নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস রিপোর্টার : তাঁরার মেলায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিচ্ছিন্নভাবে নয়, এবার একসঙ্গে ৩৩৯ জন কৃতি ক্রীড়াবিদকে সংবর্ধনা ও অর্থ পুরস্কার দিলেন তিনি। গতকাল সন্ধ্যা ৬ টায় গণভবনে জাঁকজঁমকপূর্ণ পরিবেশে আয়োজন করা হয় এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের। সংবর্ধনা শেষে আমন্ত্রিতদের সঙ্গে নৈশভোজ করেন প্রধানমন্ত্রী। গেল অক্টোবর থেকে চলতি মাস পর্যন্ত দেশের খেলাধুলায় যেসব ক্রীড়াবিদ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে সাফল্য তুলে এনে দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছেন তাদের সবাইকে প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত করলেন। সংবর্ধনার পাশাপাশি ৩৩৯ জন ক্রীড়াবিদদের প্রত্যেককেই এক লাখ টাকা করে চেক প্রদান করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) তাদের ঘোষিত অর্থ পুরষ্কার এবং দু’টি ফেডারেশনকে অনুদানের অর্থও প্রধানমন্ত্রীর হাত দিয়ে বিতরণ করে। বাংলাদেশ অনুর্ধ্ব-১৬ নারী ফুটবল দল এএফসি চ্যাম্পিয়নশিপের আঞ্চলিক পর্বে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন মেয়েদের পুরস্কার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন আগেই। সেই ঘোষণা হিসেবে নারী অনুর্ধ্ব-১৬ দলকে ১০ লাখ টাকা পুরস্কার দেয়া হয়। এ ছাড়া পুর্ব ঘোষণা অনুযায়ী বিসিবি বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনকে ও সুইমিং ফেডারেশনকে এক কোটি টাকা করে আর্থিক অনুদান দেয়। এছাড়া বিসিবি পুরস্কৃত করছে স¤প্রতি শ্রীলঙ্কা সফর করা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলকেও। শ্রীলঙ্কা সফরে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি- টোয়েন্টি সিরিজে ড্র করেছে বাংলাদেশ। তাই বাংলাদেশ টেস্ট ও ওয়ানডে দলকে দেয়া হয় এক কোটি টাকা করে অর্থ পুরস্কার। সংবর্ধনা ও অর্থ পুরস্কার পেয়ে দারুণ উচ্ছ¡সিত ক্রীড়াবিদরা। বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজার কথায়, ‘আগেও প্রধামন্ত্রীর হাত থেকে আমি পুরস্কার নিয়েছি। কিন্তু ক্রীড়াবিদদের এমন মিলন মেলায় পুরস্কার নেয়ার আনন্দই আলাদা।’ আন্তর্জাতিক মহিলা মাস্টার রানী হামিদ বলেন, ‘আগেও আমি পুরস্কার পেয়েছি। কিন্তু নাতী-নাতনীদের বয়সী ক্রীড়াবিদদের সামনে এই প্রথম প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার পেয়ে ভালো লাগছে।’ উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোর্শেদও খুশী। তার কথায়, ‘১৯৮৭ সালে গ্র্যান্ড মাস্টার খেতাব জেতার পর এই প্রথম কোন সরকার প্রধানের হাত থেকে সরাসরি পুরস্কার নিয়েছি। যদিও এর আগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তবে স্বাধীনতা পুরস্কার পেলেও তা আমি দেশে না থাকায় সরাসরি নিতে পারিনি।’ এ নিয়ে দ্বিতীয়বার সরকার প্রধানের হাত থেকে পুরস্কার নিলেন আরেক গ্র্যান্ড মাস্টার জিয়াউর রহমান। তিনি বলেন, ‘২০০২ সালে গ্র্যান্ড মাস্টার হওয়ার পর তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছিলাম। এবার দ্বিতীয়বারের মতো রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তির হাত থেকে পুরস্কার নিয়েছি। খুব ভালো লাগছে।’ গত মাসে দেশে সমাপ্ত রোলবল বিশ্বকাপে রানার্সআপ বাংলাদেশ পুরুষ দলের অন্যতম তারকা খেলোয়াড় দ্বীন ইসলাম হৃদয় আবেগে আপ্লুত। তিনি বলেন, ‘আমি ভাবতেই পারিনি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে অর্থ পুরস্কার পাবো। আমার জীবন সার্থক।’ জাতীয় হকি দলের গোলরক্ষক জাহিদ হোসেনের কথায়, ‘আমরা ভাবতেও পারিনি এএইচএফ কাপে চ্যাম্পিয়ন হতে না পারলেও প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পুরস্কার নিবো। অবাক হলেও তাই ঘটেছে।’ ইসলামিক সলিডারিটি আরচ্যারি গেমসে সোনাজয়ী দলের সদস্য শ্যামলী রায়, ‘কত স্বর্ণপদকই তো জিতেছি। কিন্তু এবার সেই পদকজয়টা যেন পূর্ণতা পেল প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারায়।’ ব্যাডমিন্টনের ইরিনা, মিনহাজ কিংবা আবু জারেরও একই কথা, ‘প্রথমবার নিজেদের এতটা সম্মানিত বোধ করছি। এই আনন্দ কাউকে বুঝাতে পারবো না।’
সংবর্ধনা ও অর্থ পুরষ্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বিভিন্ন ক্রীড়া ফেডারেশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আমন্ত্রিত হয়ে উপস্থিত ছিলেন দেশের বিশিষ্ট ক্রীড়া ব্যক্তিত্বরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুব ও ক্রীড়া প্রতিন্ত্রী বীরেন শিকাদর এমপি, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা গিনি, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান জাহিদ আহসান রাসেল এমপি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক হারুনুর রশিদ, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী, সহ-সভাপতি কাজী নাবিল আহমেদ এমপি, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সদস্য শওকত আলী খান জাহাঙ্গীর,বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের মহাসচিব সৈয়দ শাহেদ রেজা, জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় এমপি,বিসিবি পরিচালক আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি, জালাল ইউনুস, আকরাম খান, যুব ও ক্রড়িা সচিব আছাদুল ইসলাম, সাবেক তারকা ফুটবলার বাদল রায়, খুরশিদ আলম বাবুল, দেওয়ান শফিউল আরেফিন টুটুল, শেখ মো. আসলাম, হাসানুজ্জামান খান বাবলু, আবদুল গাফফার, সত্যজিৎ দাস রুপু, অমিত খান শুভ্র, সাবেক তারকা ক্রিকেটার গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ও হকি তারকা খাজা রহমতউল্লাহ সহ আরো অনেকে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।