নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
স্পোর্টস ডেস্ক : লক্ষ্যটা মাত্র ১৮৮ রানের। মামুলি লক্ষ্যই তো। কিন্তু এই রানই অস্ট্রেলিয়া ব্যাটসম্যানদের কাছে পাহাড়সম করে তুলল বেঙ্গালুরুরে পিচ নামক ‘চষা ক্ষেত্রটি’। নাটকে ভরা ম্যাচে আড়াই দিনের বেশি আধিপত্য বিস্তার করেও তাই শেষ হাসি হাসতে পারল না অস্ট্রেলিয়া, ১১২ রানে গুটিয়ে ম্যাচ হারল ৭৫ রানে। ভারতও বোর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির লড়াইয়ে ফিরল দুর্দান্তভাবে।
অনেক কারণেই ম্যাচটাকে মনে রাখতে হবে। টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম এক ম্যাচে ভিন্ন চারজন বোলার ছয়টি করে উইকেট পেলেনÑ ভারতের প্রথম ইনিংসে নাথান লায়ন তুলে নেন ৫০ রানে আট উইকেট, অজিদের প্রথম ইনিংসে ২৭৬ রানে গুটিয়ে দেয়ার পথে ৬৩ রানে ছয় উইকেট নেন রবিন্দ্র জাদেজা, ভারতের দ্বিতীয় ইনিংসে ৬৭ রানে ছয় উইকেট নেন জস হ্যাজেলউড, আর অস্ট্রেলিয়াকে ১১২ রানে গুটিয়ে দেয়ার পথে ৪১ রানে ছয় উইকেট তুলে নেন রভিচন্দ্রন আশ্বিন।
লায়নের কীর্তি হলো ভারতের মাটিতে কোনো বিদেশি স্পিনারের সেরা, দ্বিতীয় ইনিংসে ক্যারিয়ার সেরা পারফর্ম করেন জস হ্যাজেলউড। টানা আড়াই দিন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণও ছিল তাদের হাতে। এরপরও বেঙ্গালুরু টেস্টটা তারা তালুবন্দি করতে পারল না। মাত্র এক সেশনের ভেলকিতেই মূলত ম্যাচ কেড়ে নেয় ভারত। আরো স্পষ্ট করে বললে চেতস্বর পুজারা ও আজিঙ্কে রাহানের ওই ১১৮ রানের জুটি।
তারপরও চতুর্থ দিনের প্রথম সেশন পরেও অস্ট্রেলিয়ার পক্ষেই বাজি ধরার লোক ছিল বেশি। হাতের ছয় উইকেট হারিয়ে ২৭৪ রানে গুটিয়ে মধ্যাহ্নভোজে যায় দুইদল। শেষ ৯ বলে চার উইকেট হারায় ভারত। অজিদের সামনে তখন মাত্র ১৮৮ রানের লক্ষ্য। পিচ স্মিথদের ভেঙচি কাটলেও সম্ভাবনা তো ছিলই। কিন্তু কে জানত, এই রানই হয়ে যাবে তাদের জন্য পাহাড়সম। দেড় সেশনও দাঁড়াতে পারবে না স্টিভেন স্মিথ বাহিনী, মাত্র ৩৬ ওভারেই গুটিয়ে যাবে। শেষ ১১ রান তুলতেই তারা হারায় ছয় উইকেট।
ভারত যে এর চাইতে কম রানের পুঁজি নিয়ে এর আগে জেতেনি তা নয়। অস্ট্রেলিয়াকেই এর চেয়ে কম পুঁজি নিয়ে এর আগে তারা হারিয়েছে দুইবার। সর্বশেষ ২০০৪ সালে মুম্বাইয়ে ১০৭ রানের লক্ষ্যে নামা ম্যাকগ্রা-পন্টিংদের তারা গুটিয়ে দিয়েছিল ৯৩ রানে। এরও আগে ১৯৮১ সালে ১৪৩ রানের লক্ষ্যে অজিদের ৮৩ রানে গুটিয়ে দেয়ারও রেকর্ড আছে ভারতের।
ভারতের জন্য তো বটেই, দিনটা বিশেষ হয়ে থাকল আশ্বিনের জন্যও। মাত্র ৪৭ টেস্টে এ নিয়ে পাঁচ উইকেট নিলেন ২৫ রান। এত কম ম্যাচে এই মাইলফলক স্পর্শ করতে পারেননি কেউ। রিচার্ড হ্যাডলির লেগেছিল ৬২ ম্যাচ, মুত্তিয়া মুরালিধরণের ৬৩টি। দশম বোলার হিসাবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন আশ্বিন। একই দিনে বিএস বেদিকে (২৬৬) টপকে ভারতের হয়ে পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি বনে যান আশ্বিন (২৬৯)। এর মধ্যে দেশের মাটিতে খেলা ৩০ ম্যাচে পেয়েছেন ২০০ উইকেট। এরপরও জয়ের নায়ক আশ্বিন নয়। এমন খানাখন্দে ভরা পিচে দুই লড়াকু অর্ধশতকের কল্যাণে ম্যাচসেরা লোকেশ রাহুল। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে ১৬ মার্চ রাঁচিতে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
ভারত : ১৮৯ ও ২৭৪। অস্ট্রেলিয়া : ২৭৬ ও ৩৫.৪ ওভারে ১১২ (লক্ষ্য ১৮৮) (ওয়ার্নার ১৭, রেনশ ৫, স্মিথ ২৮, শন মার্শ ৯, হ্যান্ডসকম্ব ২৪, মিচেল মার্শ ১৩, ওয়েড ০, স্টার্ক ১, ও’কিফ ২, লায়ন ২, হ্যাজেলউড ০*; ইশান্ত ১/২৮, অশ্বিন ৬/৪১, উমেশ ২/৩০, জাদেজা ১/৩)। ফল : ভারত ৭৫ রানে জয়ী
ম্যাচসেরা : লোকেশ রাহুল (ভারত)। সিরিজ : ৪ ম্যাচ সিরিজে ১-১ সমতা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।