Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মাশরাফির প্রত্যাশা, মাশরাফির হতাশা

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২১ সেপ্টেম্বর, ২০১৭, ১২:০০ এএম


শেষবার যখন বাংলাদেশ দক্ষিণ আফ্রিকা সফর করেছিল তখন বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের চিত্রটা ছিল ভিন্ন। দুই টেস্টের দুটিতেই হেরেছে ইনিংস ব্যবধানে। ঐবার বাংলাদেশ দলে ছিলেন বর্তমান ‘বিগ থ্রি’খ্যাত মুশফিক, সাকিব, তামিম। তবে বয়সে তরুণ ছিলেন তিনজন ক্রিকেটারই। বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে সফল হতে না পারলেও বল হাতে ঠিকই সফল ছিলেন সাকিব আল হাসান। দুই টেস্টেই পাঁচ উইকেট শিকার করেছিলেন সাকিব। ব্যাট হাতে দলের হয়ে সফল ছিলেন কিশোর মুশফিক। দুই টেস্টে করেছেন ১১৭ রান, রয়েছে ৬৫ রানের একটি ইনিংসও। প্রথম টেস্টে মাত্র ২ রান দূরে থেকে ৪৮ রানে আউট হয়েছিলেন মুশফিক। তবে সময়ের সাথে বদলেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট, বদলেছে ‘বিগ থ্রি’ রাও। ২০০৮ সালে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিব থাকলেও, এবারে তাকে পাচ্ছেনা দল। ব্যক্তিগত কারণে টেস্ট থেকে বিশ্রাম নিয়েছেন তিনি।
তবে সেবারে তরুণ তামিম, মুশফিক বর্তমানে অনেক পাকাপোক্ত ক্রিকেটার, সাথে রয়েছে অভিজ্ঞতাও। একজন দলকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন আরেকজন ডেপুটি হিসেবে কাজ করছেন। আসন্ন সিরিজে দলের দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মুশফিক, তামিমকেই মূল দায়িত্বটা নিতে হবে। সেবার দলে ছিলেন বর্তমান ওয়ানডে অধিনায়ক মাশরাফি মর্তুজা। দীর্ঘ সময়ের পর গেলেও কন্ডিশনটা একটু পরিচিতই তার জন্য। দলের জন্য বড় চ্যালেঞ্জটা হবে পেস বোলিংয়ে। প্রোটিয়া কন্ডিশনে পেসারদের কাছে ভুগতে হবে ব্যাটসম্যানদের। পেস কন্ডিশনের সাথে তামিম-মুশফিকের পরিচিতিটা নতুন না হলেও সচারচর না খেলাতে খানিকটা সমস্যায় পড়তে হবে তাঁদের।
পেস কন্ডিশন মাথায় রেখেই টেস্ট দলে পাঁচ পেসার নিয়ে সাজিয়েছে দল। সেখানে মূল চ্যালেঞ্জটা যে পেসারদের জন্য হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। দ্বিমত পোষণ করছেন না মাশরাফিও। ওদের পেস বোলিং তামিম-মুশফিকদের ভুগালেও তাঁদের মোকাবিলা করার সামর্থ্য রয়েছে ব্যাটসম্যানদের, ‘দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের আসল চ্যালেঞ্জটা হবে ওদের পেস বোলিং। তবে পেস বোলিং সামলানোর মতো ব্যাটসম্যানও আমাদের আছে। ওয়েলিংটনেও আমরা ৬০০ রান করেছি। অবশ্য সাকিব সে টেস্টে ২০০ করেছে, ও এবার নেই। তবে অন্য ব্যাটসম্যানদেরও ভালো করার সামর্থ্য আছে। আর টেস্ট জিততে হলে আমাদের বোলারদের ২০ উইকেট নিতে হবে, এটা তো জানা কথাই।’
বাংলাদেশের টেস্ট ফর্ম সা¤প্রতিক সময়ে দারুণ। দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড, লঙ্কানদের মাটিতে ম্যাচ জয় এবং সদ্য শেষ হওয়া অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্টে জয় দলকে বড় আশা দেখাতেই পারে। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে ওদের মাটিতে জয়টা যে সহজ হবে না সেটি সবারই জানা। জয়ের আগে সমানে সমানে লড়াই করাটাকেই এগিয়ে রাখছেন মর্তুজা, ‘জয়ের কথা আমি বলব না। কারণ আমাদের এই দলের বেশির ভাগ খেলোয়াড় আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় খেলেনি। তবে সা¤প্রতিক সময়ে আমরা ভালো খেলছি। আমি চাই, আমাদের দল সেখানেও ভালো ক্রিকেটটাই আগে খেলুক।’
তবে এত কথার ভিড়ে লুকাতে পারেন নি একটি হতাশা। জাতীয় দলের হয়ে সাদা পোশাকের ক্রিকেট ছেড়েছেন দীর্ঘ ৮ বছর। ইনজুরির কারণে টেস্ট ক্রিকেটে ফেরা হয়নি বাংলাদেশ দলের ওয়ানডে অধিনায়কের। তবে এখনও হাল ছাড়েননি। দীর্ঘ ৪ বছর পর ঘরোয়া ক্রিকেট জাতীয় লিগে নেমেছেন মাশরাফি। সাদা পোশাকের ক্রিকেটে বল হাতে সাফল্য পেয়েছেন তিনি। খেলবেন দ্বিতীয় রাউন্ডেও। তবে জাতীয় দলের হয়ে খেলতে না পারার আক্ষেপ কিছুটা রয়েই গেছে মাশরাফির। ওয়ানডে ক্রিকেটের মতো টেস্টেও বাংলাদেশ দলকে আরো বেশি সার্ভিস দিতে চেয়েছিলেন তিনি। ইচ্ছে ছিল দলের হয়ে পুরোপুরি ফিট থেকে ১২-১৪ বছর টেস্ট খেলার কিন্তু ইনজুরির কারণে সেটি আর হয়ে উঠেনি। তবে দিনশেষে ক্রিকেটে তার কোন অপূর্ণতা নেই বলে মনে করেন মাশরাফি, ‘প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু না কিছু অপূর্ণতা থাকেই। আপনি যদি আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারের দিকে লক্ষ্য করেন, দেখবেন প্রায় ১৭ বছরের মতো খেলছি। এর ভিতর টেস্ট ক্রিকেটটা যদি সম্পূর্ণ ফিট হয়ে ১৩-১৪ বছর খেলতে পারতাম, হয়তো বাংলাদেশ ক্রিকেট পরিবর্তন না করতে পারলেও, অনেক কিছুই দেওয়ার ছিল আমার।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাশরাফি

১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ