ। রিসিডিউল এবং পুনর্গঠন করা ঋণ হিসাবে আনলে এই খেলাপী ঋণের পরিমাণ আরো অনেক বেশি হবে। খেলাপী ঋণের কারণে ব্যাংকগুলোর স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি মুখ থুবড়ে পড়েছে এবং অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধিও বাধাগ্রস্থ হয়েছে। বর্তমানে রাষ্ট্রয়াত্ত ব্যাংকগুলো মূলধন ঘাটতিতে রয়েছে। হল-মার্ক, বিসমিল্লাহ গ্রপ কেলেংকারী, বেসিক ব্যাংক, ফারমার্স ব্যাংক কেলেংকারী আর সেন্ট্রাল ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি এবং বিভিন্নœ প্রতিষ্ঠানকে নিয়ম লংঘন করে অতিরিক্ত ঋণ প্রদানের ঘটনাসহ ব্যাংকিং সেক্টরের বিভিন্ন অপকর্ম জনগণের মাঝে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি কিছুটা আস্থাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ব্যাংকিং সেক্টরের প্রতি জনগণের আস্থা সৃষ্টি করতে হবে এবং তার জন্য ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অপরিহার্য।
ঋণের সুদই ব্যাংকের মূল আয়। কিন্তু ঋণ যখন খেলাপী হয় তখন ব্যাংকের আয় কমে যায়। খেলাপী ঋণ ব্যাংকের গতিকে আটকে রাখে। এই বিশাল পরিমাণ টাকা থেকে ব্যাংক কোন প্রকার আয় করতে পারে না , আবার এই ঋণ অনাদায়ী হবার কারণে তা নতুন করে বিনিয়োগও করতে পারে না। ফলে ব্যাংকের আয়, বিনিয়োগ এবং গতিশীলতাও কমে যায়। আবার এই খেলাপী ঋণের বিপরীতে আয় থেকে প্রভিশন রাখতে হয় বিধায়, ব্যাংকের আয়ের বিশাল একটি অংশ খেলাপী ঋণের ঘাটতি মেটাতে ব্যয় করতে হয়। এক্ষেত্রে খেলাপী ঋণের পরিমাণ যদি ব্যাংকের আয়ের সমান হয় তাহলে আয়ের পুরোটাই প্রভিশন ঘাটতির পিছনে ব্যয় করতে হয়। এ অবস্থায় ব্যাংকের কোন আয় অবশিষ্ট থাকে না। অপরদিকে খেলাপী ঋণের পরিমাণ যদি ব্যাংকের আয়ের চেয়ে বেশি হয় তাহলে সেক্ষেত্রে ব্যাংক ক্ষতির অবস্থানে থাকে। এ অবস্থায় ব্যাংকের অবস্থা ক্রমান্বয়ে নাজুক থেকে নাজুকতর হতে থাকে। খেলাপী ঋণের কারণে ব্যাংকের ডিপোজিটররা তাদের ন্যায্য লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত হয়। অথচ এসব টাকা দেশের লাখো মানুষদের কষ্টার্জিত অর্থ। কিন্তু এসব টাকা আজ গুটি কয়েক মানুষের পকেটে ঢুকে আছে। বাংলাদেশে আজ যত টাকা খেলাপী ঋণ আছে, তা যদি খেলাপী না হতো, তাহলে শুধুমাত্র এই টাকা দিয়েই দেশে হাজারো স্কুল, কলেজ, বিশ^বিদ্যালয়, রাস্তা ঘাট, ব্রিজ, হাসপাতাল এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা যেত। করা যেত পদ্মা সেতুর মতো আরও বহু ব্রিজ।
অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, কর্মকর্তাদের অসততা, বাচবিচারহীনভাবে ঋণ প্রদান, রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব এবং কর্তৃপক্ষের চাপিয়ে দেয়া অতিরিক্ত মুনাফা অর্জনের টার্গেট খেলাপী ঋণ সৃষ্টির জন্য অনেকাংশে দায়ী। কিছু অসাধু ব্যাংক কর্মর্কতা অনেক সময় গ্রাহকের কাছ থেকে কমিশন নেয়, বিনিময়ে অতিরিক্ত ঋণ অনুমোদন করে। এসব অসৎ কর্মকর্তা কিছু গ্রাহককে অতিরিক্ত আনুকূল্য দেখায় এবং প্রয়োজন অতিরিক্ত ঋণ প্রদান করে। আবার কিছু গ্রাহকের প্রতি নেতিবাচক আচরণ করে এবং প্রয়োজনের তুলনায় কম ঋণ প্রদান করে। অনেক ক্ষেত্রে একটি প্রজেক্টের গুরুত্ব এবং ভবিষ্যত যথাযথভাবে বিবেচনা না করে ঋণ প্রদান করা হয়। অধিকন্তু ঋণ গ্রহীতা ঋণের টাকা পুরোপুরিভাবে ঐ প্রজেক্টেরে উন্নয়ন এবং পরিচালনায় ব্যয় করছে কিনা ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তা মনিটরিং করে না। যার ফলে একজন গ্রাহক তার গ্রহণকৃত ঋণ থেকে বিরাট একটি অংশ জমি কেনা, দামী গাড়ি কেনা এবং বিলাসবহুল বাড়ি তৈরির জন্য ব্যয় করে। ঋণের অর্থ যথাযথভাবে শিল্প প্রতিষ্ঠানে ব্যয় না হবার কারণে উক্ত শিল্প প্রতিষ্ঠান যথাসময়ে উৎপাদনে যেতে পারে না। ঐ শিল্প দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ঋণগ্রহীতা যথাসময়ে ঋণ পরিশোধ করতে পারে না। এ অবস্থায় খেলাপী ঋণের সৃষ্টি হয়। এছাড়া অনেক ক্ষেত্রে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য ঋণ গ্রহণ করার সময় ঐ প্রতিষ্ঠানের মূল্য নির্ধারণ করা হয় তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। সুতরাং অতিরিক্ত ঋণ প্রদান শুরুতেই খেলাপী ঋণের সুযোগ সৃষ্টি করে। অপরদিকে প্রয়োজনের তুলনায় কম ঋণ প্রদানও অনেক ক্ষেত্রে খেলাপী ঋণ সৃষ্টি করে। কারণ পরিমাণ মত ঋণ না পাওয়ায় গ্রাহক প্রজেক্ট কমপ্লিট করতে পারে না। ফলে আয় হয় না এবং গ্রাহক ব্যাংকের ঋণ শোধ করতে পারে না। এদিকে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক নেতা এবং ব্যাংকের পরিচালকদের প্রভাবও খেলাপী ঋণ সৃষ্টির জন্য অনেক সময় দায়ী। সরকারি ব্যাংকগুলোতে সিবিএ এবং রাজনৈতিক দলের নেতারা আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোতে ব্যাংকের পরিচালকরা অনেক সময় প্রভাব বিস্তার করে ঋণ অনুমোদন করে। অনেক সময়ে যথাযথ প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান না করে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান করা হয়। এইসব ঋণ সময়ের ব্যবধানে খেলাপী ঋণে পরিণত হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের চাপিয়ে দেয়া অত্যাধিক মুনাফা অর্জনের টার্গেট এবং মুনাফা অর্জনের অসম প্রতিযোগিতাও খেলাপী ঋণ সৃষ্টির জন্য দায়ী। তাছাড়া রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যবসা বাণিজ্যের মন্দাভাবও খেলাপী ঋণ সৃষ্টির জন্য অনেক ক্ষেত্রে দায়ী। রাজনীতিতে স্থিতিশীলতা না থাকলে ব্যবসা বাণিজ্যে গতি আসে না, শিল্পকারখানা ঠিকমত চলে না। এসব ক্ষেত্রে ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়। তারা ব্যাংকের ঋণ ঠিকমত পরিশোধ করতে পারে না। খরা, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ব্যবসায়ীরা যখন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তখনো তার প্রভাবে খেলাপী ঋণের সৃষ্টি হয়। সরকারের ট্যারিফ নীতির কারণেও ব্যবসায়ীরা অনেক সময় ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং খেলাপী ঋণের সৃষ্টি হয়। সুতরাং এইসব ক্ষেত্রে ব্যবসায়ীদের কল্যাণে বাস্তবতার আলোকে নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে।
ঋণ খেলাপীদের কাছ থেকে টাকা আদায়ের জন্য পর্যাপ্ত আইন নেই। অর্থাৎ আইনের আশ্রয় নিয়ে খেলাপী ঋণ আদায় করাটা কষ্টকর। এ অবস্থায় ব্যাংকের পক্ষ থেকে ব্যাংক কর্মকর্তা খেলাপী ঋণ আদায়ের জন্য প্রচন্ড চাপে থাকে। একই সাথে ব্যাংক কর্মকর্তাকে ঋণ গ্রহীতার প্রভাবকে মোকাবেলা করতে হয়, যা আরো কষ্টকর। অধিকন্তু খেলাপী ঋণ আদায়ের জন্য আদালতে মামলা করা হলেও তা দীর্ঘসময় ধরে কেবল চলতেই থাকে এবং মীমাংসা হতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। খেলাপী ঋণ আদায়ের জন্য সরকার অর্থঋণ আদালত গঠন করলেও তা খেলাপী ঋণ আদায়ে খুব বেশি গতি আনতে পারেনি। মামলা বেশি হবার কারণে এখানেও জট লেগে আছে। তাছাড়া অর্থঋণ আদালতের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ব্যাংকগুলোতে খেলাপী ঋণ বেড়ে যাবার কারণে অর্থ ঋণ আদালতে মামলার সংখ্যা এখন অনেক বেড়ে গেছে। এতে ব্যাংকগুলো খেলাপী ঋণ আদায় করতে পারছে না আর এক্ষেত্রে ঋণখেলাপীরা সুবিধা পাচ্ছে। অপরদিকে নিলামের মাধ্যমে বন্ধকীকৃত সম্পদ বিক্রি করাও অনেক সময় সম্ভব হয় না। বন্ধকীকৃত সম্পত্তি বিক্রির জন্য ব্যাংকের পক্ষ থেকে নিলাম আহবান করা হলেও, তা অধিকারে যেতে পারবে না মনে করে ক্রেতারা কিনতে কম আগ্রহ দেখায়। কোন ক্রেতা আগ্রহী হলেও ঐ সম্পত্তির জন্য অপেক্ষাকৃত কম মূল্য দিতে চায়। ফলে খেলাপী ঋণ যথাযথভাবে আদায় করাটা সম্ভব হয় না আর এর পরিমাণ কেবল বাড়তেই থাকে। অনেক গ্রাহক ব্যাংক থেকে হাজার কোটি টাকা ঋণ গ্রহণ করে, সেই ঋণ পরিশোধ না করে স্বপরিবারে বিদেশে বসবাস করছে। খেলাপী ঋণ আদায়ের জন্য আইনী প্রক্রিয়ার পাশাপাশি গ্রাহকের সাথে সমঝোতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে হবে। সমঝোতার মাধ্যমে খেলাপী ঋণ আদায় করা তুলনামূলকভাবে সহজ।
ব্যাংকিংখাতে শৃংখলা ও গতিশীলতা ফিরিয়ে আনার স্বার্থে খেলাপী ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে এবং নতুন খেলাপী ঋণ সৃষ্টির পথ বন্ধ করতে হবে। ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে তা যথাযথভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। প্রদত্ত ঋণকে যথাযথভাবে মনিটরিং করতে হবে। রাজনৈতিক প্রভাব, সিবিএ প্রভাব এবং পরিচালকদের প্রভাবমুক্ত না হলে তা কখনোই সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে সেন্ট্রাল ব্যাংক হিসেবে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশাল ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংককে প্রয়োজনীয় আইন, গাইডলাইন এবং নীতিমালা প্রণয়ন করতে হবে। ব্যাংকিং সেক্টরের ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের সুপারভিশন, গাইডেন্স এবং মনিটরিং বাড়াতে হবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকেও দক্ষ জনবল নিয়োগ দিতে হবে এবং ব্যাংকিং সেক্টরের উন্নয়নের স্বার্থেই বাংলাদেশ ব্যাংককে শক্তিশালী করতে হবে। অধিকন্তু অর্থঋণ আদালতসহ আইনী প্রক্রিয়াকে আরো উন্নত এবং সংস্কার করতে হবে, যাতে আইনের সাহায্য নিয়ে খেলাপী ঋণ আদায় করা যায় এবং ঋণখেলাপীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায়। তাছাড়া গ্রাহককে যেনতেন প্রকারে ঋণ প্রদান করে মুনাফা অর্জনের টার্গেট ব্যাংকগুলোকে পরিহার করতেই হবে। মুনাফা অর্জনের অসুস্থ প্রতিযোগিতা ব্যাংকিং সেক্টরকে বিশাল ক্ষতির মুখোমুখি করেছে। ব্যাংকগুলোকে তাদের ঋণ নীতিমালা পুনর্বিন্যাস করতে হবে এবং ঋণকে বিভিন্ন সেক্টরে বণ্টন করতে হবে। এদেশে কিন্তু ধনী লোকেরাই বার বার ব্যাংক থেকে ঋণ পায় এবং তাদের বেলায় ঋণের শর্তও সহজ। অপরদিকে গরিব লোকেরা ব্যাংক থেকে সহজে ঋণ পায় না এবং তাদের বেলায় ঋণের শর্তও কঠিন। এ কারণে দেশে নতুন উদ্যোক্তার সৃষ্টি হচ্ছে না এবং মধ্যবিত্তের বিকাশ ঘটছে না। ধনী লোকেরা যে পরিমাণ খেলাপী, গরিব লোকেরা সেই পরিমাণ নিয়মিত। অনেক গ্রাহক বলে, ব্যবসায় ক্ষতি হওয়ায় তারা ঋণখেলাপী। কিন্তু ব্যবসার পুরো টাকাটাই তো আর ক্ষতি হয়নি। তাহলে পুরো ঋণই খেলাপী হবে কেন? আসল কথা হচ্ছে ঋণের টাকা অন্যদিকে পাচার করা এবং ব্যাংকের কাছে যথাসময়ে পরিশোধ না করা একটা কালচারে পরিণত হযেছে।
এ অবস্থায় ব্যাংকিং সেক্টরে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হবে এবং জনগণের আস্থা সৃষ্টি করতে হবে। আস্থাহীনতার কারণে জনগণ যদি ব্যাংকে টাকা জমা না রাখে, তাহলে কিন্তু ব্যাংকগুলো ডিপোজিট সমস্যায় পড়বে। ফলে ব্যাংকগুলো বিনিয়োগ করতে পারবে না এবং আয় করতে পারবে না। ব্যাংকের বিনিয়োগ বা ঋণ প্রবাহ কমে গেলে দেশের অর্থনীতিই সমস্যায় পড়বে। সুতরাং দেশের কল্যাণেই ব্যাংকিং সেক্টরের উন্নতি ঘটাতেই হবে। ব্যাংকগুলোতে পেশাদারিত্বের বিকাশ ঘটাতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য ব্যাংকগুলোতে সৎ এবং যোগ্য ব্যক্তিদেরকে নিয়োগ দিতে হবে। কর্মকর্তারা সৎ না হলে ঋণ বিতরণে অনিয়ম বন্ধ হবে না। আর অভিজ্ঞতা সবসময় যোগ্যতার বিকল্প হতে পারে না। অর্থনীতি এবং ব্যাংকিং বিষয়ে অভিজ্ঞ না হলে এবং অর্থনীতির গতি প্রকৃতি সম্পর্কে জ্ঞান ও দূরদর্শিতা না থাকলে তাদের পক্ষে অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ব্যাংকিং খাতকে সামনের দিকে এগিয়ে নেয়া কখনো সম্ভব নয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ব্যাংকিং সেক্টরে খেলাপী ঋণ কমবে না। একই সাথে জনগণের আস্থাও বাড়বে না। অর্থনীতির চাকাও গতিশীল হবে না। তাই ব্যাংকিং সেক্টরও একই সাথে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হলে ব্যাংকিং খাতে সুশাসন অপরিহার্য ।
লেখক : প্রকৌশলী ও উন্নয়ন গবেষক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।