পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দখলে থাকা গুলিস্তান ট্রেড সেন্টারে (পোড়া মার্কেট) উচ্ছেদ করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। আদালতের নির্দেশে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে মার্কেটটির দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার সব দোকান উচ্ছেদ করা হয়।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম চৌধুরী ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুশ শোয়েবের নেতৃত্বে পরিচালিত হয় ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। অভিযানে সিটি কর্পোরেশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পুলিশ সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও ২০ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদ উদ্দিন আহম্মেদ রতন ইনকিলাবকে বলেন, দলের নাম ও পোস্ট পদবি ব্যবহার করে কাউকে সরকারি সম্পদ অবৈধভাবে দখল করে রাখতে দেয়া হবে না। তিনি বলেন, শুধু পোড়া মার্কেট নয়, যেখানেই ডিএসসিসি’র সম্পদ অবৈধ দখলে আছে সেখান থেকেই তা উদ্ধার করা হবে। দখলকারি যতবড় প্রভাবশালীই হোক না কেন এ ব্যপারে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
দোকান উচ্ছেদ না করতে আদালতের নির্দেশনা মানা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন দোকান মালিক সমিতির সভাপতি ও শাহবাগ থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আতিকুর রহমান আতিক। তিনি বলেন, মেয়র সাঈদ খোকন দেশে না থাকার সুযোগে ভারপ্রাপ্ত মেয়র এই মার্কেট থেকে তাদের উচ্ছেদ করার চেষ্টা করছেন। আমাদের কাছ থেকে ৩৪ কোটি টাকা নিয়েছে সিটি কর্পোরেশন। কিন্তু আজও দোকান করে দিচ্ছে না তারা। এজন্যই আমরা এখানে বসেছি। আমাদের পজিশন বুঝিয়ে দিলে আমরা এখান থেকে চলে যাব।
সিটি কর্পোরেশন সূত্র জানায়, দীর্ঘদিন ধরে গুলিস্তানের এই মার্কেটটির দোকানগুলো অভৈধভাবে দখল করে ব্যবসা করে আসছে একটি চক্র। প্রভাবশালীদের সমর্থন থাকায় এর আগেও বিভিন্ন সময়ে মার্কেটের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করতে গেলে বাধার মুখে পড়তে হয়েছে সিটি কর্পোরেশনকে। ফলেএ মার্কেট থেকে কোনও রাজস্বও পাচ্ছে না ডিএসসিসি। পরে আদালত এই মার্কেটকে দখলমুক্ত করার আদেশ দেন ডিএসসিসিকে। সেই আদেশ অনুযায়ীই অভিযান চালানো হয় গতকাল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ডিএসসিসির নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজমুশ শোয়েব বলেন, ৮-১০ বছর ধরে আমাদের এ মার্কেটটি তারা অভৈধভাবে দখল করে রেখেছে। তারা ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কোর্টে মামলা করেছে। মামলায় আদালত দোকানগুলে উচ্ছেদের আদেশ দিয়েছেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আরও বলেন, মার্কেটের ভেতরে টিনের বেড়া দিয়ে তৈরি করা অস্থায়ী দোকানগুলো উচ্ছেদ করা হয়েছে। তবে বেজমেন্টের দোকানগুলো নিয়ে মামলা চলমান থাকায় আপাতত সেসব উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণাধীন ভবনটি দখল করে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযানে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের উদ্যোগ নিলে বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল শুরু করে দখলদাররা। এসময় তাদের পক্ষ থেকে প্রতিরোধের ডাকও দেওয়া হয়। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত ও পুলিশ সদস্যদের অনড় অবস্থানে তারা এক পর্যায়ে দোকান থেকে মালামাল নিয়ে চলে যেতে বাধ্য হয়।
দোকান মালিক সমিতির সভাপতি জি এম আতিকুর রহমান আরও বলেন, ২০১২ সালে হাইকোর্টে একটি রিটের প্রেক্ষিতে ঢাকার বেজমেন্টের সব মার্কেট অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আমরা মার্কেটের পক্ষ থেকে একটি আপিল করি, যা এখনো বিচারাধীন। এই অবস্থায় সিটি কর্পোরেশন আমাদেরকে উচ্ছেদ করতে পারে না।
আতিকুর রহমান বলেন, ২০০৩ সালে মার্কেটটি আগুনে পুড়ে যাওয়ার পর ১২ তলা ভবন নির্মাণের কাজে হাত দেয় সিটি কর্পোরেশন। মার্কেট করবে বলে আমাদের কাছ থেকে টাকাও জমা নেওয়া হয়। কিন্তু মার্কেটের কাজ এখনও শেষ হয়নি। এ অবস্থায় ব্যবসায়ীরা বেজমেন্টে মালামাল রেখেছে। আমরা সিটি কর্পোরেশনকে বলেছি, মার্কেটের কাজ শেষ হলে আমরা স্বেচ্ছায় বেজমেন্ট ছেড়ে দেবো। কিন্তু এখন বিনা নোটিশে বেজমেন্ট ভাঙলে আমরা কোথায় যাব? বিষয়টি নিয়ে সিটি কর্পোরেশনকে তাদের সঙ্গে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান তিনি।
এ পরিস্থিতিতে নিরাপত্তার কারণে মার্কেটটিতে অতিরিক্ত পুলিশ সদস্য মোতায়ন করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।