আন্তরিক মৃত্যুবোধ থেকেঅর্ধেন্দু বিশ্বাসঝরে পড়ছে শীতের বিবর্ণ পাতানিয়ত ঘূর্ণায়মান এই সময়পার হচ্ছে অসংখ্য আলো আঁধারবাইরে নদী বয়ে যাওয়ার শব্দএসময় কারা অনাবশ্যক বাইরে বেরিয়ে আসছে?এসময় কারা অহেতুক ভাঙছে নিস্তব্ধতা?অশ্বত্থ পাতা থেকে ঝরে পড়ছে দু-এক ফোঁটা অশ্রুতার ক্রন্দন আজ সর্বব্যাপীমানুষের ক্রমবিবর্তনের থেকে...
তোষক তৈরির মানুষটি আফজল আলিসমুদ্রের ধারে বেড়াতে গিয়ে একটা খাসির মাংসের সপ দেখলামএই শহরে বেঁচে থাকার মতো যে আশ্রয়টি সেটা হল আমার ঘরপুরনো কিছু কাজুবাদাম আমার হাতেআমি কিছুতেই অস্বীকার করতে পারছিলাম না সমুদ্রের ঢেউ মন কতটা উদাসীন করে দিতে পারে মাথার...
শরতের বৃষ্টিতেমাসুদ চয়নশহরের রাস্তাগুলো যেন কর্দমাক্ত আঁষটে গন্ধের ধানক্ষেত,স্থবির শিল্পকর্মের মতো জেগে আছে-হলুদাভ সবুজের নিবিড় মেলবন্ধন পরাবাস্তবিক উৎকর্ষে নিবন্ধিত হচ্ছে,এ যেন গ্রামীণ পথ প্রকল্প-গহীন শুভ্রতা পেয়েছে নাগরিক কোলাহল-শরতের অনাকাঙখিত বৃষ্টিতে নাব্যতা পেয়েছে রাজপথ ম্যানহোলগুলো,হাটু গেড়ে বসে আছে ভাদি পুঁটি শিকারী।নতুন...
পিতার প্রার্থনা আব্দুল হাই শিকদার আমার একহাতে পরম উৎসব অন্য হাতে নিবিড় প্রকৃতি মাঝখানে পিতার হৃদয় সকল কালের সব পিতাদের কথিত ও অকথিত কাহিনী জড়ানো এই হৃদয় হৃদয় নির্বাক এখন বারুদ ও বোমায় হৃদয় নিঃশব্দ হয়ে মৃত্তিকায় দাঁড়ায় আমার পরমের জন্য দরকারএকটা খুব নিবিড় প্রকৃতি...
রোজাকে দরকার আবদুল হাই শিকদার সকল কিছু বক্র যখন কে করে সব সোজা?রমজানের পর্দা তুলে হাসেন তখন রোজা! ঘর দরোজা মলিন হলে করাতে হয় রঙ,তলোয়ারকে রাখতে তাজা ছাড়াতে হয় জং।ব্যায়াম ট্যায়াম না করালে শরীর মহাশয়,কেমন করে পাঠ ও খেলায় হবে গো ফার্স্টবয়! বাগান জুড়ে...
ছুটকো রজব বকশীএকমুখে কত কথা। তারও বেশি নীরবতা দুচোখে অনেক দেখা। তুমিহীন সব ফাঁকা দুহাত ধরতে জানে। কখনো ছোবল হানে পায়ে পায়ে পথচলা। জীবনের ছবি আঁকা। গল্প বলাকতকিছু শুনি জানি। কতটা বা কাজে আসে। মানি অনেক কিছুর ঘ্রাণ পাই। আবার দুর্গন্ধে...
মিজানুর রহমান তোতা সেই চোখ খুঁজিযে দু’টো চোখ আমাকে সব সময় দেখতো ইশারায় কাছে ডাকতোচোখে চোখ রাখতোভাব ভাষা হারাতোঅনুভূতি জাগাতোকথা বলতো হাসাতো রাগাতো কখনো দুরে ঠেলে দিতোসে দুটো চোখ হারিয়ে গেছে সুদুরে।চোখে চোখ রাখার চোখ খুঁজে পাই নাউদভ্রান্তের মতো ছুঁটে চলেছে...
জা হা না রা আ র জু হে অরণ্য হে অরণ্য, আমাকে আর একটু ছায়া দাও, সুদীর্ঘ পথ হেঁটে হেঁটে আমি ভয়ানক ক্লান্ত এখন-কিছু সুপেয় ফল দাও, ফুল দাও, দাও বনলতাছায়া ঝোপ, স্নিগ্ধ বাতাস দাও- কিছু পাখির ভোরের কণ্ঠ-শিষ দাও এবং...
পদাবলিখোদেজা মাহবুব আরাজীবন হোক পুন্যবতী জীবন দুঃসহ হউক, কিছু ভালো যদি হয় হৃদয় খুঁড়ে নিক সুখ, তবুতো প্রকৃতি সহায় শরীরের বাকে বাকে যন্ত্রণা, ধুসর আমার সকাল সুন্দর স্বপ্নের ভুবনে শুধু কাটিয়ে যাই কিছুকাল অশুভ সব নিয়ে যাক কোন ঝড়ো বাতাস প্রকৃতির...
জা হা না রা আ র জু পদ্মাপাড়ের গাঁথা সেই পদ্মা, রূপবতী পদ্মা, ছুঁই ছুঁই করছে এখনমসজিদ-মাদ্রাসা-ডাকঘর-হাসপাতাল হাট-বাজার-ফলবতী আম কাঁঠালের বাগান, কবরস্থান, বুকভরাশস্য-শীষ নিয়ে ডুবে গেছে সাধ্যের ক্ষেত খামার,সোনাভানের সচ্ছল সংসার, রঙিন ফুল তোলা শিকা,বেড়ায় টাঙ্গানো জোড়া পাখি ‘সুখে থাক’, ফুলের ওপরঝিমধারা...
খোদেজা মাহবুব আরা বিভাজন আলোর পথের যাত্রী, অন্ধকার মজ্জাগত, অজস্র নক্ষত্র, বুকের নিশব্দ হিমস্রোত, তবু অপেক্ষায় আনত,দূরবর্তী অন্ধকারে থেমে থাকা আলো, স্বর্গীয় স্বত্তার আপ্লুত প্রহর, পথের দিগন্তে বর্ননাতীত নিজস্ব ভুবন, ক্রমশ এগিয়ে আসে নিস্তব্ধ অগ্নিকুন্ডের স্রোত, কম্পমানে জেগে উঠা কোন অচেনা সুর,...
কাজিম রেজা মনে ছিল মাঝ গাঙে খালি নৌকা কেউ নেই ঢেউয়ে দুলছে কেন স্থির এক তালে ?প্রশ্নটি রয়ে গেছিল মনে কতকাল আগে বিস্তৃত পদ্মার ঢালে । অর্থটা দাঁড়ায় নিদারুণ শুকনার দিন-কালেঅর্থবহ হতে থাকে আরো... সকলে তোমাকে নদী ভুলে যেতে চায় ! শাহীন রেজাঅভিমান বুকের...
জাফর পাঠান বৈশাখী মাতন মৃদঙ্গ বাজিয়ে মেতে উঠো আজ বৈশাখীর মাতনেপেয়োনা ভয় অত্যাচারী ঐ কালবৈশাখীর যাতনে, পৃথ্বীর বাঙ্গালীরা গাইবে আজ- বাঙলা জয়োগানসপ্তরঙ গায়ে মেখে বঙ্গনারী- হবে ফুলো বাগান। বীর্যবান পহেলা গ্রীষ্ম- পরবে ঋতুরাজের তাজভয় করোনা বঙ্গ, ভয়াল মেঘেরা যদি ফেলে বাজ,বৈশাখী মেলায় সাজবে...
জাহানারা আরজুতোমরা ছিলে তোমরা আছ তোমরা ছিলে, তোমরা আছো যেমন করেসুপ্ত বীজে সবুজ অরণ্যানীর বিপুল সম্ভার থাকেযেমন করে হলুদ সূর্যের বুকে তপ্ত রশ্মি-শায়ক থাকে-হৈমন্তী সোনাধান মাঠের বুকেজুড়ে সোনালী চাদর হয়ে থাকে,তেমনি করে-তোমরা আছো!তোমরা মায়েদের বুকে শীতের উত্তাপ হয়ে আছো,বোনের স্নেহ বৃষ্টি-স্নাত...
জাহানারা আরজু এ আমার স্বদেশ আমার স্বদেশ আমার বুকের গভীরে দিনরাত কথা বলে, আমার স্বপ্নে সুপ্তিতে জাগরণে কর্ম কোলাহলে, দুঃখের দাবানলে, কখনো খুশির পুষ্পিত পরাগে আমার স্বদেশ কথা বলে? আমার স্বদেশ-বর্ষায় বাদলে, চৈত্রের খা-খা রৌদ্দুরে শীতের তুহিনে কখনো ব্যথা-নীল ঢল, কখনো অগ্নিগিরি...
রকি মাহমুদ অশ্রুশোভিত চোখ প্রকৃতি এখোন মেতে উঠেছে বৃষ্টি বৃষ্টি খেলায়প্রলুব্ধ স্পর্শময় শব্দে নিরন্তর বুনে চলেছে শিল্পজলএযেনো কোনো অকাল বৈধব্যের শিরোনামহীন কান্নামাঝে মাঝে শব্দে-নৈঃশব্দ্যে বাতাসের চকিত চোরা চুম্বনগাঢ় অন্ধকারে বৃক্ষের আড়ালে বিদ্যুৎ এঁকে দেয় আঁধারের আল্পনামায়াবী অতীত পরিত্যক্ত স্বপ্নের শরীরে ফুটায় নৈঃসঙ্গের...
বিশ্বজিৎ মন্ডলঅন্ধকারের তৃষ্ণা কখন আলোকবর্ষের দিকে ভাবিনি, আমার পুনর্জন্ম...একাই তো হেঁটেছি এতকালআজ স্বজন এসে দাঁড়াতেই বদলে গেল পথসঙ সেজে বেরিয়ে গেল, আমার অবয়বঅথচ দ্যাখো,একা ন্যুব্জ আমিতোমার তেইশের দুরন্ত পৃষ্ঠায় এঁকে গেছি অবিনাশী ঢেউততক্ষণে একদল ক্লাউন শহরজুড়ে লিখে ফেলেছেআশ্চর্য ট্রাপিজ... রকি মাহমুদআষাঢ়স্য রাগমোচন নীল...
পল্লব গোস্বামীআমার রবীন্দ্রনাথ ও তুমি তোমার বার্গান্ডি রঙের চুলে আস্ত একটা বিকেল ভেঙেউড়ে যাচ্ছে তেইশ বলাকা । কালোকিত চোখের কোপাইয়ে মিশে যাচ্ছে উড়ো ভাবনাদের মতো মেঘ ।খোয়াইয়ের খোয়াব হাওয়া । আশরীর ছাতিম গন্ধে জেগে উঠছে শান্তিনিকেতন । অচ্ছুত উপমা থেকে অনেক...
সৈয়দ আসরার আহমদকুসুমকলি ও কৃষ্ণকলি সংলাপ কুসুমকলিকে ডেকে কৃষ্ণকলি বলে,এ জীবনে সুখ ছাড়া দুঃখও তো মেলে।কুসুমকলি বলে, সুখ কি? আর দুঃখই বা কি?বুঝি না সেসব! বৃন্তে ঝুলে বেশ আছি এই তো, এটাই উৎসব।তুমি বুঝি সুখ পেয়ে দুঃখের পেয়েছ খোঁজ!তাই কৃষ্ণনামের গুণকীর্তন...
আহসান সাব্বিরওপার ভাবনা হাতছানিতে ডাকছে মরণ যাচ্ছে জীবন অস্থাচল,মিশবে দেহ মাটির সাথে থাকবে না আর অঙ্গে ঢল।উড়াল দিলে জান পাখিটি থাকবে পড়ে নিথর শব,থাকবে না আর রঙিন ভুবন সাঙ্গ হবে রঙ্গ সব।মরণ পরে তোমার বসত আঁধার ঘেরা ওই কবর,কেমন হবে সেই...
জাহানারা আরজু হে অরণ্য, আমাকে আর একটু ছায়া দাও হে অরণ্য, আমাকে আর একটু ছায়া দাও, সুদীর্ঘ পথ হেঁটে হেঁটে আমি ভয়ানক ক্লান্ত এখন-কিছু সুপেয় ফল দাও, ফুল দাও, দাও বনলতাছায়া ঝোপ, স্নিগ্ধ বাতাস দাও- কিছু পাখির ভোরের কণ্ঠ-শিষ দাও এবং পবিত্র...
নিষ্করুণ সময়ের কাছে আর একটু সময় কি যায় না পাওয়া, আর একটু সময়-পোড় খাওয়া এই অসমাপ্ত জীবনটা তাহলে আর একবার ঘঁষে -মেজে নিতেম ঝকমকে করে, যত খুঁত আছে, যত আছেফাটল, আগাছায় ভরা ঝোঁপঝাড়গুলো সাজাতাম তাহলে আর একবার নতুন করে, জীবনের ফুলের...
জাহানারা আরজু এ আমার স্বদেশ আমার স্বদেশ আমার বুকের গভীর দিনরাতকথা বলে, আমার স্বপ্নে-সুপ্তিতে, জাগরণে কর্মকোলাহলেদুঃখের দাবানলে, কখনো খুশির পুষ্পিত পরাগেআমার স্বদেশ কথা বলে।আমার স্বদেশÑবর্ষার বাদলে, চৈত্রের খা-খা রৌদ্দুরে শীতের তুহিনেকখনো ব্যথা-নীল ঢল, কখনো অগ্নিগিরি দাবাগ্নি দহনে-দহন,কখনো দুঃসহ ব্যথা-জমাট বরফ-সাগরÑতবু কথা বলে,...
জাহানারা আরজুকেনরে পালাস চর্যার হরিণী আমার কেনরে তুই আবার ছুটে পালাস চর্যার হরিণী আমার?যাক না ওরা সব যে যেখানে যাবার- তুই থাক বুকজুড়ে এখানেই আমার।জানি তোকে দিন-রাত ধাওয়া করে শিকারীর দল, বুকেতোর লাগে শর, ঝরে অবিরল শোণিতের ধারা। তোর ওই সজল...