২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
অনেক অটিজম বিশেষজ্ঞ দাবি করেন যে বিভিন্ন ধরনের খাবার ও খাদ্যাভাস অটিজমে আক্রান্ত শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের কার্যকরভাবে চিকিৎসা করতে পারে। কিছু অটিজম বিষয়ক গবেষক দৃঢ়ভাবে বিশ^াস করেন যে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা এবং অন্ত্রের মধ্যে খুবই শক্তিশালী এক ধরনের সম্পর্ক আছে। কিন্তু এত বিশাল খাবারের তালিকা থেকে সুপারিশকৃত খাবারগুলোর মধ্যে আপনার অটিজমে আক্রান্ত শিশুটির জন্য কোনগুলো সর্বোত্তম তা নির্ধারণ করবেন কিভাবে?
প্রোবায়োটিক বা বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ খাবারসমূহ অটিজমের উপসর্গগুলো দমিয়ে রাখতে সাহায্য করে। উপযুক্ত খাদ্যাভস এবং নিয়মিতভাবে স্বাস্থ্যসম্মত পরিপাকতন্ত্রের রক্ষণাবেক্ষণ অটিজমের উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণসহ পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য জটিল সমস্যাগুলো যেমন বিরক্তকর পেটের সমস্যা বিশেষ করে হজমজনিত বৃহদান্ত্রের সমস্যাগুলো এড়াতে সাহায্য করে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুরা বিরক্তকর পেটের সমস্যাগুলোর মধ্যে পেটে ব্যথা,দলা বা চাকা অনুভূত হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, ডায়রিয়া এবং পেট ফাপানোতে বেশি ভুগে । বিরক্তকর পেটের সমস্যা মূলত তথাকথিত গ্যাস্ট্রোকলিক রিফ্লেক্স দ্বারা উদ্ভুত হয়, যা কোলনকে খাবার হজম করার জন্য প্রস্তুতের জানান দেয়। বিরক্তকর পেটের সমস্যায় আক্রান্তদের গ্যাস্ট্রোকলিক রিফ্লেক্সটি অনেকটা আগে থেকে সক্রিয় থাকে, যা মাংসপেশীর স্পাযম ও অত্যাধিক সক্রিয়তায় বেদনাদায়ক অবস্থার তৈরি করে। এই অবস্থার কার্যকর প্রতিরোধের জন্য অটিজমে আক্রান্তদের সহজে হজম হয় এবং দ্রæত গ্যাস্ট্রোকলিক রিফ্লেক্সটিকে কার্যকর না করে এমন খাবার খাওয়াতে হবে। এই ধরনের খাবারগুলোই অটিজমের কার্যকর চিকিৎসার দাবিদার।
যেসকল খাদ্য এড়িয়ে যাওয়া উচিতঃ
এখানে এমন কিছু খাবারের তালিকা করা হলো, যা অটিজমে আক্রান্ত শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের কার্যকরভাবে এড়িয়ে যাওয়া উচিত।
১. অপাচ্য আশযুক্ত খাবারঃ
অপাচ্য আশযুক্ত খাবারগুলো হজমে খুবই সমস্যা করে। তাই যতটা সম্ভব এই ধরনের অপাচ্য আশযুক্ত খাবারগুলো এড়িয়ে যেতে হবে যদিও কিনা সেগুলো স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী হয়। অপাচ্য আশযুক্ত খাবারগুলো মধ্যে কিছু সবুজ শাকসবজি যেমন, পালংশাক, লেটুস পাতা, বিভিন্ন লতাপাতা জাতীয় শাক; যে সকল খাবারের মধ্যে গম, বাদামী গম ও গম বীজ থাকে; ফলমুল যেমন আনারস, সবুজ মটরশুটি; এছাড়াও কেপসিকাম জাতীয় মরিচ, পেয়াজ, শালগম, বাধাকপি,ফুলকপি এবং টমেটো ইত্যাদি অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে।
২. চর্বিযুক্ত খাবারঃ
চর্বিযুক্ত খাবারসমূহ হজম ক্রিয়াকে অধিকতর কঠিন করে ফেলে। চর্বিযুক্ত খাবার অটিজমে আক্রান্ত শিশু এবং প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য বেশির সময়েই কোষ্ঠকাঠিন্য ও ডায়রিয়ার কারণ হয়ে থাকে। চর্বিযুক্ত খাবারসমূহ মধ্যে যেকোন ধরনের ভাজা খাবারসমূহ, মাংস, দুধ ও দুধজাত সকল খাবার, সালাদসমূহ, পেস্ট্রি কেক ও অন্যান্য মিস্টি বা ঝাল জাতীয় বেকারীতে তৈরি খাবারসমূহ অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে ।
৩. কার্বোনেটেড দ্রব্যাদিঃ
কার্বোনেটেড দ্রব্যাদি যেমন সোডা অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে কেন না এটি পেট ফাপানো ও মাংসপেশীর ক্রাম্পের কারণ। এছাড়াও কার্বোনেটেড দ্রব্যাদিতে প্রচুর পরিমানে ক্যাফেইন থাকে যা অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে।
৪. কফি ও অ্যালকোহলঃ
কফি ও অ্যালকোহল বিশেষভাবে এড়িয়ে যেতে হবে কারণ এরা পরিপাকতন্ত্রের সমস্যার উদ্দীপক হিসেবে কাজ করে থাকে। বিশেষ করে কফির ক্যাফেইন কোলনকে সবদাই সক্রিয় করে রাখে।
৫. কৃএিম মিষ্টি সৃষ্টিকারী খাবারঃ
কৃএিম মিষ্টি সৃষ্টিকারী খাবার সাধারণত অটিজম ও বিরক্তকর পেটের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিদের খুবই খারাপ। কৃএিম মিষ্টি সৃষ্টিকারী খাবারের স্বাদ এবং স্থায়িত্ব বজায়ে রাখার উপাদানগুলো যেমন-গ্যারেজেনান ও গুরা গাম বিরক্তকর পেটের সমস্যার তৈরির প্রধান কারণ। উদাহরণস্বরুপ, দুগ্ধজাত পণ্য আইসক্রীম।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা হিসেবে নি¤œলিখিত খাবারগুলো প্রদান করা যেতে পারেঃ
যেহেতু বেশিরভাগ অটিজমে আক্রান্ত শিশুরাই বিরক্তকর পেটের সমস্যা ও পরিপাকতন্ত্রের সমস্যায় ভুগে তাই অতি সহজে হজম হয় এমন আশজাতীয় বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ানো যেতে পারে, যা তাদের উপসর্গগুলোর তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে। অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের জন্য প্রস্তাবিত কিছু খাবারের তালিকা দেওয়া হলোঃ
১. যেকোন ধরনের আলু যেমন- গোল আলু, মিষ্টি আলু, চীনা আলু ও গাজর।
২. মিষ্টি কুমড়া, মুলা, বীটস ও লাউ।
৩. পাস্তা ও অন্যান্য নুডুলস।
৪. ওটামিল বা জইচূর্ণ
৫. চালের রুটি বা ফরাসী রুটি।
৬. চাল ও চাল শস্য জাতীয় খাবারসমূহ।
৭. কলা, আম, পেঁপে ও আপেলের সস্ ।
৮. পেপারমিট, ক্যামোমাইল ও ফেনেলের মত চকলেট।
৯. বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়াসমৃদ্ধ খাবার যেমন দই, কেফের ও বিশেষ প্রক্রিয়ায় উৎপন্ন সবজি কিমচি।
বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়াসমৃদ্ধ খাবারগুলি সুষম পুষ্টির গুণ নিশ্চিত করতে, পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্যকর অবস্থা বজায় রাখতে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এগুলো ছাড়াও মানুষের শরীরের অন্যান্য স্বাস্থ্যগত উপকারীতা রয়েছে বন্ধুসুলভ ব্যাকটেরিয়াসমৃদ্ধ খাবারে।
অটিজমে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা সেবায় সারা বিশে^র মতো বাংলাদেশেও অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। আপনার অটিজমে আক্রান্ত শিশুটির অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎসাসেবা গ্রহণের জন্য নিচের ঠিকানায় যোগাযোগ করতে পারেন:
ষ মোহাম্মদ মোস্তফা কামাল রাহাত খান
সিনিয়র ক্লিনিক্যাল অকুপেশনাল থেরাপিস্ট ও ইন্চার্জ অকুপেশনাল থেরাপি চিকিৎস সেবা
শিশুবিভাগ, সিআরপি, সাভার, ঢাকা।
মোবাইল: +৮৮০১৭১১০৩৯৪৮৬
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।