Inqilab Logo

বুধবার ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আবারো সেই লজ্জার ব্যাটিং

| প্রকাশের সময় : ৯ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

স্পোর্টস রিপোর্টার : ১১টা ওয়াইড সঙ্গে দুটি নো বল, এরই মাঝে পাঁচ-পাঁচটি ক্যাচ মিস। ভারতীয় বোলার-ফিল্ডারদের এমন আশীর্বাদপুষ্ঠ সমর্থনের পরও বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা দাঁড় করাতে পারলেন মাত্র ১৩৯ রান! ম্যাচ তো শেষ এখানেই! বাকি কাজটা ভারতীয় ব্যাটসম্যানরা হেসেখেলেই করেছে ৮ বল আর ৬ উইকেট হাতে রেখে।
ড্রেসিংরুমে ফেরার তাড়া যেন পেয়ে বসেছিল বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের। ভারত ব্যাপারটা আগেই আঁচ করতে পেরেছিল। জানত, অগোছালো আর পরিকল্পনাহীন ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বেশিদুর এগুতে পারবে না বাংলাদেশ। যে কারণে কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত নিদাহাস ট্রফি ত্রিদেশীয় টি-২০ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে টসে জিতেও ব্যাটিংয়ের পথে হাটেনি তারা। ম্যাচ শেষে মাহমুদউল্লাহও তা স্বীকার করেছেন অকপটে।
ব্যাটিং অর্ডার নিয়ে বাংলাদেশের কোন পরিকল্পনা ছিল বলে মনে হয়নি। লিটন না সাব্বির, সাব্বির না লিটন করতে করতে একাদশে সুযোগ পেলেন দুজনই। এবারো উপেক্ষিত ইমরুল। অবশ্য বাংলাদেশ যে একশ পেরিয়েছে তা কিন্তু সেই লিটন-সাব্বিরের প্রচেষ্টাতেই। কিন্তু তাদের সেই প্রচেষ্টাটা কি ধরণের তাও কারো বোধগম্য হয়েছে বলে মনে হয় না। তিন ক্যাচ দিয়ে লিটনের ৩০ বলে ৩৪ রানের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২৬ বলে ৩০ রানের শ্বাষরুদ্ধকর ইনিংস খেলেন সাব্বির। ভারতীয় বোলার-ফিল্ডারদের এমন ব্যর্থতাও তাই ঢাকা পড়ে যায় মাহমুদইল্লাহদের ব্যাটিং ব্যর্থতা। শীর্ষ চার ব্যাটসম্যানের সবাই খাতা খুলেছেন বটে কিন্তু কেউই ক্রিজে থেকে ইনিংসটাকে মানসম্মত রূপ দিতে পারেননি।
প্রথম ওভারের শেষ বলে হুক করতে গিয়ে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দেন সৌম্য সরকার। কিন্তু পান্ডে-সুন্দরের ভুল বোঝাবুঝিতে এ যাত্রায় বেঁচে যান সৌম্য। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় ওভারে উনাদকাটের বলে শর্ট ফাইন লেগে চাহালের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১২ বলে ১৪ রান করে। পরের ওভারে এক্সট্রা কাভারে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যান আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল। তারও পরের ওভারে রিভিউ নিয়ে এলবিডবিøউয়ের হাত থেকে বেঁচে যান তিনি। পরের দুই বলে টানা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ফেরার উঙ্গিত দিয়েছিলেন বটে। কিন্তু পরের বলে শর্ট বলে শর্ট ফাইন লেগে উদানকাটের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনিও (১৬ বলে ১৫)। ৩৫ রানে ২ উইকেট।
এরপর লিটন আর মুশফিক এসে আশা জাগান। লিটন ফাইন লেগে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে যাওয়ায় আশাটা আরো বড় হচ্ছিল। কিন্তু ঝড়ের ইঙ্গত দিয়েও ১৪ বলে ১৮ রানে উইকেটের পিছনের ক্যাচ দিয়ে সেই আশার সলতে নিভিয়ে দেন মুশফিক। এরপর অধিনায়কের কাছ থেকে দায়ীত্বশীল ব্যাটিং আশা করাটাই স্বভাবীক। কিন্তু বিজয় শঙ্করের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের প্রথম বলেই উইকেট বিলিয়ে ৮ বলে ১ রানের সংগ্রমী ইনিংস খেলে বিদায় নিলেন সেনাপতি মাহমুদউল্লাহও।
এরপর এক ওভারে দুটি ক্যাচ দিয়েও ভারতীয় ফিল্ডারদের হাস্যকর ব্যর্থতায় বেঁচে যান লিটন। লং অফে ধরা পড়ার মাধ্যমে শেষ হয় তার ৩০ রানের লড়াকু ইনিংসটি। একই ধারা বজায় রেখে ফেরেন সাব্বির-মিরাজও। যে কারণে সংগ্রহটাকে দেড়শ’র রুপও দেয়া গেল না।
মামুলি সংগ্রহ পেরিয়ে যেতে ভারতকে কোন পরীক্ষাই দিতে হয়নি। ওপেনার শেখর ধাওয়ানের ৪৩ বলে ৫৫, সুরেশ রায়নার ২৭ বলে ২৮ ও মানিশ পান্ডের ১৯ বলে অপরাজিত ২৭ রানে সহজেই জয় তুলে নেয় রোহিত শর্মার দল। ৬ মার্চ টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কার কাছে ৫ উইকেটে হারের পর সিরিজে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ালো ভারত। আর ব্যাটিং ব্যর্থতার প্রদর্শনীতে আক্ষেপ বাড়ালো বাংলাদেশ।
মাহমুদুল্লাহর আক্ষেপ মাত্র ৩০ রানের। তার মতে, ‘আমাদের আরো অন্তঃত ৩০ রান করতে হতো।’ তাহলে কি হত তা অবশ্য বলেননি। তবে এদিনও একটিমাত্র জয় সবকিছু পাল্টে দেবে বলে জানান টাইগার দলপতি। কিন্তু সেই জয়ের দেখাটা মিলবে কবে?



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ব্যাটিং

২২ ডিসেম্বর, ২০২১
২১ নভেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ