পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অর্থনৈতিক রিপোর্টার : খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতার দাবির বিরোধিতা করেছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। তারা বলেছেন, ১৯৯০ সালের দিকেও চার কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন, এখনো আছেন। তাহলে এই চার কোটি মানুষের খাবার কারা খেলো?
রোববার জাতীয় প্রেসক্লাবে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনী কর্মসূচি ও জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশল (এনএসএসএস) : খাদ্য অধিকার প্রেক্ষিত শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
সেমিনারে বলা হয়, পরিকল্পনা কমিশন প্রণীত জাতীয় সামাজিক সুরক্ষা কৌশলপত্র গৃহীত হলেও এর সময়কাল অতি দীর্ঘ। যা হতদরিদ্র ও অসহায় মানুষদের উন্নয়নের মূলধারায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। এজন্য তার সময়কাল কমিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছেন খাদ্য বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেট বরাদ্দ দেয়ার তাগিদও দিয়েছেন তারা।
সভাপতির বক্তব্যে খাদ্য অধিকার বাংলাদেশ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, খাদ্য নিরাপত্তহীনতায় বসবাসকারী বিশেষ কিছু প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্যই মূলতঃ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী খাদ্যের অধিকার বাস্তবায়নে ভূমিকা রাখতে পারে। মানুষের শিক্ষা, প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান প্রভৃতির দিকে গুরুত্ব না দিলে খাদ্য অধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। গুরুত্ব দিতে হবে বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীকে। নব্য উদারতাবাদী উন্নয়ন নয়, মানবকেন্দ্রিক উন্নয়নের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। হ্রাস করতে হবে সম্পদ-বৈষম্য। টেকসইভাবে দারিদ্র্য, বৈষম্য হ্রাস করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের অংশ হিসেবে গণকেন্দ্রিক জনবল বৃদ্ধি করতে হবে, তদারকি যথাযথ হতে হবে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ দরকার। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হবে, যা সকল মানুষের অধিকার নিশ্চিত করবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এম এম আকাশ বলেন, খাদ্য অধিকার নিশ্চিতকরণে প্রথম দরকার মানুষের আয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, যাতে সে তার নিজের ও পরিবারের সদস্যদের খাদ্যের সংস্থান করতে পারে। বর্তমানে যে হারে দারিদ্র্য কমছে সে হ্রাসের হারকে বৃদ্ধি করতে হলে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রমে বাজেট বরাদ্দ বাড়াতে হবে।
অক্সফাম বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি সমন্বয়কারী মুজাহিদুল ইসলাম নয়ন বলেন, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সনদে সরকারের স্বাক্ষর আমাদের জন্য উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি। কিন্তু ১৯৯০ সালের দিকেও চার কোটি মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ছিলেন, এখনো আছেন। তাহলে এই চার কোটি মানুষের খাবার কারা খেলো?
একই প্রশ্ন তুলে ব্র্যাক প্রতিনিধি রেজবিন পারভিন বলেন, আগে পেটে খাবার। পরে নিরাপত্তা।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের গবেষণা পরিচালক ড. রুশিদান ইসলাম রহমান বলেন, খাদ্য অধিকার বলতে আমাদের বুঝতে হবে এটি যেন টেকসই অধিকার হয়। শুধু খাদ্যপ্রাপ্তি নয়, সেটি যেন গুণমানসম্পন্ন হয় সেটিও গুরুত্বপূর্ণ। এনএসএসএস বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ। বর্তমানে বাসস্থান ব্যয় অনেক বেড়েছে, যা খাদ্য ক্রয়ে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। ফলে চরম দরিদ্র জনগোষ্ঠীও খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।
অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ফোরামের সম্পাদক মহসিন আলী। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচি খাতে চলমান অর্থবছরে ৩৭৫ দশমিক ৪৬ বিলিয়ন টাকা বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে, যা বাজেটের ১১ দশমিক ৪ শতাংশ এবং জিডিপির ২ দশমিক ১৯ শতাংশ। জিইডির প্রতিবেদন অনুসারে, দেশের ৬৪ শতাংশ দরিদ্র মানুষ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির একটির সুবিধাও পায় না। সেই হিসাবে ২ কোটি ৪৬ লাখ গরিব মানুষ এখনো সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কর্মসূচির বাইরে রয়েছে।
অনুষ্ঠানে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য অধ্যাপক ড. শামসুল আলম, জাতীয় কমিটির সদস্য রতন সরকার, আব্দুর রহমান, শেখর ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।