স্বতন্ত্র উৎসব ঈদ
এল ঈদুল ফিতর, এল ঈদ ঈদ ঈদসারা বছর যে ঈদের আশায় ছিল নাক’ নিদ। হ্যাঁ, সুদীর্ঘ
জাহানারা আরজু
হে অরণ্য, আমাকে আর একটু ছায়া দাও
হে অরণ্য, আমাকে আর একটু ছায়া দাও,
সুদীর্ঘ পথ হেঁটে হেঁটে আমি ভয়ানক ক্লান্ত এখন-
কিছু সুপেয় ফল দাও, ফুল দাও, দাও বনলতা
ছায়া ঝোপ, স্নিগ্ধ বাতাস দাও- কিছু পাখির ভোরের
কণ্ঠ-শিষ দাও এবং পবিত্র চন্দ্রলোক দাও!
আমার বিনিদ্র রাত ফুলের জলসায় ভরে দেবে নাকি
আর একটিবার, মরুর দাবদাহে বুকের চত্বর জ্বলছে
খাঁ খাঁ, হীরক কুচি বৃষ্টির অফুরন্ত বর্ষণ দাও-
তৃষ্ণার্ত আমার অণুপরমাণু সুশীতল বারিধারা চায়!
আমার আবদ্ধ আখরগুলো আবার সমুদ্রের উদ্বেল
ঢেউ হতে চায়- হতে চায় শ্বেত বলাকার পাখায়
উড্ডীন, নীলাকাশ ছুঁয়ে ছুঁয়ে শান্তির অন্বেষায়
খুঁজে পেতে চায় অসমান একটি পৃথিবীর ঠিকানা-
এবরো থেবরো এ বিশ্বের চিত্রপটে প্রতিটি মানব শিশু
একই আসনে পাবে পর্যাপ্ত আহার, তৃপ্তি পাবে
জঠর জ্বালার-
সে পৃথিবী রমণী ললনার পবিত্র অঙ্গে অঙ্গে যেন
বিষাক্ত সাপের কালো ছোবল না পড়ে আর-
পথে প্রান্তরে আর যেন দেখতে না হয় জোয়ান
ছেলের লাশ- সন্ত্রাসের দানব হাতগুলোর মারণাস্ত্র
ভরে উঠুক ফুলের স্তবকে স্তবকে!
আমাদের স্নায়ুর শিরা-উপশিরা বড় ক্লান্ত এখন-
জনারণ্যে মানুষের মুখোশে ঘুরছে হিংস্র পশুদল-
বড় ভয় হয়, কখন ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্ত চুষে নেবে ওই
নরখাদকের দল-
হে অরণ্য তাই অভয় আশ্রয় দাও! ছায়া দাও!
অসমান পৃথিবীর পথ হেঁটে হেঁটে আমি ভয়ানক ক্লান্ত এখন।
রকি মাহমুদ
দূরত্বের বিভীষিকায় ঝলসে যাচ্ছি
জীবন প্রকাশ পায় প্রতিটি প্রত্যুষে,প্রদোষের আলিঙ্গনেচ্ছায়
পথের দেহ সযত্নে লালন করে ক্লান্ত পথিকের পদচিহ্ন
দৃষ্টির নিগড়ে বাঁধা কেবলী বিষবৎ বিরহের দ্রোহ
স্বপ্নেরা সাঁতার কাটে বিশাল দুঃস্বপ্নের সমুদ্র সঙ্গমে
প্রদীপ্ত উৎসবেও জীবন ভাঙ্গে নৈশকালীন নিঃস্তব্ধতায়
তোমার গভীরে যাওয়া হলনা নিঃসঙ্গ একা থাকার বাসনায়
আমার সত্ত্বায় জেগে ওঠে তবু অভিমানী ভালোবাসার উৎসব
চকিত দৃষ্টিতে খুঁজে ফিরি শ্রেয়সী মনের প্রেমজ আভাস
অথচ; কী নিবিড় নির্লিপ্ত নিশ্চয়তায় প্রতিনিয়তই
আশ্চর্য দূরত্ত্বের বিভিষিকায় ঝলসে যাচ্ছি,ঝলসে যাচ্ছি।
সৈয়দ আসরার আহমেদ
হযরত মুহাম্মদ (দঃ)
তুমি যদি চোখে দেখ শুধুই আধাঁর
সম্মুখে বিশাল সাগর নেই পারাপার
তোমাকে পেরুতে হবে কোন দূর্গম বন?
তখন
শ্বাপদ সঙ্কুল সেই বনে
ঢুকে পড়ো দ্বিধা মনে
নিমেষে তোমার পাশে দাঁড়াবেন যিনি
মরুপথ পেরিয়েছেন হেলায় সেজন্য
তাঁর পথে চললেই আলোকমালায়
দূর হয়ে যাবে যত আঁধার মলিন
সাগরও দেখবে কেমন করে দেবে পথ
ছুটবে তোমার শুধু বিজয়ের রথ
দূর্গম বন সেও বলবে তোমায়,ভয় নেই
চলে আসো উম্মতে নবী
দ্বীনে মুহম্মদী
যার পথে চলে বহু মানব সন্তান
হয়েছে সফলকাম তাতো তুমি জানো
শুনেছো তো সেইসব শোহরত
মানুষের কল্যাণে নিবেদিত প্রাণ
তিনিই তো আল্লার সেরা নিয়ামত
তিনি তো বিশ্বনবী হযরত মুহম্মদ
সাল্লাল্লাহোআলাইহে ওয়া সাল্লাম।
ফাহিম ফিরোজ
আঙ্গুলের তিন দাগের উপর
মেললে গোপনে হাত-আঙ্গুলের তিন দাগের উপর। মনে হয়
পাঁচটি আঙ্গুল ট্ল ট্লায়মান এখন। এটা বিত্তের লক্ষণ
জ্যোতিষী ভাষায়। বাস্তবেও তাই; খস্্খস্ েশব্দের ভেতরে থাকো
মরা পাতার জীবন কখনোই টেকষ্ট করোনি, ব্রাত্যে স্রোত এড়িয়েই থাকো
রান্নাও স্বাস্থ্যসমেত। সম্পর্ক গভীর আড়াল অথচ পরমাণুধর্মী
বহুকাল বেঁচে থাকে। কোনো গাছ বাঁচতে দেবে না প্রতিশোধে
যেমন বাঁচতে দেইনি কেউ আমাদের হিংসায়
এতোদিন কেউ তা বলিনি মুখে কিন্তু আচড়নে এখনো গোলাপ...
কামনার সুচ দিয়ে খুঁচিনি কখনো। তাই এখনো সুঘ্রাণ
এই সেদিনও আমার একটি হাতধরে শিশুবৎ
বাড়ির রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে, অন্য হাত দিয়ে দোকানের ফাস্টফুড খেলো
আমি হাসলাম। শিশুকাল এখনও তারে কঠিন খামচি দিয়ে আছে
আর অন্যরা? আলোর বদলে কেবল অন্ধকার মেলে আছে
অমনি অমনি আমি দ্রুত ভয়ে সরে গেছি
যে আমার হাড়ের সুরঙ্গে নিগুঢ় অরব ভাবে বয়ে দিছে তড়িৎপ্রবাহ
তার থেকেই উৎসারিত ডায়েরীর উঁচু উঁচু কালার্দ্র পাহাড়!
৩/৪/২০১৭
আলম মাহবুব
ঐতিহ্য
আমাদেরতো ছিল খৈ ফোটা জোছনা
বৃষ্টিব ফাগুন, বর্ষার বিলে কৈয়ের ঝাঁক
হেমন্তের নবান্নে মুঠো ভরা আলোর স্বপ্ন
কাঁঠালি ছায়ায় ঘুঘু ডাকা তরল দুপুর।
আমাদেরতো ছিল নদীর বাঁশি
জলের বাউল, বাদাম তোলা নায়ের সারি
লাল নীল প্রজাপতির ভীড়ে
সন্ধ্যার ঝিঁ ঝিঁ ডাক
শীতল পাটিতে রূপকথা কাহিনী।
আমাদেরতো ছিল পাল্কীতে রাঙা বৌ
গামছা বান্ধা দই, ইষ্টিকুটুম
আমাদেরতো ছিল রাখাল বন্ধু মোষের শিং
আমাদেরতো ছিল পদ্মদীঘীর
শান বাঁধানো ঘাটে আলোর প্রহর
বটের ছায়ায় চাঁদের হাঁট
আমাদরতো ছিল ছৈঅলা নায়ে ভাটির টান
কলসী কাঁখে গাঁয়ের বধূ জলকে চলা নদীর ঘাট।
রোকেয়া ইসলাম
অনন্ত ঘুম
ভাদ্রের উতপ্ত দিনটাকেই বেছে নিলাম দীর্ঘ শীতল ঘুমের জন্য
সূর্যের আলো যতই প্রগাঢ় হোক আজ আমি ঘুমাতে চাই
টেবিলের প্রাতরাশে আড়ি চেনা প্লেট মগ যাই ডাকুক
তবুও উঠব না আজ এলারামে ধুলো, জেগে ওঠার স্পর্শ ছুটিতে
দুচোখের পাতায় অনেক ভার- বাড়াবাড়ি...
হুইসেল বেজে ব্যস্ত নীল অনল কেতলীতে আটপৌরে জল
থরে থরে সাজানো কাপ পিরিচ অদম্য নিবির ঘুমে বিভোর
সুগন্ধি সাথে নিয়ে গোলাপ ফুটুক কি ঝরে পড়ুক
তাতে কি আসে যায়? প্রস্ফুটিত মর্নিং গ্লোরী রোদের তাপে
গুটিয়ে নিক লাবণ্য সূধা বড্ড ঘুম পায়...
জল জোছনার এক ঘর যাপন ষড়ঋতুর খতিয়ান
কে যেন একদিন ডেকেছিল দূরে সবুজের আহ্বানে
সব রইলো পেছনে পড়ে আজ আমি ঘুমাব, ঘুমাব, ঘুমাব
অপার শান্তিতে মাটির বিছানা নিশ্চুপ
ঘাসের আমন্ত্রণে ভুল মেরে আছে
নিপাট ঘর দোর, লেখার কাগজ আর ফুলেল ছাদ বাগান...
বাজুক সেলফোন, কলিং বেল বা হাত ফসকে ভাঙা কাঁচের গ্লাস
ঘুমের কোন বিঘ্ন হবে না তাতে এমন নিশ্চিত ঘুম বহুদিন আসেনি
দুচোখের পাতা জুড়ে রোদ মেঘের ফুল পাখি গল্প বানোয়াট
বুক থেকে বেড়িয়ে যায় দীর্ঘশ্বাস, নিঃশ্বাস...
সুমন আমীন
প্রযোজ্য নও
জীবন এখন নিকষ আঁধার কালো
চারিদিকে মৃত্যু প্রেতের ভূমি
কাছে এসে বুঝি অবশেষে
আমার জন্য প্রযোজ্য নও তুমি।
সুখের আশায় মরীচিকার পিছু
ত্রিমোহনায় ডুবো ডুবো তরী
চোখের তারায় শুধুই পরিহাস
কোনটি রেখে কোনটি বলো ধরি!
কি লাভ বলো সুখ সুখ খেলায়
কৃত্রিমতায় সেজে পরিপাটি
মনের ভেতর দ্বন্দ্ব রেখে রেখে
বালুচরে একলা যদি হাঁটি।
তাইতো একা কষ্টটাকে চুমি
আমার জন্য প্রযোজ্য নও তুমি।
হারুন আল রাশিদ
হৃদয়টা কুসুমাস্তীর্ণ করো
একটা পল্লবিত বৃক্ষের বন্ধু হয়ে যাও
একটা সুরভী ছড়ানো কুসুমের
বন্ধু হয়ে যাও একটা মায়াবী আঁখির পাখির
বন্ধু হয়ে যাও একটা বাতাস খেলানো সবুজাভ মাঠের
বন্ধু হয়ে যাও একটা সোনালি ফসলী জমির
বন্ধু হয়ে যাও। কবি!
হৃদয়টা কুসুমাস্তীর্ণ করে দেখো-
পৃথিবীটাই বন্ধু হয়ে যাবে।
শুভ্রতার কাছে পরাজিত হতে চাই
হারুন আল রাশিদ যে রাতে প্রথম কাছে পেয়েছিলাম
শুরুতেই পুষ্প বিকশিত করিনি
চাহিদার বলীতে স্পর্শের তরল অনুভূতি থেকে দুই হাত
সংযত করি পিপাসিত চোখের লালিত তৃষ্ণাকে
সংযত করি কিছু একান্ত জিজ্ঞাসা ছিলো
সুরভিত উত্তরে উদ্বেলিত হয়ে
স্রষ্টার কাছে নতজানু হই
প্রিয়তমা! বিশ্বাস করো
শুভ্রতার কাছে পরাজিত হতে চাই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।