গুলিস্তানের বিস্ফোরণে নিহত ১৬ জনের নাম-পরিচয় পাওয়া গেছে
রাজধানীর গুলিস্তানের সিদ্দিক বাজার এলাকায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৬ জন নিহত হয়েছেন। এ
স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীসহ সারা দেশে ১ লাখ ৩৫ হাজার যক্ষ্মা রোগী শনাক্তের বাইরে রয়ে গেছে। বিপুলসংখ্যক যক্ষ্মা রোগী চিকিৎসাসেবার বাইরে থাকায় তাদের সংস্পর্শে নতুন নতুন রোগী আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিচালক মাইক্রো ব্যাকটেরিয়াল ডিজিজেজ কন্ট্রোল (এমবিডিসি) ও লাইন ডিরেক্টর টিভি/লেপ্রোসি ডা. রুসেলি হক এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি জানান, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরিসংখ্যান অনুসারে বাংলাদেশে মোট ৩ লাখ ৬০ হাজার যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু সর্বশেষ ২০১৬ সালে যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে ২ লাখ ২৩ হাজার জন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুসারে এখনও ১ লাখ ৩৫ হাজার আক্রান্ত রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে গেছে। অর্থাৎ শতকরা ৩৯ থেকে ৪০ ভাগ য²া রোগী শনাক্তকরণের বাইরে থেকে যাচ্ছে। ফলে এদের সংস্পর্শে আরও অনেক মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এসব রোগীকে খুঁজে বের করে শনাক্ত করা এখন বড় চ্যালেঞ্জ বলে তিনি মন্তব্য করেন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই বিপুলসংখ্যক রোগী শনাক্তের বাইরে থেকে যাওয়ায় যক্ষ্মা নির্মূলের যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে তা অর্জনে পিছিয়ে পড়তে হবে। এক্ষেত্রে ২০৩৫ সালের মধ্যে প্রতি লাখে ৯ থেকে ১০ জন রোগীর যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ হয়েছে সেটা অর্জন করা সম্ভব হবে না। যা দেশের সংক্রামক রোগ নির্মূলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে। সামগ্রিকভাবে এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাধাগ্রস্ত হবে। তারা জানান, শনাক্তের বাইরে থাকা সব রোগীই যক্ষ্মার জীবাণুবাহী নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০ মৃত্যুর অন্যতম হলো যক্ষ্মা। ২০১৫ সালে ১০ দশমিক ৪ মিলিয়ন মানুষ যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন এবং ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন মানুষ এ রোগে মারা যান। ২০১৫ সালে, আনুমানিক ১ লাখ শিশু যক্ষ্মা রোগে আক্রান্ত হয়ে। একই সময়ে বিশ্বব্যাপী আনুমানিক ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ মাল্টিড্রাগ প্রতিরোধী যক্ষ্মায় আক্রান্ত হন।
ন্যাশনাল টিবি কন্ট্রোল প্রোগ্রাম’র তথ্য অনুযায়ী ২০১৬ দেশে শিশু যক্ষ্মা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ২৯১ জন (যাদের বয়স ১৫ বছরের কম)। কফে জীবাণুযুক্ত যক্ষ্মা রোগীর রোগ শনাক্তকরণের হার প্রতি লাখে ৭৭ জন। ২০১৫ সালে জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির মাধ্যমে শনাক্তকৃৃত কফে জীবাণুযুক্ত ফুসফুসের যক্ষ্মার চিকিৎসার সাফল্যের হার ৯৪ ভাগ। ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার চিকিৎসা সাফল্যের হার ৭০ ভাগ।গ্লোবাল টিবি রিপোর্ট ২০১৬ অনুযায়ী প্রতি লাখে নতুন যক্ষ্মা রোগী ২২৫ জন। বছরে প্রতি লাখে যক্ষ্মার কারণে মৃত্যু হয় ৪৫ জনের। দেশে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগী আনুমানিক ৯ হাজার ৭০০ জন। শনাক্তকৃত যক্ষ্মা রোগীর মধ্যে ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীর হার নতুনদের ক্ষেত্রে ১ দশমিক ৬ শতাংশ এবং পূর্বে চিকিৎসাপ্রাপ্ত রোগীদের মধ্যে ২৯ শতাংশ।
আজ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রতি বছর ২৪ মার্চ বিশ্ব যক্ষ্মা দিবস পালিত হয়ে থাকে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য নির্ধারণ হয়েছে, ‘ঐক্যবদ্ধ হলে সবে, যক্ষ্মামুক্ত দেশ হবে’। দিবসটি উপলক্ষে গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বেসরকারি সংস্থা ব্র্যাক একটি আলোচনা সভার আয়োজন করে। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর ডা. রুসেলি হক। মূল উপস্থাপনা তুলে ধরেন জাতীয় যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির ডিআর-টিবির মুখ্য কর্মকর্তা ডা: নাজিস আরেফিন সাকি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সহকারী প্রতিনিধি ডা. এডউইন সালভাডর এবং ন্যাশনাল প্রফেশনাল অফিসার ডা. ভিকারুন্নেসা বেগম, ম্যানেজমেন্ট সাইন্সেস ফর হেলথের কান্ট্রি প্রজেক্ট ডিরেক্টর ওস্কার কর্ডন, বাংলাদেশের ইউ এস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্টের সিনিয়র ইনফেকশাস ডিজিজ এডভাইজার ড. চার্লস লারম্যান, ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির কর্মসূচি প্রধান ডা. শায়লা ইসলাম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে প্রেস নোট উপস্থাপন করেন ব্র্যাকের যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির সিনিয়র সেক্টর স্পেশালিস্ট ডা. মো. মাসুদ রানা। এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে এটিপিসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান নানা কর্মসূচি হাতে নিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।