মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ইনকিলাব ডেস্ক : আগামী কয়েক দশকের মধ্যে বিশ্বে জনসংখ্যা আরো বেড়ে যাবে। এই বর্ধনশীল জনসংখ্যার প্রয়োজন মেটাতে জ্বালানি চাহিদাও বেড়ে যাবে। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি খাতের ভবিষ্যৎ কেমন হতে পারে, সে বিষয়টিই গুরুত্ব পাচ্ছে ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস পেট্রোলিয়ামের (ডবিøউপিসি) চলতি বছরের সম্মেলনে। অন্যদিকে জ্বালানি খাতে গত বছরও বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় ভবিষ্যতে গোটা বিশ্ব তেল ও বিদ্যুৎ ঘাটতির সম্মুখীন হবে বলে আশঙ্কা করছে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। ব্রিজেজ টু আওয়ার এনার্জি ফিউচার’ থিম নিয়ে ইস্তাম্বুলে গত রোববার থেকে ডবিøউপিসির ২২তম সম্মেলনটি শুরু হয়েছে। এবারের পাঁচ দিনব্যাপী সম্মেলনে তেল ও গ্যাস শিল্পের কোম্পানিগুলো অংশ নিয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের ৫০ জন মন্ত্রী, অর্ধশতাধিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাসহ আরো ২০ হাজার অংশগ্রহণকারী সম্মেলনে যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। জ্বালানি উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ক্রেতাদের যোগসূত্র স্থাপনের পাশাপাশি জ্বালানি খাতের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আলোচনা করা হবে এখানে। রোববার রাতে সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রেক্স টিলারসনকে সর্বোচ্চ সম্মানে ভূষিত করে ওয়ার্ল্ড পেট্রোলিয়াম কাউন্সিল। সম্মেলনে অংশ নিয়ে রয়েল ডাচ শেলের সিইও বেন ভ্যান বিউরডেন বলেন, বর্তমানে বিশ্বে ৭৫০ কোটি মানুষ রয়েছে। ২১০০ সাল নাগাদ তা ১ হাজার ১২০ কোটিতে উন্নীত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সবকিছু ছাপিয়ে আফ্রিকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির প্রভাব বেশি অনুভূত হবে। চলতি শতাব্দীর শেষ নাগাদ বিশ্বে ৩৬০ কোটি নতুন মুখ যুক্ত হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এর মধ্যে আফ্রিকাতেই থাকবে ৩২০ কোটি জন। এতে করে দ্রæত এগিয়ে যাওয়া উন্নয়নশীল দেশগুলোর পরিবর্তে জ্বালানি রূপান্তরের প্রক্রিয়া ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকামুখী হয়ে উঠতে পারে। শেলের প্রধান নির্বাহী আরো বলেন, পরিশোধিত ও অপরিশোধিত উভয় ধরনের তেল এবং গ্যাসের চাহিদা সামনের সময়গুলোয় আরো বেড়ে যাবে। বিশ্বে দ্রæত জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে তাল রেখে জ্বালানির মিশ্র চাহিদা পূরণ কঠিন হয়ে উঠবে। সউদী আরামকোর প্রেসিডেন্ট ও সিইও আমিন নাসের বলেন, ভবিষ্যৎ জ্বালানির চাহিদা পূরণের ক্ষেত্রে অপরিশোধিত শেল অয়েল ও বিকল্প জ্বালানি সম্পদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তবে তেল ও গ্যাসের স্থান পূরণের জন্য এ জ্বালানি খাতের দ্রæত উত্থান হবে, তা এখনই বলা যাচ্ছে না। তিনি মনে করেন, জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ হ্রাস ও জ্বালানির নতুন উেসর অভাবের কারণে তেল সরবরাহে ঘাটতি সৃষ্টি হতে পারে। প্রসঙ্গত, তেল খাতে নিজেদের সক্ষমতা ধরে রাখতে বড় ধরনের উত্তোলন কার্যক্রমে আগামী এক দশকে ৩০ হাজার কোটি ডলার বিনিয়োগের পরিকল্পনা করছে সৌদি আরামকো। অন্যদিকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বছরে ১০০ কোটি ডলার নিজেদের নিউ এনার্জি বিভাগে ব্যয়ের লক্ষ্য নিয়েছে রয়েল ডাচ শেল। অন্যদিকে ব্যবসা প্রক্রিয়া ও কাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দেয়ার কথা জানিয়েছে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (সিএনপিসি) চেয়ারম্যান ওয়াং ইয়েলিন। ওয়ার্ল্ড এনার্জি ইনভেস্টমেন্ট শীর্ষক প্রতিবেদনটিতে আইইএ জানিয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানি উত্তোলন, নতুন বিদ্যুেকন্দ্র, বৈদ্যুতিক গ্রিডের আধুনিকায়ন ও বিদ্যুৎ-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে গত বছর মোট ১ দশমিক ৭ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ হয়েছে। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এ বিনিয়োগ ১২ শতাংশ কম। মূলত ক্রুড অয়েলের দাম উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাওয়ার কারণে টানা দুই বছর ধরে তেল ও গ্যাস খাতে অর্থলগ্নি কমিয়ে দিয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তেলের অতি সরবরাহ ও প্রয়োজনের তুলনায় বিদ্যুৎ বেশি উৎপাদিত হওয়ার কারণে এ মুহূর্তে বিনিয়োগ হ্রাসের প্রভাব অনুভূত হবে না বলে জানিয়েছে আইইএ। তবে বিনিয়োগের এ পরিস্থিতি অব্যাহত থাকলে প্রেক্ষাপট পাল্টে যাবে। এর মধ্যে বায়ুকল ও সৌরবিদ্যুৎ স্থায়ী কোনো সমাধান হতে পারে না বলে জানিয়েছে আইইএ। কারণ এ দুটি খাতই প্রকৃতির ওপর নির্ভরশীল। স্থায়ী জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে দেশগুলোকে নতুন নীতিমালা গ্রহণের পাশাপাশি রেগুলেটরি খাতে সংস্কার আনতে হবে। সিনহুয়া, সিজিটিএন, টেলিসোর, সিএনবিসি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।