বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনার পল্লীতে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে সার্টিফিকেট মামলার প্রস্তুতি চলছে। খুলনার ৯ উপজেলায় বর্তমানে খেলাপী ঋণের পরিমাণ ১১ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪৭৩ টাকা। এ অর্থ আদায় করতে না পারলে গ্রামে দারিদ্র্যতা বিমোচনে সরকারের গৃহিত প্রকল্পের সুফল বাধাগ্রস্ত হবে। ইতিমধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে সরকার।
একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের জেলা সমন্বয়কারী উপ-পরিচালক বিআরডিবি খুলনা জানান, একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের কার্যক্রম বর্তমানে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। খুলনায় এ প্রকল্পে ৬১২টি সমিতি গঠন করা হয়। যার সদস্য ৩৬ হাজার ৪৯৯ জন। তাদের সঞ্চয় জমা ২০ কোটি ৫ লাখ ৬৮ হাজার ১৯৬ টাকা। গেল বছরের শেষে ডিসেম্বর পর্যন্ত খুলনায় বিতরণকৃত ঋণের পরিমাণ ৬৮ কোটি ৩৮ লাখ ৬০ হাজার একশ’ টাকা। ঋণ আদায় হয়েছে ৩৪ কোটি ১৫ লাখ ৪৫ হাজার ৬৬৮ টাকার। বকেয়া ঋণ রয়েছে ৩৪ কোটি ২৩ লাখ ১৪ হাজার ৪৩২ টাকা। আর খেলাপী ঋণ রয়েছে ১১ কোটি ১৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪৭৩ টাকা। গেল ১৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত খুলনা জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির মাসিক সভায় খেলাপী ঋণ আদায়ে সার্টিফিকেট মামলাসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানদের সহযোগিতার আহŸান জানান জেলা সমন্বয়কারী।
কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ বদিউজ্জামান বলেন, এক বছর আগে যখন আমি এসেছি; তখন কয়রায় একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের ঋণ আদায় ছিল ৭০ শতাংশ। তখন কিন্তু আদায় খুলনায় সর্বোচ্চ আদায় ছিল। বর্তমানে আদায় হচ্ছে ৮০ শতাংশ। সমন্বয়কারীকে নির্দেশনা দিয়েছিÑ বাকীদের নোটিশ করতে। দ্রæততম সময়ের মধ্যে খেলাপী ঋণ আদায় না হলে লাল নোটিশ অর্থাৎ সার্টিফিকেট মামলা করার নির্দেশ দিয়েছি।
রূপসা উপজেলার একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের সমন্বয়ক বাসুদেব কুমার জানান, উপজেলাতে ৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়। ঋণ দেয়া ও আদায় একটা চলমান প্রক্রিয়া। বর্তমানে দুই শতাধিক ঋণ খেলাপী রয়েছে। তাদেরকে দ্বিতীয় দফায় নোটিশ করে ঋণ পরিশোধের তাগিদ দিয়েছি। এখনো কঠোর হয়নি’ তবে আস্তে আস্তে হবে।
খুলনা জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান বলেন, দরিদ্র বিমোচনে একটি বাড়ী একটি খামার সরকারের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এ প্রকল্প বাস্তবায়নে খেলাপী ঋণ আদায়ে আরও তৎপর হতে হবে। এর সুফল প্রত্যেক গ্রামবাসীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহŸান জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের খুলনা জেলা সমন্বয়ক মোঃ তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, ফেব্রæয়ারির মাসিক সভায় উপজেলা পর্যায় থেকে যে সুপারিশ আসবে; তার আলোকে প্রকল্প পরিচালক বরাবর প্রতিবেদন প্রেরণ করা হবে। প্রকল্প পরিচালকের অনুমতি সাপেক্ষে একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের ঋণ খেলাপীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, সর্বশেষ গেল বছর ২৫ অক্টোবর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের মেয়াদ ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পটি দেশের ৬৪ জেলার ৪৯০ উপজেলার ৪০ হাজার ৯৫০টি গ্রামে বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় গ্রামের পরিবারগুলোকে অর্থনৈতিক ইউনিট হিসেবে তৈরি করা হয়।
২০২০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্যেই এ প্রকল্পটি নেয়া হয়। এ প্রকল্পের আওতায় গরীব মানুষকে বিনিয়োগের জন্য অর্থ সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আবার তাদের সঞ্চয় রাখার ব্যবস্থাও করা হয়। ২০০৯ থেকে শুরু করে ২০১৪ সালে শেষের কথা থাকলেও পরে ব্যয় এক হাজার ৪৯২ কোটি টাকা বাড়ানো হয়। এরপর দ্বিতীয় সংশোধনীতে ব্যয় ৩ হাজার ১৬২ কোটি টাকায় উন্নীত করে মেয়াদ ২০১৬ সালে জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছিল। স¤প্রতি প্রকল্পের মেয়াদ বেড়েছে ২০২০ সালের জুন পর্যন্ত।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।