পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানী ঢাকার অধিকাংশ রাস্তায় আলো নেই। লাইটপোট থাকলেও নেই বাতি। বড় বড় বিপনী বিতান ও সড়কের আশপাশের আলোকসজ্জাতেই রাস্তার আলো কিছুটা কাজ করে, বাকী সবই অন্ধকার। প্রধান সড়কসহ অধিকাংশ অলিগলিতে কোন লাইট জ্বলে না। ঘটছে ছিনতাই, রাহাজানি, চুরি,ডাকাতি, হত্যা, ধর্ষণ,অপহরণসহ নানা অপরাধ। অন্ধকারের সুবিধাকে কাজে লাগিযে অপরাধীরা একের পর এক ঘটিয়ে যাচ্ছে অঘটন। রাতে হলেই নগরীর অধিকাংশ পাড়া মহল্লার অলিগলিতে বসে মাদকের আড্ডা। রাতের বেলা ঢাকার বাইর থেকে আসা সাধারণ মানুষ বিপাকে পড়ছেন। ভুক্তোভুগিরা বলছেন, অধিকাংশ সড়কে বাতি না থাকায় রাতের মহানগরীতে নেমে আসে অজানা আতঙ্ক। তারা বলছেন, রাতের মহানগরী নিরাপত্তাহীন। সরেজমিন দেখা গেছে, কমলাপুর জসিম উদ্দিন রোড, ফকিরাপুল বক্সকালভার্ট রোড মতিঝিল দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা ,বাংলামোটর, পরিবাগ, কাটাবন, হাতিরপুলবাজার, ভূতের গলি, গ্রিন রোড, দোয়েল চত্বর, চানখাঁরপুল, আজিমপুর, এলাকার বেশিরভাগ সড়কবাতি জ্বলে না।
গলিগুলো সন্ধ্যার পরপরই অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা এ বিষয়ে একাধিকবার অভিযোগ দেয়ার পরও সড়কবাতির সুবিধা থেকে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এছাড়া অনেক স্থানে সড়ক বাতি ভেঙ্গে দিয়েছে মাদকসেবী ও ছিনতাইকারীরা। এরা অন্ধকারের সুযোগে নানা অপরাধ করে মুহুর্তে ঘটনাস্থল থেকে সটকে পড়ে। পরিবাগ জামে মসজিদ থেকে এলিফেন্ট রোড আজিজ সুপার মার্কেটের পাশে গিয়ে শেষ হওয়া রাস্তাটিতে সড়কবাতির সংখ্যা মোট ১৪টি। এরই মধ্যে সচল আছে ৬টি, বাকি ৮টি নষ্ট। আবার যেগুলো জ্বলছে সেগুলো পার্শ্ববর্তী গাছের পাতায় ঢাকা পড়েছে। ফলে পুরো রাস্তা রাতের বেলা থাকে অন্ধকারে।
স্থানীয় বাসিন্দা আসাদুজ্জামান বলেন, সড়ক বাতি না থাকায় জরুরী প্রয়োজনে রাতের অন্ধকারে চলাচল করতে গিয়ে আতনেঙ্কর মধ্যে থাকতে হয়। প্রাই এ রোডে ছিনতাই হয়, আছে মাদকসেবীদের আড্ডা। তিনি আরো জানান,এ সড়কের বাতিগুলো মেরামত করার জন্য সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষকে বারবার বলেও কোনো কাজ হয়নি।
ওই এলাকার ব্যবসায়ী তরিকুল হাসান গতকাল ইনকিলাবকে বলেন, সড়কটি রাতের বেলা অন্ধকারে ঢাকা থাকায় পথ চলতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন এলাকার মানুষ । তিনি বলেন, এ রোডে প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে।
ছিনতাইকারী আর মাদকসেবীদের একটি চক্র নিজেদের স্বার্থে সড়কবাতিগুলো নষ্ট করে বলে অভিযোগ করেন পানদোকানদার মাসুদ মিয়া। তিনি বলেন, রাতে ফুটপাতে বসে যারা গাঁজা খায়। তারাই সড়কের লাইটগুলা নষ্ট নষ্ট করে রাখে। আন্ধাইরে ছিনতাই, নেশা এবং পতিতা নিয়ে অনৈতিক কাজ করার সুবিধা নেয় অপরাধীরা।
কাঁটাবন ট্রাফিক সিগন্যাল থেকে হাতিরপুল বাজার মোড় পর্যন্ত ১৩টি বৈদ্যুতিক পোল থাকলেও আলো জ্বলে মাত্র ৫টিতে, বাকিগুলো নষ্ট। কাঁচামাল ব্যবসায়ী সোরাব আলী জানান, কিছু লাইট জ্বলে কিছু জ্বলে না। বাজার বন্ধ হওয়ার পর তো বেশিরভাগ জায়গা অন্ধকারেই থাকে। তখন হেরোইনসেবীদের আড্ডা বসে।
রবিবার রাতে হাতিরপুল বাজারের কাছে কথা হয় নিউমার্কেটের কাপড় ব্যবসায়ী আমিনুল হকের সাথে। তিনি জানান,হাতিরপুল বাজারের সামনের রাস্তাটি খানাখন্দ আর বাজারের আবর্জনায় ভরপুর থাকায় অন্ধকারে পথ চলতে সমস্যা হয় বলে । তিনি বলেন, রাতে পুরা রাস্তা থাকে ফাঁকা আর অন্ধাকারাচ্ছন্ন। তিনি আরো বলেন, রাতের বেলা হাতিরপুলে বাসায় ফেরার সময় আতঙ্কে থাকি। লাইট না থাকায় ওই রাস্তাটি অন্ধকারে নিম,ইজ্জত থাকে। এছাড়া ভূতের গলি এলাকায় সড়কবাতিবিহীন অন্ধাকারাচ্ছন্নময় রাস্তা একাধিক খোলা ম্যানহোল সৃষ্টি করেছে আরো অধিক আতঙ্ক।
বংশাল রোডের ব্যবসায়ী আবেদ হাসান অভিযোগ করে বলেন,সন্ধ্যা নামার সঙ্গে সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সড়কবাতির আলোয় আলোকিত হয়ে ওঠার কথা। তেমনটি না হলেও সড়কের পাশে থাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আলোকসজ্জা আর রাস্তায় চলমান যানবাহনের আলোই পথ দেখায় পথচারীদের।
তিনি বলেন,প্রধান সড়কগুলোতে নিয়মিত বাতি জ্বলতে দেখা গেলেও রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্ধকারে ডুবে যায় ঢাকার অলিগলি। রাস্তার পাশে সোডিয়াম, সোলার বা টিউব লাইটের জন্য ‘পোল’ থাকলেও আলোহীন হয়ে দাঁড়িয়ে আছে সড়কবাতিগুলো। ফলে রাতের বেলা চলাচল করতে গিয়ে নগরবাসী অনেকটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন।
গত রবিবার দিবাগত রাত ১০ টার দিকে কমলাপুর এলাকায় জসিমউদ্দিন রোডে রিক্সাযোগে বাসায় ফেরার পথে ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন ওই এলাকার ব্যবসায়ী সাবের হোসেন। সড়ক বাতি না থাকায় রাস্তার পাশে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা ছিনতাই কারীদের সাবের হোসেন দেখতে পাননি। তাদের কাছে যাওয়ার সাথে সাথে রিক্সার গতিরোধ করে ছিনতাইকারীরা। পরে অস্ত্রের মুখে সাবের হোসেনকে জিম্মি করে মোবাইল সেট ফোন, নগত ৭ হাজার টাকা এবং প্রয়োজনীয কাগজপত্রসহ তার মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয় তার। এধরনের ঘটনা অহরহর ঘটছে রাজধানীর রাস্তায়।
গত শনিবার দুপুরে কথা হয় আজিমপুরের বাসিন্দা আহসান হাবিব মিলনের সাথে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, নাগরিক সুবিধা দেয়ার লক্ষ্যে নিয়মিত কর নেয়া হয়। কিন্তু কি সুবিধা পাই? যেখানেই যাই সমস্যা। সিটি কর্পোরেশন এগুলোর সমাধান না করলে করবে কে? ল্যাম্পপোস্টে সবই ঠিক আছে শুধু আলো নেই। এছাড়া রাতের বেলা পুলিশের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও নড়বড়ে। নাম মাত্র টহল পুলিশ মাঝে মধ্যে রাস্তায় দেখে গেলেও তাদের সামনেই রাস্তায় রাতের বেলা মাদক সেবীরা আড্ডা বসায়। এ অন্ধকারে নানা অপকর্ম করে বেড়ায় অপরাধীরা।
স্থানীয়রা জানান, চানখারপুল, ইডেন কলেজ, আজমপুর এবং নিউমার্কেট এলাকায় রাতে পুলিশের সার্বক্ষণিক টহল থাকলেও তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে এ সড়কের ফুটপাত ধরে ঘুরে বেড়ায় ভাসমান দেহ ব্যবসায়ীরা। দেহ ব্যবসায়ীদের আনাগোনার বিষয়টি স্বীকার করে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আগে মাঝে মধ্যে ওদের দেখা গেলেও এখন এখন কমে এসেছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শরিফুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর সড়কগুলোতে কোটি টাকা ব্যয়ে স্থাপন করা সোলার প্যানেলের মাধ্যমে রাতের ঢাকা আলোকোজ্জ্বল করে তোলার লক্ষ্যে সড়কবাতি বসানো হলেও বেশিরভাগ সোলার সড়কবাতি জ্বলে না। কিছু বাতি জ্বললেও সেগুলোর আলো শীর্ণ।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, চকবাজার, বকশীবাজার, নাজিমউদ্দীন রোড, মৌলভীবাজার মিটফোর্ড, ইংলিশ রোড,ভিক্টোরিয়া পার্ক,বাংলাবাজার, ল²ীবাজার, সদরঘাটের আশপাশের রাস্তার বাতিগুলোর একই দশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।