বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
চাঁদপুর থেকে বি এম হান্নান
চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনার গহীনে অসাধু জেলেরা শাস্তি এড়াতে তাদের শিশুসন্তানদের দিয়ে প্রকাশ্যে কারেন্ট জাল ব্যবহার করে মা ইলিশ নিধনের উৎসবে মেতে ওঠেছে। জেলা টাস্কফোর্স সদস্যরা বিশ্রামে গেলে গভীর রাতে অসাধু জেলেরা মা ইলিশ শিকার করে বলে প্রশাসনের নজরে ওঠে এসেছে।
মা ইলিশ রক্ষায় সরকার চাঁদপুর পদ্মা-মেঘনার ১০০ কিলোমিটার এলাকায় ১ থেকে ২২ অক্টোবর অভয়াশ্রম ঘোষণা করেছে। এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে অভয়াশ্রম ঘোষিত নদী এলাকাকে সুরক্ষিত রাখতে চাঁদপুরে জেলা টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। কিন্তু সরকারের নির্দেশনা ও স্থানীয় প্রশাসনের কঠোর নিষেধাজ্ঞাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে কৌশল পরিবর্তন করে পদ্মা-মেঘনায় নিধন হচ্ছে নিষিদ্ধ মা ইলিশ। নদী এলাকার চরাঞ্চলের এক শ্রেণীর অসাধু জেলে শিশুদের দিয়ে এবার দিনের আলোতেই যেন মা ইলিশ নিধনে মেতে ওঠেছে। তারা ইঞ্জিনবিহীন ও ইঞ্জিনচালিত ছোট-বড় নৌকা নিয়ে এ অবৈধ কাজ করে যাচ্ছে।
তবে এ ক্ষেত্রে মেঘনার চেয়ে পদ্মা নদীর অংশেই ইলিশ নিধনযজ্ঞ বেশি দেখা যায়। আর এসব মা ইলিশ নদী পাড়েই অস্থায়ী আড়তে প্রকাশ্যে বিক্রি করা হচ্ছে। আর নদীপাড় থেকে পাইকারি ক্রেতারা ইলিশগুলো ক্রয় করে সেগুলো সিলভারের কলশি, পাতিল ও ককসেটের বক্সসহ বিভিন্ন পাত্রে গোপনে বাড়িতে নিয়ে সংরক্ষণ করছে।
সরেজমিনে পদ্মা-মেঘনায় ঘুরে ইলিশ নিধনের এ দৃশ্যের দেখা মিলে। এসময় নদীতে জেলেদের নিষিদ্ধ কারেন্ট জালের সাহায্যে মা ইলিশ ধরতে দেখা গেছে। তা ছাড়া কোনো কোনো জেলে ইলিশ ধরার কাজে যাত্রী পারাপারের বড় ট্রলারকে ব্যবহার করছে। এ বছর অধিকাংশ জেলে মাছ শিকারে অভিনব পন্থা অবলম্বন করছে। তারা নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে ৮ থেকে ১৫ বছরের শিশু-কিশোরদের দিয়ে মা ইলিশ ধরছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জেলের সাথে কথা হলে তারা জানায়, সরকার এবার আইন কড়াকড়ি করেছে। মা ইলিশ ধরার অপরাথে জেলেদের এক বছর কারাদ- দেয়া হয়। এ জন্য তারা শিশু-কিশোরদের দিয়েই মাছ নিধন করছে। কারণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা শিশুদের আটক করলেও তাদের অভিভাবকরা মুচলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে আনতে পারে।
এদিকে চাঁদপুর সদর উপজেলার রাজরাজেশ্বর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ড ও ২নং ওয়াার্ডে পদ্মা-পাড়ের অংশে বেশ কয়েকটি আড়তের দেখা পাওয়া যায়। সেখানে প্রকাশ্যে শতশত মানুষের উপস্থিতিতে হাঁক-ডাক দিয়ে পাইকারদের কাছে মা ইলিশ বিক্রি করা হচ্ছে। এ ছাড়াও ইউনিয়নের দেওয়ার বাজার আড়তে স্থানীয় রুহুল আমিনের ছেলে ইব্রাহিমসহ বেশ কয়েকজন ডাক উঠিয়ে মা ইলিশ বিক্রি করছে।
একইভাবে জেলার লগ্গীমারা, রাজরাজেশ্বর, আনন্দবাজার, ইব্রাহিমপুর, হরিসভা, রণাগোয়াল, দোকানঘর, বহরিয়া, লক্ষ্মীপুর, হরিণা ফেরিঘাট ও আখনেরহাট এলাকায় জেলা টাস্কফোর্স সদস্যদের গতিবিধি লক্ষ রেখেই অসাধুরা জেলেরা পদ্ম-মেঘনায় মা ইলিশ নিধনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। কোথাও কোথাও জেলেরা নদীতে জাল ফেলে চরাঞ্চলে লুকিয়ে থাকে। পরে সুযোগ বুঝে জাল তুলে নেয়।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা টাক্সফোর্সের সভাপতি মো. আব্দুস সবুর ম-ল বলেন, গভীর রাতে অসাধু জেলেরা মা ইলিশ শিকারের চেষ্টা করছে। তবে জেলা টাস্কফোর্স সদস্যরা সর্তক রয়েছে। দিনরাত পদ্ম-মেঘনায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে। একই কথা জানান নৌপুলিশের এসপি সুব্রত কুমার হালদার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।